করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ মোকাবিলায় গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী নেওয়ার সরকারি নির্দেশনার পরই চট্টগ্রামের বাস মালিকেরা বাসভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে।
বুধবার (১২ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ।
এদিকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকাসহ সারাদেশে ১১ নির্দেশনা সামনে রেখে বিধিনিষেধ কার্যকর করবে সরকার।
আজ দুপুর আড়াইটায় ঢাকায় বাস মালিকদের সঙ্গে পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। ওই বৈঠক থেকে সিদ্ধান্ত আসবে- গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে ভাড়া বাড়ানো হবে কি না।
চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি খোরশেদ আলম ও মহাসচিব মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, ১৩ জানুয়ারি থেকে সরকার সারাদেশে ১১টি জরুরি বিধিনিষেধ ঘোষণা করেছে। সরকারের সব বিধিনিষেধের প্রতি বাস মালিকেরা আন্তরিক। কিছুদিন আগে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে ভাড়া নিয়ে সৃষ্ট অচলাবস্থার অবসান হয় এবং স্বাভাবিক হয় যান চলাচল।
চট্টগ্রামের বাস মালিকেরা বলছেন, এর আগে লকডাউনের আওতায় প্রতি সিট একজন করে যাত্রীবহন করা হয় এবং ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়ানো হয়। মালিকরা ক্ষতি হলেও দেশের স্বার্থে সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে নেন। এবারও স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন সচল রাখতে হলে, পূর্বের সিদ্ধান্ত কার্যকর করে ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত আসতে হবে। পাশাপাশি করোনা থেকে যাত্রীদের সুরক্ষায় প্রত্যেক অটোরিকশা, টেম্পু , প্রাইভেটকার এবং মাইক্রোবাসসহ ভাড়ায় চালিত সব গাড়িকে স্বাস্থ্যবিধির আওতায় আনতে হবে।
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর বন্ধ ঘোষণা করা হয় সব ধরনের গণপরিবহন। টানা ৬৮ দিন বন্ধ থাকার পর ৬০ শতাংশ বাড়া বাড়িয়ে ওই বছরের ১ জুন থেকে অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের শর্তে গণপরিবহন চালু হয়। গত বছর দু’বার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে গাড়ি চলাচলের সিদ্ধান্তের সঙ্গে ভাড়া বাড়ানোর ঘোষণাও দিয়েছিল সরকার।
গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী নেওয়ার সরকারি নির্দেশনার অজুহাতে কোনোভাবেই যেন পরিবহন মালিকেরা নতুন করে ভাড়া না বাড়ায়, বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি এ দাবি জানিয়েছে। একইসঙ্গে ভাড়া বাড়ানোর যে কোনো ধরনের পাঁয়তারা বন্ধের দাবিও জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে সংগঠনটি বলেছে, করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধির মধ্যে স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সব প্রতিষ্ঠানই খোলা। এখন গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী বহনের সিদ্ধান্ত কাগুজে সিদ্ধান্তে পরিণত হবে। এ অজুহাতে আবারও ভাড়া বাড়ানো হলে সাধারণ মানুষের জীবন বিষিয়ে উঠবে। তাই ‘যত সিট তত যাত্রী’ পদ্ধতিতে গণপরিবহনে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ মোকাবিলায় ১১ দফা নির্দেশনা দিয়ে গত সোমবার প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপনে ১৩ জানুয়ারি থেকে ঢাকাসহ সারাদেশে বিধিনিষেধ কার্যকরের কথা বলা হয়।
ঢাকার গণপরিবহন মালিকেরা বলছেন, অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চললে তেলের পয়সাও উঠবে না। ফলে এবারও ভাড়া ৬০ শতাংশ ভাড়ানোর দাবি তাদের।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]