বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে ফ্রান্সসহ উন্নয়ন অংশীদারদের সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের উন্নয়নকে টেকসই করতে ফ্রান্সসহ উন্নয়ন সহযোগীদের সহযোগিতা প্রয়োজন। কারণ আমাদের দীর্ঘপথ পাড়ি দিতে হবে।
মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে গণভবনে ঢাকায় নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মিসেস মারি মাসদুপুই সৌজন্য সাক্ষাতে এলে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য লেখক এম নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক সময় বাংলাদেশ দারিদ্র্য, বন্যা ও খরার দেশ হিসেবে পরিচিত ছিল। আর এখন ব্যাপক উন্নয়নের মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। আজকের বাংলাদেশ সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি দেশ যেখানে তৃণমূলে ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, দেশের প্রতিটি গ্রামকে বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত করে যোগাযোগ নেটওয়ার্কে যুক্ত করা হয়েছে। গ্রামীণ এলাকায় অনেক পরিবর্তন হয়েছে এবং দারিদ্র্য উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।
সরকার প্রধান বলেন, সরকার গ্রামাঞ্চলে দরিদ্র মানুষের জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন করতে হবে। তারা এখানে মাদক, অস্ত্র ও মানবপাচারের মতো বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত।
রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের জন্য ফ্রান্সসহ পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি মিয়ানমারের ওপর আরও চাপ বাড়ানোর আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশে আটকে পড়া পাকিস্তানিদের সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের চতুর্থ প্রজন্ম এখানে বসবাস করছে। পাকিস্তান তাদের আর ফিরিয়ে নেবে বলে মনে হয় না। এখানে তাদের স্থায়ী পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে আমরা তাদের জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণের পরিকল্পনা করছি।
তিনি ফরাসি গ্যাস কোম্পানিকে বাংলাদেশের গ্যাস খাতে এবং গ্যাস অনুসন্ধানে বিনিয়োগের জন্য অনুরোধ জানান।
এসময় তারা এয়ারবাস ক্রয় ও বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণসহ কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক বিষয়েও আলোচনা করেন।
সরকার প্রধান হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হওয়ার জন্য ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর একটি অভিনন্দন বার্তা হস্তান্তর করেন রাষ্ট্রদূত।
২০২১ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ফ্রান্স সফর এবং ২০২৩ সালে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর বাংলাদেশ সফরের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফ্রান্স ও বাংলাদেশের মধ্যে চমৎকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক রয়েছে। এই সফরগুলো দুই দেশের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করেছে।
জলবায়ু সমস্যা সম্পর্কে ফরাসি রাষ্ট্রদূত বলেন, তার দেশ বাংলাদেশকে ক্ষয়-ক্ষতির তহবিল পেতে সহায়তা করে এবং এই তহবিল ব্যবহারে তারা বাংলাদেশকে অগ্রগামী হিসেবে দেখতে চায়।
তিনি উল্লেখ করেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশ একটি উদাহরণ। ফ্রান্স বাংলাদেশকে সবুজ শক্তি উত্তরণে সহায়তা করতে চায়।
রাষ্ট্রদূত বলেন, তার দেশ বাংলাদেশকে নীল অর্থনীতি ও সাইবার নিরাপত্তায় সহযোগিতা করতে চায়।
এসময় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, অ্যাম্বাসেডর অ্যাট-লার্জ এম জিয়াউদ্দিন ও মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]