করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে বিশ্বের বেশির ভাগ বিমানবন্দরে নানা ধরনের বিধিনিষেধ, ভাড়া বাড়ানো ও যাত্রী সংকটসহ নানা কারণে গত তিন বছরে বিশ্বের ৬৪টি বিমান পরিবহন সংস্থা বন্ধ হয়ে গেছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদন বলা হয়েছে, করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে বিশ্বের বেশির ভাগ বিমানবন্দরে নানা ধরনের বিধিনিষেধ আরোপের ফলে বিমানবন্দরগুলো যাত্রীশূন্য হতে শুরু করে। সেই সঙ্গে উল্লেখযোগ্য হারে কমতে থাকে যাত্রীবাহী বিমান সংস্থার রাজস্বও। ফলে একে একে বন্ধ হয়ে গেছে বিশ্বের ৬৪টি এয়ারলাইনস সংস্থা।
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস অন্য অনেক খাতের মতোই বিমান খাতকেও ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছে। আন্তর্জাতিক উড়োজাহাজ ভ্রমণ সংস্থার টিকিটিং ডেটাবেজের তথ্যানুযায়ী, সারা বিশ্বে ২০২৩ সালের প্রথম দিকের ফ্লাইট বুকিংয়ের সংখ্যা ২০১৯ সালের তুলনায় ২২ শতাংশ কম। এর মধ্যে রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে ৫ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রে ৯ শতাংশ, ইউরোপে ১৫ শতাংশ ও আফ্রিকায় ১৮ শতাংশ টিকিট বিক্রি কমতে দেখা গেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, উড়োজাহাজ সংস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘটনা অতীতেও ঘটেছে। তবে অর্থনৈতিক মন্দা, যুদ্ধ বা জঙ্গি হামলার মতো বিষয়গুলোর তুলনায় করোনা অতিমারি বিমান খাতকে আরও বেশি নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করেছে।
উড্ডয়ন খাত সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইট অলপ্লেন ডট টিভির তথ্যানুযায়ী, ২০২০ সালের পর থেকে অন্তত ৬৪টি উড়োজাহাজ সংস্থা তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম গুটিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়েছে। ২০২০ সালে ৩১টি, ২০২১ সালে ১৯টি ও ২০২২ সালে ১২টি উড়োজাহাজ সংস্থা তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। যদিও কিছু সংস্থা নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণার পর পুনরুজ্জীবিত হওয়ার চেষ্টা করছে, তবে বেশির ভাগই চিরতরে বন্ধের পথে ধাবিত হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের ক্র্যানফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উড়োজাহাজ পরিবহন ব্যবস্থাপনা বিষয়ের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক পেরে সুআউ-সানচেজ বলেন, অচিরেই ছোট ও আঞ্চলিক সংস্থাগুলো বড় উড়োজাহাজ সংস্থার পতাকার নিচে একীভূত হবে। ইউরোপে এরই মধ্যে এয়ার লিংগাস, ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ, আইবেরিয়া, লেভেল ও ভুয়েলিংয়ের মালিকানা কিনে নিয়েছে উড়োজাহাজ সংস্থা আইএইজি।
এদিকে ইতালির সাবেক রাষ্ট্রায়ত্ত উড়োজাহাজ সংস্থা আলিতালিয়া এবং নামিবিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত উড়োজাহাজ সংস্থা এয়ার নামিবিয়াও তাদের কার্যক্রম বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। পৃথিবী বিখ্যাত বিমান সংস্থাগুলো বন্ধ হওয়ার বিষয়টি আরও হতাশার জন্ম দিয়েছে।
উড্ডয়ন সংক্রান্ত ওয়েবসাইট ফ্লাইটগ্লোবালের প্রধান মুরডো মরিসন জানান, ২০২৩ সালে উড়োজাহাজের ভাড়া গড়ে ৩৬ শতাংশ বেড়েছে। এ কারণে ২০১৯ সালের তুলনায় দূরপাল্লার ফ্লাইটের ভাড়া অনেক বেশি।
তবে এ ধরনের পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে এবং ফ্লাইটের ভাড়া কমে আসবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন। ২০২৩ সালে আর তেমন কোনো বড় উড়োজাহাজ সংস্থা দেউলিয়া হবে না বলেও প্রত্যাশা তার।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]