বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান বলেছেন, আগামী দিনে বিএনপিকে জনগণের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আনতে হবে। পরবর্তীতে জাতীয় সরকার হবে। সেই জাতীয় সরকার সকল দলের মতামত নিয়ে দেশ পরিচালনা করবে। এজন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে বিভাগের ১০ জেলার ইউনিট প্রধানদের মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। খুলনা বিভাগের সব জেলা ও মহানগরে সম্মেলন সফল করার লক্ষ্যে এই সভার আয়োজন করা হয়।
আমান উল্লাহ আমান বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ করার চেষ্টা করছে পতিত স্বৈরাচার এবং তার দোসররা। সেই ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারের মূল উৎপাটন করতে হবে। সেই ফ্যাসিসদের কোনো প্রেতাত্মাকে আপনারা নিতে পারবেন না, কোনো জায়গায় বসাতে পারবেন না। যারা ত্যাগী, নির্যাতন ভোগ করেছে, জেল খেটেছে, মামলা খেয়েছে, ঘরে ঘুমাতে পারে নাই, আহত হয়েছে তাদেরকে জায়গা করে দেবেন। কোনো পতিত স্বৈরাচারের দোসররা থাকতে পারবে না। যাদের পদ নেই ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল থেকে আসছে তাদেরকে পদ দিতে হবে। ত্যাগীদেরকে মূল্যায়ন করতে হবে।
খুলনা বিভাগের সাংগঠনিক পরিস্থিতি ভালো নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোনো কোনো জেলা ভালো করছে, কোনো কোনো জেলায় এমন অবস্থা রয়েছে, যে পর্যায়ে থেকে আমাদের উঠে দাঁড়াতে হবে। আমাদেরকে উত্তীর্ণ হতে হবে এবং সেটা আপনাদের (নেতাকর্মী) মাধ্যমে। আপনাদের ধৈর্য, ঐক্য ও অংশগ্রহণের মাধ্যমে আগাতে হবে। তিন মাসের মধ্যে প্রতিটি ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, থানা, পৌরসভা, জেলা এবং মহানগর কমিটি করতে হবে। এর বাইরে এক চুল যাওয়ার কোনো ক্ষমতা আমাদের নেই এবং আপনাদেরও থাকবে না। আপনাদেরকে সেই কাজগুলো করতে হবে। সকলকে নিয়ে করতে হবে, কাউকে বাদ দিয়ে নয়। একাংশ বাদ দিলাম আর একাংশ নিয়ে করে ফেললাম, সেটা হবে না। প্রয়োজন হলে প্রত্যেকটি জেলা, থানা ও ইউনিয়নে যাব আমরা। আমাদের নেতৃবৃন্দ যাবেন। আমরা কোনো গোঁজামিলে বিশ্বাস করি না। কাউকে আমরা নিজেরা গোঁজামিল দেব না, কেন্দ্রীয় নেতারা গোঁজামিল দেবে না এবং আপনারা কেউ গোঁজামিল দেওয়ার সুযোগ পাবেন না।
আমান উল্লাহ আমান বলেন, এই খুলনা বিভাগে একটি জাগরণ সৃষ্টি করতে হবে। খুলনা বিভাগের যে ঐতিহ্য রয়েছে সেই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে হবে। প্রত্যেকটি জেলার সম্মেলনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন ইনশাআল্লাহ। বিলম্ব করা যাবে না, সময় নষ্ট করা যাবে না, ঢাকায় বসে কোনো কমিটি করা যাবে না। থানার হেড কোয়ার্টারে বসে ইউনিয়ন কমিটি করা যাবে না। প্রতিটি থানা, ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও পৌরসভায় যেতে হবে। তারপর জেলা কমিটি হবে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশ অনুযায়ী আমরা কাজ করব।
তিনি বলেন, ভোটারবিহীন অবৈধ প্রধানমন্ত্রী বলেছিল শেখ মুজিবের মেয়ে পালায় না। মাত্র একদিন পরে দেখলাম তিনি পালিয়ে যেতে বাধ্য হল। থাকতে পারেনি, থাকতে পারে না। অন্যায় জুলুম কখনো সহ্য হয় না, আল্লাহ কখনো সহ্য করে না।
আমান উল্লাহ আমান বলেন, প্রতিবেশী দেশ থেকে চক্রান্ত করছে। প্রধান উপদেষ্টা ঐক্যের ডাক দিয়েছেন। সেই ঐক্যে বিএনপি শরিক হয়েছে। ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, রাজপথে থাকতে হবে। এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মাধ্যমে যত দ্রুত সম্ভব কমিশনের সংস্কারগুলো শেষ করে নির্বাচন দিতে হবে, সেই নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে এবং বিএনপির ৩১ দফার মধ্যে তারেক রহমান যেটা দিয়েছেন একটি জাতীয় সরকার গঠন হবে। একদল চালাবে না। তারেক রহমান উদারতার পরিচয় দিয়েছেন। বলেছেন দুইবারের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবে না।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সামনে আমাদের কঠিন সময় আসছে। বৃহত্তর স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সামনের নির্বাচনে আমাদের কাজ করতে হবে। সকলকে এক থাকতে হবে। ধৈর্য এবং ঐক্য রেখে আমাদেরকে কাজ করতে হবে। ঐক্যের বিকল্প নেই।
খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আনিদ্য ইসলাম অমিতের সভাপতিত্বে ও বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুণ্ডুর সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, বিএনপি নেতা সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী, অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন, শামীমুর রহমান শামীম, এম ওবায়দুল ইসলাম, অমলেন্দু দাস অপু, কে এম আমিরুজ্জামান খান শিমুল, অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা, আমির এজাজ খান, কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ, রবিউল ইসলাম রবি, শফিকুল আলম তুহিন, মনিরুল হাসান বাপ্পি প্রমুখ।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]