সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পদত্যাগ করছেন।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুপুর পর্যন্ত শতাধিক নেতাকর্মী ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করেছেন।
পদত্যাগকারী নেতাকর্মীদের দাবি, যেই ছাত্র সংগঠন সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালায়, নারী শিক্ষার্থীদের ওপর নৃশংস হামলা করে, তারা সুস্থ মস্তিষ্কের কেউ নয়। তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা অনুচিত।
আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা, প্রতিবাদে কুবি ছাত্রলীগের গণহারে পদত্যাগ আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা, প্রতিবাদে কুবি ছাত্রলীগের গণহারে পদত্যাগ।
এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়েছেন ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক নেতাকর্মীরা। বিজয় একাত্তর হলের সহ-সভাপতি পদ থেকে পদত্যাগ করা শিপন মাহমুদ ফেসবুকে লিখেছেন, আমি চলমান ছাত্র-আন্দোলনের পক্ষে অবস্থান করছি। ন্যায়ের পক্ষে থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শোকজ খাওয়া এবং মুচলেকার মুখে পড়া ছাত্র আমি। আমি আজীবন নজরুল। প্রতিবাদ আমার রক্তে। আমি আজন্ম প্রতিবাদী পুরুষ। আমি মো. শিপন মিয়া, সহ-সভাপতি, বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। চলমান যৌক্তিক ছাত্রআন্দোলনের প্রতি পূর্ণ সমর্থন প্রদান করে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, বিজয় একাত্তর হল-এর সহ-সভাপতির পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করলাম। অন্যায় আর শিপন এক লাইনে থাকে না।
কুয়েত মৈত্রী হল থেকে পদত্যাগ করা জুয়েনা আলম মুন লিখেছেন, আমি জুয়েনা আলম মুন, অর্থ সম্পাদক বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ছাত্রলীগকে ন্যায়ের কাণ্ডারি ভেবে ছাত্রলীগ করতাম। কিন্তু এখন এই সংগঠনের সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততা ছিল এটা মনে করলেও আমার রক্তাক্ত বন্ধু-বান্ধবী, সিনিয়র, জুনিয়রদের চেহারা মনে পড়বে। তাই স্বেচ্ছায়, সজ্ঞানে পদত্যাগ করছি। আমার সঙ্গে কারো ব্যক্তিগত কোনো শত্রুতা নেই। পদের অব্যাহতির ব্যাপারটা কেউ পারসোনালি নেবেন না। যারা ভালোবাসা পাবার যোগ্য তারা সব সময়ই ভালোবাসা পাবেন।
আমি লজ্জিত এমন একটা সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলাম, লিখে ছাত্রলীগ নেত্রীর পদত্যাগআমি লজ্জিত এমন একটা সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলাম, লিখে ছাত্রলীগ নেত্রীর পদত্যাগ।
মো. নুরুল ইসলাম হৃদয় লিখেছেন, আমি সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ শাখা ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বজ্ঞানে অব্যাহতি নিচ্ছি। যেই সংগঠনের নামে আমার বোনের মাথা ফাটিয়ে রক্তাক্ত করে; বোনের গায়ে হাত দেয়, আমার ভাইকে রডের বাড়ি মেরে মেরে আধমরা করে ফেলে দেয় রাস্তায়, তারাই নাকি আমার ভাই-বন্ধু! আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করার অঙ্গীকার করেছিলাম। এটা কখনো বঙ্গবন্ধুর আদর্শ হতে পারে না। আমি লজ্জিত।
ওয়াসিক বলেন, ছাত্রলীগের সকল কর্মকাণ্ড থেকে নিজেকে অব্যহতি ঘোষণা করলাম। তারা আমাদের ব্যবহার করে আমাদের বাবা মায়ের পেটে লাথি মারছে এখন। গত তিন দিন আন্দোলনে থাকায় অনেক হুমকি পেয়েছি। সুতরাং আজকে বিদায় দিলাম কলুষিত এই সংগঠন কে। রাজপথে যৌক্তিক বিষয়ে জীবন দিতে প্রস্তুত আছি।
হাসিবুল হাসান হাসিব বলেন, ছাত্রলীগের সাথে আমার পূর্বের সকল সম্পর্ক ত্যাগ করলাম, আমার ছোটভাই বন্ধুদের অনেককে নির্মমভাবে পেটানো হইছে। ঘৃণা হচ্ছে ছাত্রলীগের একজন কর্মী হিসাবে এতদিন কাজ করায়। বিদায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
শাহ সাকিব সাদমান প্রান্ত বলেন, আজকের পর থেকে শুরু করে ভবিষ্যতে বাকী জীবনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সঙ্গে আমার আর কোনো সম্পর্ক নাই। পুলিশ ভেরিফিকেশন, তদবির, কিংবা সরকারের পক্ষ থেকে অন্য যেকোনো ধরণের অসহযোগিতা ও সকল ধরণের কনসিকোয়েন্স মাথায় রেখে, কারো প্ররোচনায় না, বরং বিবেকের তাড়নায়, ও সজ্ঞানে আমি বিজয় একাত্তর হলের ছাত্রলীগের কার্যনির্বাহী কমিটি থেকে পদত্যাগ করলাম।
জবি ছাত্রলীগের ৬ নেতার পদত্যাগ
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]