সাতক্ষীরা থেকে প্রকাশিত দৈনিক কালের চিত্র অফিসে ককটেল হামলা, ভাঙচুর ও তিনজন সাংবাদিককে মারপিটের অভিযোগে দ্রুত বিচার আইনে মামলা হয়েছে। দৈনিক কালের চিত্রের ব্যবন্থাপনা সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম খোকন বাদি হয়ে মঙ্গলবার সাতক্ষীরার বিচারিক হাকিম (দ্রুত বিচার) আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। বিচারক ইয়াসমিন নাহার মামলাটি এফআইআর হিসেবে গণ্য করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার আসামীরা হলেন, সাতক্ষীরা শহরের প্রাণসায়ের (দীঘির ধার) এর আব্দুল করিমের ছেলে সাইফুল করিম সাবু, পলাশপোলের শেখ আবু সালেহ এর ছেলে শেখ জাহিদুর রহমান, তার ছেলে জাহিদ হাসান, দক্ষিণ পলাশপোলের আব্দুর রাজ্জাক সরদারের ছেলে রাসেদ সরদার, মধুমোল্লারডাঙির কওছার আলীর ছেলে শাহজাহান সিরাজ, একই এলাকার কওছার মোল্লার ছেলে আক্তারুজ্জামান, খোরশেদ আলমের ছেলে আক্তার হোসেন, শেখ মোশাররফ হোসেনের ছেলে শেখ আরিফ, পলাশপোল সবুজবাগের আবু বক্করের ছেলে রাজু, দক্ষিণ পলাশপোলের মধহবেগ এর ছেলে মুকুল হোসেন, উত্তর পলাশপোলের আব্দুস সবুর খানের ছেলে আসাদুজ্জামান খান, তালা উপজেলার কলাপোতা গ্রামের ইসমাইল মোড়লের ছেলে হামিদুল ইসলাম, দেবহাটা উপজেলার উত্তর কুলিয়া গ্রামের নূর আলী গাজীর ছেলে আরশাদ আলী খোকন, সদর উপজেলার ভালুকা চাঁদপুর গ্রামের ফটিক ডাকাতের ছেলে সাহেব আলী, আশাশুনি উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের গোলাম হোসেন খোকনের ছেলে মিলন হোসেন ও কালিগঞ্জের বাজারগ্রামের ছোট খোকনের ছেলে সাদ্দাম হোসেন।
মামলার বিবরনে জানা যায়, গত শনিবার সাতক্ষীরা বাস, মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল।
মৃত ব্যক্তিদের নাম ভোটার তালিকায় থাকাসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে শ্রমিক নেতা শেখ রবিউল ইসলাম মহমান্য হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেন। আদালত তিন মাসের জন্য নির্বাচন স্থগিত করেন। আদালতের আদেশ গত শুক্রবার সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কমিশনারের কাছে পৌঁছায়। এরপর থেকে শ্রমিক নেতা শেখ জাহিদুর রহমানের সমর্থকরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। শেখ জাহিদুরের পক্ষের শ্রমিকরা শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কালের চিত্র অফিস লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছোঁড়ে।
একইভাবে রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শ্রমিক লীগ নেতা সাইফুল করিম সাবুর নেতৃত্বে জাহিদুর রহমানসহ তার সমর্থক ১৫ জন শ্রমিক ও ৩০ জন বহিরাগত সন্ত্রাসী কালেল চিত্র অফিসের সামনে এসে ককটেল ও বোমা ছুঁড়ে ত্রাস সৃষ্টি করে।
পরে তারা কালের চিত্র অফিসে ঢুকে সাইফুল করিম সাবুর নেতৃত্বে ককটেল ছোঁড়ে, লোহার রড, হকি স্টিক, জিআই পাইপ দিয়ে পত্রিকা অফিসের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। একপ্লোচর মেশিন, দু’টি মোবাইল, বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবিও ভাঙচুর করা হয়। হামলা ও ভাঙচুরে বাধা দেওয়ায় সাংবাদি আশারাফুল ইসলাম খোকনসহ তিন সাংবাদিককে মারপিট করা হয়।
এ ঘটনায় আশরাফুল ইসলাম খোকন বাদি হয়ে রবিবার রাতে থানায় এজাহার দিলেও পুলিশ মামলা নেয়নি।
উপরন্তু শেখ জাহিদুর রহমানের দায়েরকৃত কালের চিত্র সম্পাদক অধ্যাপক আবু আহম্মেদসহ ১৭জনের নাম উল্লেখ করে মামলা নেয় পুলিশ। কালের চিত্র অফিসে বসে খবরের কাগজ পড়ার সময় শ্রমিক নেতা আক্তারুজ্জামান মহব্বত ও সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় পুলিশ। মঙ্গলবার সাতক্ষীরার মুখ্য বিচারিক হাকিম মোঃ হুমায়ুন কবীরের আদালত থেকে জেল হাজতে থাকা দু’ আসামীসহ সকল এজাহারভুক্ত আসামী জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।
সাতক্ষীরা আদালতের পুলিশ পরিদর্শক মাহমুদ হোসেন অধ্যাপক আবু আহম্মেদসহ ১৭জনের জামিন পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আশরাফুল ইসলাম খোকনের দায়েরকৃত দ্রুত বিচার আইনের মামলাটি এজাহার হিসেবেন গণ্য করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক ইয়াসমিন নাহার।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]