দেবহাটা প্রতিনিধি: আর মাত্র কয়েকদিন পরে মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আযহা। ধর্মীয় ঐতিহ্য ও ভাব-গাম্ভীর্য্যের মধ্য দিয়ে আগামী ১৭ জুন ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে পশু কোরবানি করবেন সারাদেশের মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ।
ঈদকে কেন্দ্র করে সারাদেশের মত সাতক্ষীরার পারুলিয়া পশুরহাটে ব্যাপক গরু-ছাগল কেনাবেচা হয় প্রতিবছর। সপ্তাহের রবিবার এখানে হাট বসে। কিন্তু এবছর গো খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় খরচের তুলনায় দাম না পাওয়ার কথা জানিয়েছেন খামারিরা।
তাছাড়া সাম্প্রতিক লাম্পিং স্কিন ডিজিজ এ আক্রান্ত হয়ে অনেক গবাদীপশু মারা গেছে এতে অনেকটাই সংকট রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
পারুলিয়া পশুরহাট ঘুরে দেখা গেছে, চাহিদার তুলনায় যোগান কম হওয়ায় চড়াও দাম হাকাচ্ছেন খামারি ও ব্যবসায়ীরা। তবে বাজারে বড় গরু না থাকলেও ছোট এবং মাঝারি গরুর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। এবছর অধিকাংশ মধ্যবিত্তরা ঝুঁকছেন ছোট বা মাঝারি সাইজের পশু কোরবানিতে। অন্যদিকে গো-খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধি ও বছর জুড়ে গরু পালন এবং পরিচর্চায় খরচ বেশি হওয়ার স্বত্বেও কাঙ্খিত দামের না পেয়ে কম দামে গরু বিক্রি করছেন অনেকে।
রবিবার পারুলিয়া পশুহাটে গিয়ে অন্যান্য বারের মতো বিশালাকৃতির সারি সারি গরুর দেখা মেলেনি। হাতে গোনা ৩ থেকে ৪টি বড় সাইজের গরু হাটে তুললেও, ঘন্টার পর ঘন্টা রোদে দাঁড়িয়ে থেকে ক্রেতা তেমন কোন দেখা মেলেনি। হাটের সবচেয়ে বড় গরুর দাম চাওয়া হয় ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা।
আর সবচেয়ে বড় ছাগলের দাম চাওয়া হয় ২৬ হাজার টাকা। তবে হাটে ৫৫ থেকে ৯৫ হাজার টাকা মূল্যের গরুর চাহিদা লক্ষ করা গেছে। পাশাপাশি ৬ থেকে ১২ হাজার টাকা মূল্যের ছাগল বেচাকেনা বেশি দেখা গিয়েছে।
গয়েশপুর গ্রামের মোহাম্মাদ আলী জানান, ১টি গরু ২লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা দাম হাকিয়েছি, ২লক্ষ টাকা হলে ছেড়ে দেব।
নলতার আমিনুর ইসলাম জানান, ২টি গরু নিয়ে এসেছি। ২টি গরু ২লক্ষ ৪০ হাজার টাকা চেয়েছি। কিন্তু এখনো পর্যন্ত ২টি গরুতে দেড় লক্ষ টাকাও দাম উঠেনি। ভাবছি বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যাবো।
সখিপুর গ্রামের কামরুল ইসলাম জানান, কোরবানির জন্য হাটে এসেছি। কিন্তু গরুর দাম বেশি বলার কারনে ক্রয় করা সম্ভব হবে না, ভাবছি সামার্থের মধ্যে ১টি ছাগল ক্রয় করবো।
ভোমরার ইমন হোসেন জানান, নিজ বাড়িতে পালিত ২টি ছাগল নিয়ে এসেছি। ছাগল ২টি সাড়ে ২২ হাজার টাকা দাম উঠেছে, ২৪ হাজার হলে বিক্রি করবো।
সখিপুর গ্রামের বিমল কুমার বলেন, নিজ বাড়িতে কয়েকটি গরু পালন করেছিলাম। যেগুলো বাড়ি থেকেই বিক্রি হয়ে গেছে। কয়েকটি ছাগল আছে, সেগুলো হাটে নিয়ে এসেছি। তবে চাহিদা অনুযায়ী দাম পাচ্ছি না।
সন্ন্যাসীরচক এলাকার রবিউল ইসলাম বলেন, পশু দাম এবার ব্যাপক। তাই কোরবানির জন্য ১৬ হাজার টাকা দিয়ে একটি ছাগল ক্রয় করেছি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ফরহাদ হোসেন হিরা জানান, এবছর হাট ইজারা গ্রহিতা না হওয়ায় প্রশাসনের মাধ্যমে খাস কালেকশন করা হচ্ছে। তবে কোরবানির ঈদ ঘিরে এ বছর পশুহাটের বেঁচাকেনা অনেকটাই কম। গরুর সংখ্যা কম থাকায় দাম একটু বেশি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, পশুহাটে মানুষ যাতে নিরাপদে কেনা বেচা করতে পারে সেব্যাপারে প্রশাসন তৎপর অঅছে। পশু হাটে পকেটমার, ছিনতাই বা কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। হাটে সার্বক্ষনিক উপজেলা প্রশাসন, প্রাণী সম্পদ বিভাগের টিম, পুলিশ, আনসার, গ্রামপুলিশ সার্বিক বিষয় তদারকি করছে।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]