স্ত্রী স্বামীর সঙ্গে থাকতে চান না। তবে স্বামী চান একসঙ্গে থাকতে। এই পরিস্থিতিতে স্ত্রী যাতে বৈবাহিক দায়িত্ব পালনে পিছিয়ে না যান তাই আইনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এক স্বামী। আদালত সেই আর্জি খারিজ করে জানালেন, নারীরা স্বামীর সম্পত্তি নয় যে, অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাকে স্বামীর সঙ্গে থাকতে হবে।
বুধবার (৩ মার্চ) ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এই রায় দিয়েছেন। স্ত্রীকে বৈবাহিক সম্পর্কে বাধ্য করার আর্জি জানিয়ে মামলাটি যিনি করেছিলেন, তাকে ভর্ৎসনা করে আদালত জানতে চেয়েছেন, এমন রায় যে আদালত দিতে পারে, এ কথা মনে হলো কী করে তার?
২০১৫ সালের একটি মামলার প্রেক্ষিতে এই রায়। তবে মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে ওঠার আগে উত্তরপ্রদেশের একটি পারিবারিক আদালত এবং এলাহাবাদ হাইকোর্ট ঘুরে এসেছে।
স্বামীর বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ এনে আলাদা থাকতে শুরু করেছিলেন এই স্ত্রী। তবে সমস্যা বাধে স্বামীর থেকে তিনি ভরণপোষণ চাওয়ায়। নিজের জন্য আর্থিক সংস্থানে অপারগ ওই নারী স্বামীর কাছে প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকার ভরণপোষণ দাবি করেন। তারপরেই শুরু হয় স্বামী-স্ত্রীর আইনি লড়াই।
ভরণপোষণ দিতে অস্বীকার করে স্ত্রীকে তার সঙ্গে এসে থাকতে বলেন স্বামী। বৈবাহিত দায়িত্ব পালনের শর্ত দেন। ২০১৯ সালে উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরের এক পারিবারিক আদালত স্বামীর এই দাবি মেনেও নেয়। সেই রায়ের বিরুদ্ধেই পাল্টা মামলা করেন স্ত্রী।
আদালতে ওই মহিলা অভিযোগ করেন, পণের টাকা না দেওয়ায় তার ওপর নিয়মিত শারীরিক নির্যাতন করতেন স্বামী। তাই তিনি আর তার স্বামীর সঙ্গে থাকতে চান না। তবে, যেহেতু তিনি নিজের আর্থিক সংস্থানে অপারগ, তাই স্বামীর কাছ থেকে ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকার আছে তার।
আদালতকে ওই নারী এ-ও জানান, এ সবই আসলে তার স্বামীর অজুহাত। ভরণপোষণের টাকা দেবেন না বলেই তাকে নিজের সঙ্গে থাকতে বলছেন স্বামী।
এলাহাবাদ হাইকোর্ট মামলাটিতে স্ত্রী-র পক্ষে রায় দিলে সুপ্রিম কোর্টে যান স্বামী। বুধবার সুপ্রিম কোর্টও স্ত্রী-র পক্ষেই রায় দিলেন। স্বামীকে ভর্ৎসনা করে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয়কিষাণ কউল এবং বিচারপতি হেমন্ত গুপ্তর বেঞ্চ বলেন, ‘নারীরা কি সম্পত্তি নাকি? একজন নারী কি স্বামীর সম্পত্তি যে তিনি যেতে না চাইলেও তাকে জিনিসপত্রের মতো স্বামীর ঘরে পাঠিয়ে দেওয়া হবে?’
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]