নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে: নাহিদ


নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, বর্তমানে যে সংকটময় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তার জন্য অনতিবিলম্বে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দেওয়া উচিত। এ নির্বাচন কমিশনের ওপর আমরা আস্থা রাখতে পারছি না। নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে। তারা সংস্কার প্রস্তাব আমলে নেয়নি। তাদের যে গঠন প্রক্রিয়া সেখানেই ত্রুটি রয়েছে। আমরা প্রথমে নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠন করে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি।
মঙ্গলবার (২০ মে) রাতে দলটির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, নতুন স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলে জনপ্রতিনিধি আসবে, নাগরিক সমস্যা লাঘব হবে। সরকারের কাছে আমরা দাবি জানাচ্ছি, যেন দ্রুত নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দিকে আমরা যেতে পারি।
তিনি আরও বলেন, আমরা কিন্তু বলি নাই যে, জাতীয় নির্বাচন পিছিয়ে স্থানীয় নির্বাচন দিতে হবে। প্রয়োজনে গণপরিষদ নির্বাচন এবং জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হোক। তারিখ ঘোষণার মাধ্যমে সবাইকে আশ্বস্ত করে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিক। আমাদের সে বিষয়ে কোনো আপত্তি নেই।
জাতীয় নির্বাচনের বিরোধিতা কেউ করেনি উল্লেখ করে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে পরিকল্পিতভাবে সব আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসা হয়েছে জাতীয় নির্বাচন। প্রধান উপদেষ্টা ডিসেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত যে সময় দিয়েছেন, আমরা কিন্তু সেটাকে সমর্থন করেছি। এরমধ্যে নির্বাচন হতে পারে। তবে এরমধ্যে আমরা বিচার এবং সংস্কারের কথা বলেছি। গণপরিষদ নির্বাচন একই সঙ্গে করতে হবে, সেই কথাটা আমরা বলেছি। স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিটা কিন্তু আজকে আমরা হঠাৎ দিচ্ছি না। এটা এর আগেও দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিতে ইসির সামনে বিক্ষোভ করবে এনসিপি
স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিতে নির্বাচন কমিশনের সামনে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
মঙ্গলবার (২০ মে) রাতে দলটির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেন।
জনপ্রতিনিধি না থাকায় নাগরিক সেবা প্রদান মারাত্মকভাবে ব্যহত হচ্ছে এবং সামাজিক সুরক্ষা উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে বিক্ষোভের ডাক দেন তিনি।
আখতার হোসেন বলেন, আমরা অনতিবিলম্বে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব আমলে নিয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনের উদ্যোগ গ্রহণ করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দাবি জানাচ্ছি। এই দাবিতে আগামীকাল জাতীয় নাগরিক পার্টি–এনসিপি, ঢাকা মহানগরের উদ্যোগে বেলা ১১টায় নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করা হবে।
তিনি বলেন, ‘ইশরাক হোসেন বনাম শেখ ফজলে নূর তাপস গং’ মামলাকে নজির হিসেবে নিয়ে সারাদেশে অবৈধ নির্বাচনের প্রার্থীরা আদালতের শরণাপন্ন হয়ে এক জটিল ও সংকটময় পরিস্থিতি তৈরি করছে। এ সংকট নিরসনে এবং জনদুর্ভোগ লাঘবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনই একমাত্র সমাধান। কিন্তু ফ্যাসিবাদী আইনে গঠিত বর্তমান পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচন কমিশন এই নির্বাচন আয়োজনে সক্ষম নয় বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে।
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা রাখা সম্ভব নয়: এনসিপি
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা রাখা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
মঙ্গলবার (২০ মে) রাতে রাজধানীর বাংলামোটরে দলটির কার্যালয়ে আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষ থেকে এ কথা জানান দলের সদস্যসচিব আখতার হোসেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন অবৈধ ও ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার প্রণীত ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন ২০২২’ অনুযায়ী গঠিত। ফ্যাসিবাদ বিরোধী সব রাজনৈতিক দল ও পক্ষ যা সেসময় প্রত্যাখ্যান করেছিল। এরপরও আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি যে, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনার আগেই নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। ফলে বিদ্যমান নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রমে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনার প্রতিফলন ঘটবে না বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে।
আখতার হোসেন বলেন, পলাতক ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের নির্বাচনে অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ সংক্রান্ত সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব নাকচ করেছে বিদ্যমান নির্বাচন কমিশন। এর ফলে এই কমিশনের ওপর আস্থা রাখা সম্ভব নয় বলেই আমরা মনে করি।
এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, ২০২০ সালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অবৈধ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বর্তমানে জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাতদুষ্ট ভূমিকাই দায়ী বলে আমরা মনে করি। ‘ইশরাক হোসেন বনাম শেখ ফজলে নূর তাপস গং’ মামলার বিবাদী হওয়া সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন নজিরবিহীনভাবে মামলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি। যার ফলে একতরফা রায় দেওয়া হয়েছে। এমনকি রায়ের পর তারা উচ্চ আদালতে প্রতিকার প্রার্থনা না করে মামলার বাদীকে বিশেষ সুবিধা দিয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। এর আগেও আমরা দেখেছি, নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ আচরণ বজায় রাখার পরিবর্তে এমন সব বক্তব্য দিয়েছে- যার সঙ্গে একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের অবস্থানের মিল রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ মামলার রায় ঘোষণার আগেই সংশ্লিষ্ট আইনের অধীন গত ১৯ আগস্ট ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। ফলে পুরো মামলাটিই অকার্যকর হয়ে গেছে। রায় ঘোষণার পর গেজেট প্রকাশের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাইলেও, মতামত দেওয়ার আগেই তড়িঘড়ি করে রাতের আঁধারে গেজেট প্রকাশ করা হয়। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সার্বিক ভূমিকা স্পষ্টতই পক্ষপাতমূলক।
আখতার হোসেন বলেন, একই সঙ্গে আমরা লক্ষ্য করছি যে, জনপ্রতিনিধি না থাকায় নাগরিক সেবা প্রদান মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে এবং সামাজিক সুরক্ষা উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ‘ইশরাক হোসেন বনাম শেখ ফজলে নূর তাপস গং’ মামলা নজির হিসেবে নিয়ে সারা দেশে অবৈধ নির্বাচনের প্রার্থীরা আদালতের শরণাপন্ন হয়ে এক জটিল ও সংকটময় পরিস্থিতি তৈরি করছেন। এ সংকট নিরসনে এবং জনদুর্ভোগ লাঘবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনই একমাত্র সমাধান। কিন্তু ফ্যাসিবাদী আইনে গঠিত বর্তমান পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচন কমিশন এই নির্বাচন আয়োজনে সক্ষম নয় বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে।

কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)
