নিথর দেহ হাসপাতালে পড়ে আছে, পালালেন স্বামী!
বিদেশ যাওয়া নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য। কিন্তু কী এমন ঘটনা ঘটলো স্ত্রীকে নিয়ে গেলেন নেত্রকোনার মদন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে! সেখানে পরিস্থিতি বুঝে সটকে পড়লেন স্বামী। ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার রাতে।
জানা যায়, ডাক্তার ওই নারীকে মৃত ঘোষণা করলেও পাওয়া যায়নি স্বামী অথবা কোন স্বজনকে।
পরে খবর পেয়ে নেত্রকোনার হাওরাঞ্চল মদন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানার পুলিশ।
মদন থানার ওসি মো. ফেরদৌস আলম এ তথ্য জানিয়ে বলেন, লাশের সুরতহাল রিপোর্ট শেষে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, মৃত ওই নারী উপজেলার মদন ইউনিয়নের বাগধাইর গ্রামের হুমায়ূন মিয়ার স্ত্রী। তার বাবার বাড়ি পাশের উপজেলা কেন্দুয়ার বেগুনি গ্রামে।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে আরও জানা গেছে, নেত্রকোনার মদন উপজেলার মদন সদর ইউনিয়নের মৃত আলী হোসেনের ছেলে হুমায়ূন।
৯ বছর পূর্বে পারিবারিকভাবে সাজেদাকে বিয়ে করে দাম্পত্য জীবন শুরু করেন তারা। দাম্পত্য জীবনে ৭ বছর বয়সী একজন ছেলে রয়েছে তাদের। কর্মজীবনে ৩ বছর মালয়েশিয়া ছিলেন হুমায়ূন।
গত ২ মাস আগে বাড়িতে আসেন। শুক্রবার (২২ এপ্রিল) আবার মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দেয়।
পুলিশ মৃতের শ্বশুর বাড়িব বরাত দিয়ে জানায়, স্বামীর সাথে মনোমালিন্যের এক পর্যায়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজ বসত ঘরের আড়ার সাথে গলায় দড়ি পেচিয়ে গলায় ফাঁস নেন সাজেদা আক্তার। এসময় স্বামী হুমায়ূনের ডাক-চিৎকারে প্রতিবেশী লোকজন সাজেদা আক্তারকে উদ্ধার করে মদন হাসাপাতালে নিয়ে আসেন। মদন হাসাপাতালের জরুরী বিভাগের কতর্ব্যরত চিকিৎসক ডাক্তার আসাদ সাজেদাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মারা যাওয়ার খবর শুনেই স্বামী হুমায়ূন স্ত্রীর মরদেহ হাসপাতালে রেখেই পালিয়ে যান। পরে পুলিশ আসলে প্রতিবেশী ও স্বজনরাও সটকে পড়েন।
এ ব্যাপারে মরদেহর কাছে থাকা হুমায়ূনের বড় ভাই আবুল বাশার স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে বলেন, সাজেদা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে খবর শুনে হাসাপতালে আসি। লাশের সাথে পুলিশ আমাকে আটকে রাখলে সবাই পালিয়ে যায়। আমি একাই লাশের সাথে আছি।
মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফেরদৌস আলম বলেন, আমরা কাউকে আটক করিনি। যাকেই পাচ্ছি জিজ্ঞাসা করছি। ওই নারীর স্বামী আগামীকাল (আজ) শুক্রবার আবারো বিদেশ যাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হলে স্ত্রী অসুস্থ হয়ে যায়। এরপর স্বামী নিজেই হাসপাতালে নিয়ে আসে। কিন্তু সুবিধা মতো এক পর্যায়ে হুমায়ুন সটকে পড়েন। এদিকে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করলে লাশ হাসপাতালের বারান্দাতেই ছিলো। আমরা খবর পেয়ে গিয়ে লাশের ময়নাতদন্তের জন্য সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে নেত্রকোনা মর্গে পাঠাই।
তবে এ ব্যাপারে এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। আমরা ওদের বাড়ি এবং আশপাশে যাকেই পাচ্ছি জিজ্ঞাসাবাদ করছি।
অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)