দেবহাটা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার দেবহাটার খলিশাখালি সহ আশেপাশের এলাকায় অপরাধ দমনের লক্ষে স্থায়ী পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের দাবি জানিয়েন স্থানীয়রা। দেবহাটা থানা থেকে এলাকাটি দুরবর্তী ও ৩ উপজেলার সীমান্তবর্তী হওয়ায় সন্ত্রাসী ও অপরাধকারীদের অভয়আশ্রম। বিশেষ করে ঘের দখল, মাছ লুট, জমি দখল সহ বিভিন্ন অপরাধ দিনে দিনে বেড়ে চলেছে। তাছাড়া সাম্প্রতিক ব্যক্তিমালিকানাধীন ১৩২০ বিঘা জমি বে-দখল হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্য মতে, দেবহাটা থানা থেকে খলিসাখালি, বয়সা, রাঙ্গাসিসা, কালাবাড়িয়া, বাবুরআবাদ, নোড়া, চারকুনি সহ পার্শবর্তী স্থানের দুরুত্ব প্রায় ১০-১৫ কিলোমিটার। যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং থানা হতে প্রত্যান্ত এলাকায় হওয়ার কারণে প্রতিনিয়িত ঘটে যাওয়া বিভিন্ন অপরাধের জন্য আইনের দ্বারস্থ হতে হিমশিম খেতে হয়। আর পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করা হলে, এটি অপরাধ দমনে সহায়ক হবে এবং এলাকার মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবে। খলিশাখালি এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রহমান, সামাদ আলী, আশরাফ উদ্দীনসহ অনেকে জানান, এই এলাকায় ভুমিদস্যুরা মালিকানাধীন ভূমিগ্রাস করে এখানে অবস্থান করে সন্ত্রাসীরা দেশের বিভিন্ন এলাকায় অপরাধ কর্মকান্ডের আস্থানা গেড়ে বসেছে। এই কারণে, এখানে অপরাধের সম্ভাবনাও বেশি। তাই এখানে একটি পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করা হলে, পুলিশ খুব দ্রুত ঘটনাস্থলে যেতে পারবে এবং অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে পারবে। এছাড়াও একটি পুলিশ ফাঁড়ি এলাকার মানুষের মধ্যে নিরাপত্তা বোধ সৃষ্টি করবে। যখন মানুষ জানবে যে তাদের এলাকায় একটি পুলিশ ফাঁড়ি আছে, তখন তারা আরও বেশি নিরাপদ বোধ করবে এবং অপরাধের শিকার হওয়ার ভয় কম পাবে। তাই এলাকাবাসীর দাবি, খলিশাখালি এলাকায় একটি পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করা অত্যন্ত জরুরি। এটি এলাকার নিরাপত্তা ও শান্তি বজায় রাখতে সহায়ক হবে এবং মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। খলিশাখালি মৎস্যঘের এলাকার জমির মালিক আনছার আলী জানান, বিগত বছর ৫ আগস্টের পর আমাদের নামের রেকর্ডিয় ১৩২০ বিঘা জমি সন্ত্রাসীরা দখল করে নিয়েছে। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও তা উদ্ধার হয়নি। আমাদের ঘেরে দখল করায় আমরা কোটি কোটি টাকার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। যদি ওই এলাকায় স্থায়ী কোন পুলিশ ক্যাম্প থাকতো তাহলে আমাদের জমি বে-দখল হত না। আমরা আজ নিরুপায়। তাই প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি যাতে ওই এলাকায় একটি স্থায়ী ক্যাম্প নির্মান করার। প্রয়োজন হলে আমরা জমির মালিকগন সরকারকে ক্যাম্প স্থাপনের জন্য প্রয়োজনী জমি ও সার্বিক সহযোগীতা করবো। দেবহাটা উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারী এইচএম ইমদাদুল হক জানান, প্রায় সময় আমাদের কাছে অভিযোগ আসছে মৎস্য ঘেরে থেকে মাছ চুরি হচ্ছে। তাই এসব এলাকার নিরাপত্তার জন্য একটি পুলিশ ক্যাম্প হলে অপরাধীরা আপরাধ করার সাহস হারাবে। এবিষয়ে পারুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক বাবু জানান, দেবহাটা, কালিগঞ্জ, আশাশুনি উপজেলার সীমানাবর্তী স্থানে অপরাধীদের উপস্থিতির কথা জানা যাচ্ছে। তাছাড়া থানা থেকে উক্ত এলাকা দুরে হওয়ায় প্রশাসনের নজরের বাহিরে অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। তাই প্রত্যান্ত এলাকার আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে একটি পুলিশ ক্যাম্প করা হলে অপরাধের মাত্রা অনেকাংশে কমে আসবে। দেবহাটা থানার ওসি গোলাম কিবরিয়া হাসান জানান, বিষয়টি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ে কথা হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। আশা করি উর্দ্ধতন স্যারেরা যদি সদয় হন তাহলে দ্রুত সময়ের মধ্যে সেটি বাস্তাবায়ন করা সম্ভব হবে।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]