শিখদের ধর্মীয় পরিচয়ের চিহ্ন নিয়ে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে ‘বিতর্কিত’ মন্তব্যের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ হয় তার বাংলোর অদূরে। বুধবার দিল্লিতে বিজেপি এবং শিরোমণি অকালি দলের ‘ঘনিষ্ঠ’ হিসেবে কয়েকটি শিখ সংগঠন রায়বেরেলির কংগ্রেস সংসদ সদস্যের সরকারি বাড়ির অদূরে বিক্ষোভ দেখান।
যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে রাহুল রোববার রাতে হার্নডনে (ভারতীয় সময় অনুযায়ী সোমবার) ভারতীয় বংশোদ্ভূত ও প্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন। অভিযোগ, সেখানে তিনি এক শিখকে দেখিয়ে বলেছেন, শিখরা যাতে নিজের ইচ্ছে মতো মাথায় পাগড়ি, হাতে কাড়া পরতে পারেন, গুরুদ্বার যেতে পারেন, তা নিশ্চিত করতেই ‘ইন্ডিয়া’ লড়ছে। সেই সঙ্গে তার মন্তব্য, ‘আমাদের লড়াই রাজনীতি নিয়ে নয়। লড়াই হল একজন শিখ তার পাগড়ি পরতে পারেন কি না, তা নিয়েও। এটা সব ধর্মের জন্য।’
নরেন্দ্র মোদি সরকারের আমলে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর স্বাধীন ভাবে ধর্মাচরণের অধিকার সঙ্কুচিত হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
রাহুলের ওই মন্তব্যের জবাবে মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী বলেন, ‘দেশের কোন প্রান্তে শিখদের পাগড়ি পরার অধিকার খর্ব করা হয়েছে। রাহুল জবাব দিতে পারবেন? উনি সঙ্কীর্ণ রাজনীতি করছেন। আমি এক জন গর্বিত শিখ। ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে পাগড়ি পরে দেশের সমস্ত প্রান্তে গিয়েছি।’ এর পরেই ইন্দিরা গান্ধী হত্যা পরবর্তী শিখবিরোধী হিংসার প্রসঙ্গ তুলে রাহুলের উদ্দেশে তার খোঁচা, ‘দেশে এক বারই শিখদের পাগড়ি পরার অধিকার নিয়ে সংকট তৈরি হয়েছিল। তার বাবা রাজীব গান্ধী সে সময় কী বলেছিলেন, তা সকলে জানেন।’
শিরোমণি অকালি দলের পক্ষে রাহুলের মন্তব্যের বিরোধিতা করা হয়েছে। যদিও রাহুলের পাশে দাঁড়িয়ে আম আদমি পার্টির সংসদ সদস্য সঞ্জয় সিংহ অভিযোগ করেন, কৃষিবিল বিরোধী আন্দোলনের সময় বিজেপি শিখদের খলিস্তানি বলেছিল।
রোববার ওয়াশিংটনের জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের সঙ্গেও আলাপচারিতায় অংশ নন রাহুল। সেখানে তাকে প্রশ্ন করা হয়, ভারতে আর কত দিন জাতভিত্তিক সংরক্ষণ ব্যবস্থা বহাল থাকবে? জবাবে তিনি বলেন, ‘কংগ্রেস তখনই সংরক্ষণ ব্যবস্থার ইতি টানার কথা ভাববে, যখন দেশে সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হবে। এখনো ভারতে তেমন পরিবেশ নেই।’
তার ওই মন্তব্যকে হাতিয়ার করে বিএসপি সভানেত্রী মায়াবতী মঙ্গলবার বলেন, ‘বরাবরই কংগ্রেসের গোপন পরিকল্পনা হল সংরক্ষণ ব্যবস্থা তুলে দেওয়ার। রাহুলের মন্তব্যেও তারই বার্তা মিলেছে।’ বিজেপির সহযোগী এলজেপির প্রধান তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী চিরাগ পাসওয়ান বলেন, ‘রাহুল এবং তার দল দলিত বিরোধী।’
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]