জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ-২০২৩ উপলক্ষে সাতক্ষীরা জেলার শ্রেষ্ঠ মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ জাহিদুর রহমান।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলার এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষা অফিসারকে ফুল ও ক্রেস্ট দিয়ে সংবর্ধনা জানিয়েছেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি সাতক্ষীরা সদর উপজলা শাখার নেতৃবৃন্দ। সাতক্ষীরা সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে উপস্থিত হয়ে নেতৃবৃন্দ তাদের প্রিয় শিক্ষা অফিসারকে এ সংবর্ধনা জানান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন একাডেমিক সুপারভাইজার সানজিদা খাতুন, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি সাতক্ষীরা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো: আব্দুল মালেক গাজী, সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সদস্য সচিব প্রধান শিক্ষক মো: আব্দুল জব্বার, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি সাতক্ষীরা সদর উপজলা শাখার সভাপতি মো: মোমিনুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো: আব্দুল্যা, সহকারী শিক্ষক এসএম শহীদুল ইসলাম, তৈয়েবুর রহমান তুহিন, জহুরুল ইসলাম, মো: সফিকুর রহমান প্রমুখ।
সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ জাহিদুর রহমান ১৯৬৮ সালের ২২ অক্টোবর যশোর সদর উপজেলার ছাতিয়ানতলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শিক্ষা অফিসার মো: জাহিদুর রহমানের পিতার নাম মোঃ সফিয়ার রহমান এবং মাতার নাম রাবেয়া বেগম।
১৯৮৩ সালে স্থানীয় চুড়ামনকাটি হাইস্কুল থেকে কুতিত্বের সাথে এসএসসি, ১৯৮৫ সালে যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে এইচএসসি, ১৯৮৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স এবং ১৯৮৯ সালে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। এছাড়া তিনি ১৯৯২ সালে এলএলবি, ১৯৯৩ সালে বি.এড এবং ১৯৯৪ সালে এম.এড ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৯৯ সালে ২০ জুলাই তিনি কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন।
এরপর তিনি বিভিন্ন সময়ে সাাতক্ষীরা সদর, তালা, কালিগঞ্জ এবং খুলনার পাইকগাছা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হিসেবে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেন। সাতক্ষীরা সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হিসেবে তিনি সর্বশেষ ২০১৬ সালের ১৭এপ্রিল যোগদান করে এ উপজেলার শিক্ষাক্ষেত্রে অবদান রেখে চলেছেন।
তিনি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ডিজিটালাইজড করে শিক্ষার গুনগত মানোন্নয়নে কাজ করছেন। তিনি বলেন, প্রত্যেকটি স্কুলে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। স্কুলে শিক্ষার্থীদের শতভাগ হাজিরা নিশ্চিত করতে প্রত্যেকটি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে নির্দেশনা দেওেয়া আছে। বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি এবং নিজেই মনিটরিং করছি। শিক্ষার্থীদের আনন্দময় ও চিত্তাকর্ষক পাঠদান নিশ্চিত করতে ব্যবহারিক ক্লাস ও ক্লাসে শিক্ষা উপকরণ ব্যবহারে জোর দেয়া হয়েছে। ঝরেপড়া রোধে নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। বর্তমান শিক্ষানীতি অনুসারে নির্দিষ্ট ক্লাসে নির্ধারিত পাঠের বাইরে অন্য বিষয়ে কোনো শিক্ষক আলোচনা করতে পারবেন না।
তিনি আরও বলেন, করোনাকালীন সংকট মোকাবিলায় বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে তিনি উপজেলার প্রত্যেকটি স্কুলে গিয়ে অভিভাবক ও শিক্ষকদের সাথে মতবিনিময় করছেন। শিক্ষকদের সময়মত প্রতিষ্ঠানে হাজিরা ও শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে তিনি নিয়মিত মনিটরিং করছেন বলে জানান। ২০২৩ সাল থেকে নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়ন হচ্ছে। প্রত্যেক শিক্ষার্থী যেন শিক্ষাজীবন শেষ করে কর্মজীবনের ঠিকানা খুঁজে পায় সেই লক্ষ্যে আমাদের কাজ করছি। শিক্ষার্থীদের দক্ষ, দেশপ্রেমিক, সুনাগরিক ও মানবসম্পদে পরিণত করাই সরকারের লক্ষ্য। এ লক্ষ্য পূরণে সবার আগে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ডিজিটালাইজড করে শিক্ষা বাতায়নে নতুন পালক যুক্ত করতে চাই।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার হিসেবে যোগদানের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে নিবিড়ভাবে তত্বাবধানের পাশাপাশি শিক্ষক-কর্মচারীদের পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নে অবিরাম কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নের সৈনিক হিসেবে তিনি এবং তার সহকর্মীগণ কাজ করছেন। শিল্প ও সাংস্কৃতিকবান্ধব এই শিক্ষা অফিসার শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে প্রতিনিয়ত যুগিয়ে যাচ্ছেন সাহস ও প্রেরণা। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আধুনিক বিজ্ঞান মনস্ক এবং অসা¤প্রদায়িক জাতি গঠনে তিনি শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের কাজে প্রিয়জন হয়ে উঠেছেন।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]