দেবহাটা প্রতিনিধি: জেলার অন্যতম বিনোদন স্পট রূপসী ম্যানগ্রোভ (মিনি সুন্দরবন) যাওয়ার সড়কে ছুটির দিনে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করছিল ঠিকাদার। আর সেখানে উপস্থিত থাকা এলজিইডির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বসে বসে এ কাজ তদারকি করছিলেন। ঠিক তখনই অনিয়ম দেখে স্থানীয়রা বাধা দিলে ছটকে পড়ে ঠিকারদার ও এলজিইডির কর্তারা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। অনিয়ম দেখে কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেন ওই কর্মকর্তা। জানা গেছে, দেবহাটা উপজেলার সুশীলগাতী হতে শীবনগর গামী রাস্তার কার্পেটিং কাজের টেন্ডার পায় ফয়সাল হোসেনের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
১৫শ মিটার এ কাজের শুরু থেকে নানা অনিয়ম দেখা দেয়। ওই সময় স্থানীয়দের অভিযোগের মুখে কাজ বন্ধ করে দেয় তৎকালিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। পরে দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ রেখে পুনরায় কাজ শুরু করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি। এদিকে শনিবার ছুটির দিন কাপেটিং কাজ শুরু করে ঠিকাদারের লোকজন। এসময় নিম্নমানের পিচ দিয়ে উচ্চতাপমাত্রায় গলিয়ে ব্যবহার করা হচ্ছিল। এছাড়া কাজের স্টিমেট অনুযায়ী কাজ না করে যেনতেন ভাবে কাজ করতে থাকে।
এমনকি রাস্তার কাপেটিং ঠিকমত রুলার না করায় পায়ের জুতা ও গাড়ির চাকার সাথে উঠে আসতে থাকে। এছাড়া ওই রাস্তার বেডে ব্যবহৃত এজিং নিজে নিজে ধ্বসে পড়ছে। রাস্তার উপরে ময়লা, আবর্জনা রেখে নামমাত্র ট্যাগকোড দিয়ে কাপেটিং কাজ চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে কথা বলায় সেখানে থাকা এলজিইডির কর্মকর্তা ও ঠিকাদার ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিলন সাহাকে অবহিত করা হলে সেখানে হাজির হন তিনি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেখানে পৌঁছে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রমাণ পায়। এঘটনায় কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা আয়ুব হোসেন, আব্দুল মজিদ, শফিকুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান সহ অনেকে বলেন, ঠিকাদারের লোকজন রাতের আধারে নষ্ট ও নিম্নমানের পিচ এনে তরল করে ভালো পিচের ড্রামে ভর্তি করে। রাস্তায় ব্যবহৃত পাথরগুলোর নির্দিষ্ট কোন সাইজ নেই। উচ্চ তাপে ময়লা, মাটি, বালু মিশিয়ে পাথর ও পিচ কম দিয়ে রাস্তা নির্মান করছে। যা বেশিদিন স্থায়ী হবে না।
এমনকি তারা আরো অভিযোগ করে বলেন, ওই ঠিকাদার এত নিম্নমানের কাজে করছে যে প্রায় ১৫দিন আগে দেওয়া কার্পেটিং টান দিলে হাতে হাতে উঠে যাচ্ছে। বার বার অনিয়মের বাঁধা দিলে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু বন্ধ হয় না অনিয়ম। স্থানীয়দের অভিযোগ উপজেলা প্রকৌশলী দপ্তরের লোক থাকার সত্বেও এসব অনিয়ম হলেও তারা কিছু বলে না। এতে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে সহকারী ঠিকাদার আলমগীর হোসেন আলম অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ভুল হয়েছে। যেভাবে কাজ করা যায় তার একটা ব্যবস্থা করেন, আপনাদের সাথে আলাদা দেখা করে নিব।
অপরদিকে কাজের তদারকিতে থাকা উপজেলা প্রকৌশলী দপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার সংযোগ পাওয়া যায়নি। দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিলন সাহা বলেন, মৌখিক অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বেশ কিছু সমস্যা লক্ষ করা গেছে। যেহেতু এটি অত্যান্ত জনবহুল ও গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বিশেষ করে এই উপজেলার অন্যতম বিনোদন কেন্দ্রে যাওয়ার একমাত্র কাপেটিং রাস্তা। তাই কার্য্য পত্রের নিয়ম অনুযায়ী কাজ করার জন্য প্রকৌশলী ও ঠিকাদারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোন রকম অনিয়ম মেনে নেওয়া হবে না।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]