চাল-চিনি ও তেলে এখনো অস্বস্তি, কমেছে সবজির দাম
শীতের সবজির ভরা মৌসুম শুরু হয়েছে। বাজারেও শীতের সব ধরনের সবজির সরবরাহ বেড়েছে। সরবরাহ বাড়ায় কমেছে দাম। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় চাল, আটা, তেল, চিনি ও ডাল বিক্রি হচ্ছে আগের মতোই চড়া দামে।
সরেজমিনে শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর একাধিক বাজার ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক সপ্তাহ আগের তুলনায় কিছু সবজির দাম কেজিপ্রতি ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। সবজির দাম কমায় স্বস্তি মিলেছে ক্রেতাদের।
তবে ক্রেতারা বলছেন, খুচরা বাজারে সবজির সরবরাহ বাড়ায় দাম কিছুটা কম। তবে অনেক নিত্যপণ্যের দাম এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। বিশেষ করে আমনের নতুন ধান বাজারে এলেও চালের দাম না কমায় অস্বস্তির কথা বলছেন ভোক্তারা।
রাজধানীর তালতলা মার্কেটের কাঁচাবাজারে কথা হয় শাহিন হাওলাদার নামের এক ক্রেতার সঙ্গে। তিনি পেশায় বাসচালক। শাহীন হাওলাদার বলেন, সবজির দাম কমেছে, সেটা ভালো। কিন্তু মোটা চালের দামও এখনো আকাশছোঁয়া। তেল, চিনি, ডালের দামও বাড়ার পর আর কমছে না। আমাদের মতো নিম্নবিত্তের মানুষেরা সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি।
মজিদ নামের অন্য এক ক্রেতা বলেন, শীতকালই শাক-সবজির জন্য উপযুক্ত সময়। এরই মধ্যে শীতকালীন সব ধরনের সবজি বাজারে আসতেও শুরু করেছে। সে কারণে দামও কমেছে। কিন্তু এখন চালের দাম নিয়েই সবচেয়ে বেশি আতঙ্ক। আমনের ভরা মৌসুমেও চালের বাজারে আগুন। মোটা চালের দামও নাগালের বাইরে। মানুষ কী খেয়ে বাঁচবে!
হাজিপাড়া বউবাজার ঘুরে দেখা গেছে, শিম ও নতুন আলু কেজিপ্রতি ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গেল কয়েক সপ্তাহ যা ছিল ৬০ থেকে ৮০ টাকার ঘরে। কাঁচা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি। এক সপ্তাহ আগেও যা ছিল ৬০ টাকার ওপরে।
এছাড়া শীতকালীন শালগম বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি। গত সপ্তাহে এ সবজির দাম ছিল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। বাঁধাকপি ও ফুলকপির দামও কমেছে। বড় সাইজের একেকটি বাঁধাকপি বা ফুলকপি পাওয়া যাচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে।
এই বাজারের বিক্রেতা সবুজ মিয়া বলেন, বাজারে এখন প্রচুর শীতের সবজি রয়েছে। প্রায় সব ধরনের সবজির সরবরাহ বেশ ভালো। ফলে শীতকালীন সবজির দাম এখন কমতির দিকে। শীতের সবজির দাম কমার কারণে সারা বছর পাওয়া যায় এমন সবজিগুলোর দামও ৫০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে নেমেছে। যা গত সপ্তাহেও ৬০ থেকে ৮০ টাকা ছিল। সরবরাহ বাড়লে সবজির দাম আরও কমতে পারে বলে জানান তিনি।
অন্যদিকে জানা যায়, গত দুই সপ্তাহে চালের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ২ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত। বেড়েছে আটার দামও। খোলা আটার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা এবং প্যাকেটজাত আটার কেজি ৭০ থেকে ৭৫ টাকা। চিনির বাজারে অস্থিরতা এখনো কাটেনি। বেশিরভাগ দোকানে প্যাকেটজাত চিনি মিলছে না। কিছু দোকানে খোলা চিনি পাওয়া গেলেও বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে। সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকা লিটার আর মসুর ডাল মানভেদে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি।
তবে ক্রেতাদের জন্য স্বস্তি ফিরেছে ডিমের দামে। প্রতি ডজন ডিম এখন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকায়। যা কয়েক সপ্তাহ আগেও ছিল ১৫০ টাকা পর্যন্ত।
মাছ-মাংসের বাজার ঘুরে দেখা যায়, ব্রয়লার ও সোনালী মুরগির দাম কিছুটা কমেছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা দরে। সোনালী মুরগির কেজি ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে গরুর মাংসের দাম। বাজারভেদে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। একইভাবে সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় সব ধরনের মাছের দামও অপরিবর্তিত থাকতে দেখা গেছে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)