সারাদেশের ন্যায় সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার সদর ইউনিয়নে ১ জুন হতে লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়া জনসাধারণের সাহায্যার্থে ৪ ধাপে আসা জিআর এর নগদ অর্থ জনসাধারণের মধ্যে সম্পূর্ণ বন্টন না করে স্থানীয় প্রশাসন লুটপাটের পাঁয়তারা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, জেলার অন্যান্য ইউনিয়নের মত দেবহাটা সদর ইউনিয়নে করোনা ভাইরাসে লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত জনসাধারণের সাহায্যার্থে ৪ ধাপে জিআর এর টাকা আসে। প্রথম ধাপে ৫০ জনের জন্য ২৫ হাজার টাকা, দ্বিতীয় পর্বে ৫'শ জনের জন্য ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, তৃতীয় পর্বে ২০০ জনের জন্য ১ লক্ষ টাকা এবং চতুর্থ পর্বে ২০০ জন ইজিবাইক- ভ্যান চালক, চায়ের দোকানদারদের জন্য ১ লাখ টাকা। সর্বমোট ৪ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা ৯৫০ জনের জন্য ত্রাণ সহায়তার নগদ অর্থ আসে। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ৫ শত ৫০ জনের মধ্যে নগদ অর্থ প্রদানের ক্ষেত্রে নগদ অর্থ না দিয়ে ২'শ জনের জন্য এক লক্ষ টাকা খাদ্যশস্য ক্রয় করে যা অনুমোদনহীন। এই খাদ্যশস্য ক্রয় করতে গেলে উর্দ্ধতন কর্মকর্তার বা কমিটির লিখিত অনুমোদন প্রয়োজন এবং ইউনিয়ন পরিষদে মেম্বারদের নিয়ে মিটিং করে ক্রয় কমিটির মাধ্যমে ক্রয় করতে হবে। কিন্তু এর কোনো কিছুই তোয়াক্কা না করেই চেয়ারম্যান আবু বক্কর গাজী তার নিজের ইচ্ছামত দুইজন মেম্বার কে দিয়ে ১ লক্ষ টাকার মালামাল ক্রয় করে ১ লক্ষ ২৮ হাজার টাকা দেখানো হয়। এরপর ৯টি ওয়ার্ডে মেম্বারদের কাছ থেকে পর্যায়ক্রমে দুই বারে ১৫০ ও ১৬২ জনের তালিকা নিয়ে তাদের প্রত্যেককে নগদ ৫০০ টাকা করে প্রদান করে। এইভাবে ৩ বারে মোট ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার মতো বিতরণ করে। বাকি টাকার কোন হদিস পাওয়া যায় নি।
এছাড়া ইউনিয়নের ইজিবাইক চালক, ভ্যান চালক, চায়ের দোকানদাদের জন্য ২০০ জনের তালিকায় দেখা যায়- প্রকৃত চায়ের দোকানদার ইজিবাইক চালক, ভ্যানচালক না হয়ে ভুয়া তালিকা প্রণয়ন করা হয়।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ শফিউল বশার এর নিকট বিষয়গুলো উত্থাপন করলে উনি কোন সহযোগিতা করতে অস্বীকার করেন এবং কত টাকা ও কি কি পারপাস খরচ হবে তা বলতেও অস্বীকৃতি জানান। কত টাকা এসেছে এবং কত জনকে দিতে হবে এর তালিকা চাইলে এবং চেয়ারম্যানের দুর্নীতি কথা উল্লেখ করে এর প্রতিকারের কথা বললে তিনি প্রতিকার করতে পারবেন না বলে জানান এবং বিতর্কিত আচরণ প্রকাশ পায়।
পরে তিনি দুইটি তালিকা সরবরাহ করেন। ওই তালিকা গুলিতে দেখা যায়, ইজিবাইক চালক ভ্যানচালক চায়ের দোকানদার কত উল্লেখ থাকলেও তারা কেউই এই সকল পেশায় জড়িত নয়।
ইউনিয়ন ট্যাগ অফিসার বিআরডিবির কর্মকর্তা মোঃ আব্দুস সালাম এই নগদ অর্থ ও মালামাল দেওয়ার সময় তার বিতর্কিত আচরণ প্রকাশ পায় এবং বাকি অর্থ কিভাবে খরচ হয়েছে তিনি না দেখেই চলে আসেন। পরবর্তীতে তদন্তের স্বার্থে ট্যাগ অফিসারের কাছে তালিকা চাইলে তিনি দিতে অস্বীকৃতি জানান যা সন্দেহজনক।
জেলা প্রশাসকের কাছে এলাকাবাসীর দাবি, বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার করোনা কালীন সময়ে জনগণকে সহযোগিতা করার প্রয়াসকে যারা ষড়যন্ত্র মূলকভাবে বা লুটপাট করে খেতে চায় তদন্তপূর্বক তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]