সদর উপজেলার ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়নের অতিদরিদ্র কর্মসূচির আওতায় ৪০ দিনের প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি ও প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রায়ণ প্রকল্প-২ (জমি আছে ঘর নাই) এ ঘর দেয়ার নামে ঘুষ গ্রহনের অভিযোগ উঠেছে ইউপি সদস্য সেলিম হোসেনের বিরুদ্ধে।
যদিও ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে গভীর সখ্যতা থাকায় তার (ইউপি সদস্য সেলিম হােসেন) বিরুদ্ধে একাধিকবার উপজেলা প্রকল্পবাস্তবায়কারী কর্মকর্তার (পিআইও) কাছে অভিযোগ করলেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
বুধবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে সরেজমিনে ইউনিয়নের পাথরঘাটা গ্রামে (২নং ওয়ার্ড) ঘুরে জানা গেছে, ইউপি সদস্য সেলিম হােসেন ৪০দিনের কর্মসৃজন প্রকল্প নিজের পরিচিত লোকজনের নাম তালিকাভুক্ত করে কাজ করাচ্ছেন। যাদের মধ্যে অধিকাংশই অর্ধেক টাকা দেয়ার শর্তে ইউপি সদস্যেও সাথে চুক্তিবদ্ধ। এসব শ্রমিকরা নিয়মিত কাজ করছেন না।
অপরদিকে কর্মসৃজন প্রকল্পে কাজ দেয়ার নামে কয়েকজনের নিকট থেকে জনপ্রতি ২ হাজার টাকা ঘুষ নিলেও তাদের নাম তালিকায় দেয়া হয়নি। এরমধ্যে পাথরঘাটা গ্রামের মুনসুর আলী (৩৫) জাানান, ৪০দিনের কাজ দেয়ার জন্য ইউপি সদস্য সেলিম হোসেন তার নিকট থেকে খরচ বাবদ ২ হাজার টাকা নিলেও তালিকায় নাম দেয়নি। এখন টাকা ফেরত চাইলে পুলিশ দিয়ে মামলায় ফাসিয়ে দেয়ার হুমকি দিচ্ছে বলে তিনি জানান। এছাড়া সেলিম হোসেনের বিরুদ্ধে একাধিক ব্যাক্তির কাছ থেকে কাজ দেয়ার নামে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত এবং প্রকল্পে লোক কম দিয়ে কাজ করাচ্ছেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কর্মরত একাধিক শ্রমিক জানান, ইউপি সদস্য চুক্তিতে তার পরিচিত লোকদের তালিকায় নাম দেয়ায় কাজের ২০দিন পেরিয়ে গেলেও অনেকে কাজে আসে না। আমরা অল্প কয়েকজন শ্রমিক নিজেদের কাজসহ তাদের কাজও করে দিতে হচ্ছে। কাজ করতে না চাইলে ইউপি সদস্য টাকা না দেয়ার হুমকি দেয়। আমরা গরীব মানুষ নিরবে সব মেনে নেয়া ছাড়া কোন কিছুই করার নেই।
প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রায়ণ প্রকল্প-২ (জমি আছে, ঘর নাই) এ ঘর দেয়ার নামে পাথরঘাটা গ্রামের সুরত আলীর ছেলে সাজ্জাত হোসেন কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণের পরও তার ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়নি। তিনি টাকা ফেরত চাইলে ইউপি সদস্য সেলিম হোসেন আগামীতে ভালো ঘর দেয়ার কথা বলে আরো ৫হাজার টাকা খরচ বাবদ তার কাছে দিতে বলেছে। ভুক্তভোগী সাজ্জাত হোসেন বলেন, আমাকে ঘর দেয়ার কথা বলে তিন হাজার টাকা নিলেও ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়নি।
এখন টাকা চাইলে সেলিম হোসেন নতুন ঘর দেয়ার কথা বলে আরো ৫হাজার টাকা দাবি করছে। তিনি আরো বলেন, ঘর বরাদ্দ দেয়ার নামে ইউপি সদস্য অনেক অসহায় মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছে। বিষয়টি নিয়ে তারা ইউপি চেয়ারম্যান আমলল উদ্দীনের কাছে অভিযোগ করলে তিনি ব্যবস্থা নিবেন বলে জানালেও আজ পর্যন্ত কোন কিছ্ইু করেননি। অভিযোগের বিষয়ে ঝাউডাঙ্গা ২নং ওয়ার্ড সদস্য সেলিম হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে, তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, রিপোর্ট করবেন না, আপনার সাথে দেখা করে সব বলবো। এবিষয়ে ঝাউডাঙ্গা ইউপি সদস্য আজমল উদ্দীনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
সূত্র পত্রদূত
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]