বর্তমানে দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা। যেটা আমাদের দেশের জন্য অনেক বড়। যদিও শতাংশের দিক থেকে এটি ১১ দশমিক ১০ শতাংশ। এর মধ্যে আদায় হয়েছে ৫৮ হাজার কোটি টাকা।
২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন মামলার কারণে ২ লাখ ১২ হাজার ১৫৭ কোটি টাকা সরকারের অনাদায়ী হয়ে আছে। সারা দেশে আদালতে আটকে থাকা মামলা রয়েছে ২ লাখ ৮২ হাজার ৯৬টি।
এ মামলা কিভাবে নিষ্পত্তি হবে জানা নেই। যে ঋণ দেওয়া হয়েছে তার ২৫ শতাংশ আমরা পাচ্ছি না। এটা আমাদের অর্থনীতির জন্য বড় দায়।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) সংসদে বাজেট আলোচনায় এসব কথা বলেন ঝিনাইদহ-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুল।
এ সময় তিনি কৃষিতে ভর্তুকি কমানোর সমালোচনা করে বলেন, মূল্যস্ফীতির জন্য যে ৭৪৯টি পণ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এর মধ্যে ৫০০টির বেশি কৃষিজাত পণ্য। তাই মূল্যস্ফীতি কমাতে হলে কৃষির উৎপাদন বাড়াতে হবে এবং কৃষককে ভর্তুকি দিতে হবে। কৃষির ভর্তুকির ক্ষেত্রে ৩২ দশমিক ৭ শতাংশ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। কৃষি নির্ভর দেশে কৃষিতে ভর্তুকি না কমিয়ে বাড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি।
২০২৩-২৪ সংশোধিত বাজেটে কৃষিতে ভর্তুকি ছিল ২৫ হাজার ৬৪৪ কোটি টাকা টাকা। আগামীবছর কৃষিতে বরাদ্দ একলাফে ১৭ হাজার কোটিতে নেমে গেছে। তাই কৃষিতে ভর্তুকি যদি বাড়ানো না যায় তাহলে গত বছর যা ছিল তা রাখার সুপারিশ করেন তিনি।
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি নিয়ে এমপি জাহেদী বলেন, ওএমএস, খাদ্য ভর্তুকি, ভিজিএফ, মাতৃ ও শিশু উন্নয়ন কর্মসূচি-প্রধানমন্ত্রীর নেওয়া অত্যন্ত যুগোপযোগী ও কল্যাণকর একটি কর্মসূচি। এর মধ্যে ওএমএসে মাত্র ৪ শতাংশ বাজেট বাড়োনো হয়েছে। এটা অত্যন্ত অপ্রতুল।
অন্যদিকে খাদ্য ভর্তুকিতে ২০ শতাংশ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেবামূলক খাতে ২০ শতাংশ কমানো নিয়ে প্রশ্ন তুলেন তিনি। ভিজিএফে মাত্র ৭ শতাংশ বরাদ্দ বেড়ে ৫৬৩ কোটিয়া দাঁড়িয়েছে। এখানে বরাদ্দ ১ হাজার কোটি টাকা করার পরামর্শ দেন তিনি। মাতৃ শিশু উন্নয়ন ও পেনশন কর্মসূচিতে বরাদ্দ বাড়ানোয় ধন্যবাদ জানান তিনি।
শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে তিনি বলেন, ক্যাডেট কলেজগুলো দেশের অন্যতম সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হওয়ার সত্ত্বেও সব সময় বাজেট সংকটে থাকে। আগামী অর্থবছরে ক্যাডেট কলেজ শিক্ষাব্যবস্থার মানোন্নয়নে এবং সঠিকভাবে পরিচালনা করতে যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন তা ব্যবস্থা করার সুপারিশ করেন তিনি।
হাসপাতালে ফার্মাসিস্ট নিয়োগের ব্যাপারে ইতিবাচক সম্মতি দেওয়ায় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে এমপি জাহেদী বলেন, হাসপাতাল সমূহে গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্ট নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রথম বছরে ৬০০ ফার্মাসিস্ট নিয়োগ হতে পারে। তাই দেশের স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়নে জনবল নিয়োগে প্রয়োজনীয় অর্থ প্রদানে অর্থমন্ত্রণালয়ের প্রতি সুপারিশ করেন তিনি।
এ সময় তিনি ঝিনাইদহে মেডিকেল কলেজ ও ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ক্যান্সার রোগীদের কেমোথেরাপি, কিডনি রোগীদের ডায়ালাইসিস ও হার্টের রোগীদের সিসিওর ব্যবস্থা করতে বিশেষায়িত ইউনিট চালু করার সুপারিশ করেন। এ ছাড়া ঝিনাইদহে কৃষি ফার্মকে কেন্দ্র করে একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সুপারিশ করেন তিনি।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]