জনসংখ্যা দ্রুত কমতে থাকায় জাপানের সামাজিক নিরাপত্তা বলয় ও অর্থনীতি উভয়ই মারাত্মক হুমকিতে রয়েছে। এই পরিস্থিতি আটকানো না গেলে একসময় পুরোপুরি ‘নিশ্চিহ্ন’ হয়ে যাবে দেশটি। জাপানি প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার এক উপদেষ্টা সম্প্রতি সম্মেলনে এমন আশঙ্কার কথা বলেছেন।
গত (২৮ ফেব্রুয়ারি) জাপান সরকার জানিয়েছে, গত বছর সন্তান জন্মহারে নতুন সর্বনিম্ন রেকর্ড গড়েছে দেশটি। এ বিষয়ে জাপানি প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা মাসাকো মোরি বলেছেন, আমরা যদি এভাবে চলতে থাকি, তাহলে দেশ একসময় নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।
টোকিওতে এক সাক্ষাত্কারে তিনি বলেন, নিশ্চিহ্ন হওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে মানুষজনকে প্রচুর ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। এটি শিশুদের যন্ত্রণা দেবে।
গত বছর জাপানে যত শিশু জন্মগ্রহণ করেছে, তার প্রায় দ্বিগুণ লোক মারা গেছে। ২০২২ সালে দেশটিতে শিশু জন্ম নিয়েছে আট লাখের কম, কিন্তু মারা গেছে ১৫ লাখ ৮০ হাজারেরও বেশি মানুষ। এ পরিস্থিতির পরিবর্তনে শিশু ও পরিবারগুলোর জন্য বরাদ্দ দ্বিগুণ করার ঘোষণা দিয়েছে জাপান সরকার।
দেশটিতে জনসংখ্যা সর্বোচ্চ ১২ কোটি ৮০ লাখে পৌঁছেছিল ২০০৮ সালে। কিন্তু এখন তা ১২ কোটি ৪৬ লাখে নেমে এসেছে এবং জনসংখ্যা কমার হার দ্রুত বাড়ছে। এছাড়া, জাপানে গত বছর ৬৫ বছর বা তদোর্ধ্ব বয়সী লোকের সংখ্যা ২৯ শতাংশ ছাড়িয়েছে। এটিও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।
ফুমিও কিশিদার জন্মহার সমস্যা ও এলজিবিটিকিউ বিষয়ক উপদেষ্টা মোরির ভাষ্যমতে, জন্মহার ধীরে ধীরে কমছে না, এটি সোজা নিচের দিকে যাচ্ছে। এর মানে, এখন জন্ম নেওয়া শিশুরা এমন একটি সমাজে নিক্ষিপ্ত হবে, যা বিকৃত ও সংকুচিত হয়ে পড়েছে এবং কাজ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে।
তিনি বলেন, এই বিষয়ে কিছু করা না হলে সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে, শিল্প ও অর্থনৈতিক শক্তি কমে যাবে এবং দেশকে রক্ষার জন্য আত্মরক্ষা বাহিনীতে পর্যাপ্ত লোকবল থাকবে না।
মোরি জানান, সন্তান জন্মধারণের উপযুক্ত বয়সী নারীর সংখ্যা কমে যাওয়ায় জন্মহার পতনের ধারা উল্টানো এখন অত্যন্ত কঠিন হবে। সরকারকে জন্মহার পতনের হার ও ক্ষয়ক্ষতি কমাতে অবশ্যই যথাসাধ্য চেষ্টা করতে হবে।
জাপানি প্রধধানমন্ত্রীর এ উপদেষ্টা বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন এবং জন্মহার নীতি একই জিনিস। এগুলোকে আলাদাভাবে মোকাবিলা করতে গেলে সেগুলো কার্যকর হবে না।
জনসংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা এখনো তার নতুন ব্যয় প্যাকেজ ঘোষণা করেননি। তবে বলেছেন, এটি আগের নীতি থেকে ভিন্ন হবে। এখন পর্যন্ত তিনি শিশুভাতা বৃদ্ধি, শিশুর যত্ন ব্যবস্থার উন্নতি এবং কাজের ধরন পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করেছেন।
সুত্র:-খবর ব্লুমবার্গের।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]