নড়াইলের হিজলডাঙ্গা গ্রামে ঐতিহ্যবাহী পাগল চাঁদের মেলার ইতিহাস জানলে অবাক হবেন
উজ্জ্বল রায়, নড়াইল: নড়াইলের হিজলডাঙ্গা গ্রামে ঐতিহ্যবাহী পাগল চাঁদের মেলার ইতিহাস জানলে অবাক হবেন।
মেলা মানেই যেন উৎসব আমেজ আর অন্যরকম ভালোলাগার একটি অনুভূতি। মেলা শব্দটির সাথে আমরা কমবেশি সকলেই পরিচিত। ছোটবেলায় মেলায় ঘুরতে যাবার অনেক স্মৃতি ও গাঁথা রয়েছে অনেকের মনে।
আবার অনেকেই মেলায় ঘুরতে গিয়ে হারিয়েও যায়, যেটা থেকে আমরা প্রায়শই কথা প্রসঙ্গে মজা করে বলে থাকি মেলায় হারিয়ে যাওয়া ভাই/বোন। উজ্জ্বল রায়, নড়াইল থেকে জানান, ঠিক তেমনই একটি মেলা নড়াইলে অনুষ্ঠিত হয় প্রতি বছর বাংলা মাসের ক্যালেন্ডারে পৌষ মাসের শেষে আর মাঘ মাসের একদম প্রথম তারিখেই।
অর্থাৎ প্রতিবছর শীতের মাঘ মাসের ১ তারিখে এ মেলাটি অনুষ্ঠিত হয় নড়াইল শহরের মুলিয়া ইউনিয়নের হিজলডাঙ্গা গ্রামে।
এ মেলার ইতিহাস শতবছরের ও পুরোনো। কথিত আছে পাগল চাঁদ নামে একজন আধ্যাত্মিক এসেছিলেন এ হিজলডাঙ্গা গ্রামে আর সে থেকেই সেই আধ্যাত্মিক এর নামে পাগল চাঁদ মেলা শত বছরের ও অনেক আগে থেকেই পালিত হয়ে আসছে।
গাজা আর ভাজা (চানাচুর) এ মেলার মূল প্রথা। একদিনের এ মেলায় পাগল চাঁদের ভক্তরা প্রসাদ হিসেবে গাজা এবং ভাজা দিয়ে থাকেন। অনেকেই পাগল চাঁদের নামে মানত করে টাকা পয়সা দেন। তাদের বিশ্বাস, পাগল চাঁদের উছিলায় তাদের মনোবাসনা পূর্ণ হবে।
৫৫ বছরের ঊর্ধ্ব বয়সী কালা দাস, অনুপ দাস, বিকাশ কুন্ডু, রাজু সেখ।
১২নং বিছালি ইউনিয়নের রুখালি গ্রামের রাসেল বিশ্বাস জানান, তাদের এলাকার স্থানীয় এ মেলা তাদের বাপ দাদার আমল থেকে হয়ে আসছে।
অনেকেই পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসেন মেলায়। শতশত মানুষের উপস্থিতি যেন মেলা কে আরো উৎসব মুখর করে তোলে। বাপ্পী খান, বিশেষ প্রতিবেদক বলেন, একদিনের এ মেলায় আয়োজনের যেন কোন কমতি নেই। হরেক রকম খাবারের স্টল বসানো হয়৷ সেখানে স্থানীয়দের হাতে তৈরি নানান রকমের মিষ্টি, পিঠা, পাপর, চানাচুর, ছোলা ভূনা, চটপটি, ফুসকা, পিয়াজু সহ নানা পদের খাবার পাওয়া যায়। আছে মিষ্টি পানের দোকান। সেই সাথে বাচ্চাদের বাড়তি বিনোদন হিসেবে মেলায় বসানো হয় চরকি, ঘোড়া আরো অনেক কিছুই।
মুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ অধিকারী জানান, এ মেলা আমাদের শত বছরের ঐতিহ্য। আমাদের পূর্ব পুরুষদের আমল থেকে হয়ে আসা এ মেলা যেন এখনো সেই আগের ঐতিহ্য বহন করে৷ এখানে শতশত মানুষ ঘুরতে আসে পরিবার পরিজন ও বন্ধুবান্ধব নিয়ে। আমরা সকলেই শীতের শুরুতে এ মেলার আশায় থাকি।
এখানে সব ধর্ম বর্ণের মানুষ মিলেমিশে আনন্দ করে৷ পুলিশ প্রশাসন ও তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে যাতে পরিবেশ পরিস্থিতি বিঘ্ন না ঘটে। সরকার ও নড়াইলের জনগণের কাছে প্রত্যাশা নড়াইল শহরের শত বছরের ঐতিহ্যবাহী এ পাগল চাঁদের মেলা যেন এভাবেই টিকে থাকে যুগের পর যুগ।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)