চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে দেশ রক্ষায় ভূমিকা রাখতে নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সোমবার রাজধানীর গুলশানে তার বাসভবন ‘ফিরোজা’য় সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এ আহ্বান জানান। দলীয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, খালেদা জিয়া সিনিয়র নেতাদের ধৈর্যের সঙ্গে সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকার বার্তা দেন। ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে ঈদের রাতে খালেদা জিয়ার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান ও সেলিমা রহমান। এ সময় নেতারা খালেদা জিয়ার কুশলাদি জানতে চেয়ে নিজ নিজ পরিবারের কথা তাকে জানান।
খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে ড. মোশাররফ হোসেন উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, আমরা প্রত্যেক ঈদে নেত্রীর সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করি এবং ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করি। এখানে রাজনীতি নিয়ে আমরা আলোচনা করি না। আমাদের নেত্রীও করেন না। আজকেও তাই হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দেশের মানুষ তাদের অর্থনৈতিক খারাপ অবস্থার কারণে আনন্দের সঙ্গে ঈদ করতে পারেনি। এ নিয়ে আমরা কষ্টে আছি, এ ব্যাপারে দুঃখিত। আমাদের নেত্রীও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
চেয়ারপারসন দলীয় নেতাকর্মীসহ দেশের জনগণকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন ড. মোশাররফ। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে বাংলাদেশের মানুষের চাহিদা অনুযায়ী অর্থনৈতিক-সামাজিকসহ সর্বক্ষেত্রে উন্নতি হয়, আনন্দ-সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে ঈদ এবং জীবনযাপন করতে পারে-এজন্য খালেদা জিয়া দোয়া করেছেন।
স্থায়ী কমিটির সদস্যদের পর দলের সিনিয়র ৯ নেতা বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। তারা হলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, বরকতউল্লাহ বুলু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সুজা উদ্দিন, আবদুল কাইয়ুম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সদ্য পদোন্নতি পাওয়া দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।
এ সময় মুক্তিযোদ্ধা নেতাদের উদ্দেশে খালেদা জিয়া বলেন, আপনারা দেখছেন দেশের কী অবস্থা। দেশের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকট কতটা ভয়াবহ। আপনারা মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছেন। এই মুহূর্তে দেশ রক্ষায় আপনাদের ভূমিকা রাখা উচিত।
এছাড়া ঈদের আগের দিন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ। তার আগের দিন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিজ নির্বাচনি এলাকায় পরিবার ও দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদ করেন।
গত কয়েক বছরের মতো এবারও ফিরোজায় ঈদ করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন। খালেদা জিয়ার বড় ছেলে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান পরিবারসহ লন্ডনে, ছোট ছেলের স্ত্রী ও সন্তানরাও দেশের বাইরে। এজন্য দেশে থাকা ভাইয়ের পরিবারসহ ঘনিষ্ঠ স্বজনদের নিয়ে ঈদ করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দি হন। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে তাকে সাময়িক মুক্তি দিয়েছিল। তখন থেকে সরকার ৬ মাস পরপর খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]