দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতেও অস্ট্রেলিয়াকে হারালো বাংলাদেশ
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে আবারও দাপুটে জয় পেলো টাইগাররা। ৮ বল হাতে থাকতেই পাঁচ উইকেটে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।
১২২ রানের টার্গেটে জয় পায় স্বাগতিকরা।
সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে টিম টাইগারদের এই দুর্দান্ত জয়ে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গিয়ে আগামি শুক্রবার সিরিজ নিশ্চিত করার হাতছানি সামনে।
তবে দ্বিতীয় ইনিংসে বারবার ম্যাচের রং বদল হয়েছে।
বারবার জেগেছে জয় পরাজয়ের শংকা। শেষ পর্যন্ত জয় হয়েছে ক্রিকেটের।
মাঠে আসার সুযোগ না থাকায় টিভির সামনে বসে মনোমুগ্ধকর এক ম্যাচ দেখেছেন দর্শকরা।
দুই তরুণ আফিফ আর সোহানের দারুণ ব্যাটিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ।
নাগালের মাঝে থাকা রান তাড়ায় বাংলাদেশের শুরুটা ছিল নড়বড়ে। তৃতীয় ওভারে সৌম্যকে (০) বোল্ড করে দেন মিচেল স্টার্ক। প্রথম ম্যাচে ২ রান করার পর ‘ডাক’ মারলেন এই ওপেনার।
সাকিব উইকেটে এসেই দুই বাউন্ডারি মেরে ম্যাচ জমিয়ে তোলার ইঙ্গিত দেন। কিন্তু পরের ওভারে হ্যাজেলউডের বলে বোল্ড হন ১৩ বলে ৯ রান করা নাঈম। ২১ রানে দুই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। সাকিবের সঙ্গী হন মেহেদী হাসান।
এই দুইজনের জুটিতে বাংলাদেশ আবারও ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। কিন্তু দারুণ ব্যাটিং করতে থাকা বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডারকে ২৬ রানে বোল্ড করে বাংলাদেশকে আবারও ব্যাকফুটে ঠেলে দেন অ্যান্ড্রু টাই।
সাকিবের ১৭ বলের ইনিংসে ছিল ৪টি বাউন্ডারি। ৯ম ওভারে ৫৮ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। উইকেটে আসেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। দলকে ভরসা দেওয়ার বদলে তিনি আলগা শট খেলতে গিয়ে বোল্ড হন ৪ বলে কোনো রান না করে। শিকারীর নাম অ্যাস্টন আগার।
১ রানের ব্যবধানে দুই বড় তারকাকে হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় বাংলাদেশ। বিপদ আরও বাড়ত যদি ইনফর্ম আফিফ হোসেনর বিপক্ষে মার্শের লেগ বিফোর উইকেটের আবেদন সফল হতো। আম্পায়ার আঙুল তুলেছিলেন। রিভিউ নিয়ে সফল হয় বাংলাদেশ। টাইগারদের দূর্গে পঞ্চম আঘাত হানেন অ্যাডাম জাম্পা। শুরু থেকেই আবোল তাবোল শট খেলতে থাকা মেহেদি হাসান ২৪ বলে ২৩ রান করে স্টাম্পড হয়ে যান। দলের জয়ের জন্য তখনো দরকার ৫২ বলে ৫৫ রান। মহাবিপদে পড়া দলকে আবারও ম্যাচে ফেরান দুই তরুণ আফিফ হোসেন আর নুরুল হাসান সোহান। দুজনেই দ্রুত উইকেটে সেট হয়ে হাত খুলে মারতে থাকেন। ধীরে ধীরে জয়ের সুবাস পেতে থাকে বাংলাদেশ। জুটি ছাড়িয়ে যায় পঞ্চাশ। ম্যাচে আর কোনো বিপর্যয় হতে দেননি এই দুই তরুণ। হ্যাজেলউডের করার ১৯তম ওভারের চতুর্থ বলে বাউন্ডারি মেরে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন আফিফ। ৪৪ বলে তারা গড়েন অবিচ্ছিন্ন ৫৬* রানের জুটি। আফিফ ৩১ বলে ৫ চার ১ ছক্কায় ৩৭* আর সোহান ২১ বলে ৩ চারে ২২* রানে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে, প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটিং ব্যর্থতায় হেরে আজ দ্বিতীয় ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাটিং নিয়েও সুবিধা করতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। টাইগারদের সামনে সহজ লক্ষ্য রেখেই ইনিংস শেষ করে অজিরা। ৭ উইকেট হারিয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১২১ রান সংগ্রহ করে অস্ট্রেলিয়া।
টাইগারদের দুর্দান্ত এই ইনিংসে নিঃসন্দেহে বোলাররা তাদের দায়িত্ব ভালোভাবেই পালন করেছেন।
মিরপুরে পাঁচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয়টিতে টস হেরে ফিল্ডিংয়ে নামে টাইগাররা। এদিনও শুরুটা দারুণ করেছে বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়া সতর্ক শুরু করলেও পাওয়ার প্লেতে দলটি ২ উইকেট তুলে নেয় টাইগাররা। ৬ ওভার শেষে ৩২ রান তুলতে পারে সফরকারী অজিরা।
দলীয় ১৩ রানে ওপেনার অ্যালেক্স ক্যারিকে নাসুম আহমেদের ক্যাচে পরিণত করেন মেহেদী হাসান। আর ষষ্ঠ ওভারে বোলিংয়ে আসা মোস্তাফিজুর রহমান অসাধারণভাবে বোল্ড করেন আরেক ওপেনার জস ফিলিপকে।
মাঝে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৫২ বলে ৫৭ করে দলকে বিপর্যয় থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন মিচেল মার্শ ও মইসেস হেনরিকেস। তবে ২৫ বলে ৩০ রান করা হেনরিকেসকে সাকিব আল হাসান বোল্ড করলে ভাঙে জুটি। এরপর মার্শও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। আগের ম্যাচের মতো এ ম্যাচেও ৪৫ রান করেন। এবার ৪২ বল খেলে শরিফুল ইসলামের বলে উইকেটরক্ষক নুরুল হাসানকে ক্যাচ দেন।
এরপর আসা-যাওয়ার মিছিলেই ব্যস্ত থাকে সফরকারীরা। দুর্দান্ত বল করা মোস্তাফিজ অজি অধিনায়ক ম্যাথিউ ওয়েড ও অ্যাশটন অ্যাগারকে পর পর দুই বলে বিদায় করে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগান। এ ম্যাচে দুদলই তাদের একাদশ অপরিবর্তিত রেখেছে।
সিরিজের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ২৩ রানে হারিয়ে শুভসূচনা করেছিল টাইগাররা।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)