প্রয়াত কমরেড অমল সেনকে এ দেশের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে মূল্যায়ন করলেন দেশের শীর্ষ কমিউনিষ্ট নেতৃবৃন্দ। তারা বলেন সংগ্রাম-সংগঠনে অমল সেন প্রর্দশিত পথই নিপীড়িত শ্রেণির আলোকবর্তিকা। নেতৃবৃন্দ দূরাচারী, দুর্বৃত্ত, সন্ত্রাসী, শোষক, সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর হাত থেকে রক্ষা পেতে সকল দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ভুলে কমিউনিষ্ট ঐক্য গড়ে তোলার আহবান জানান। কমিউনিষ্ট নেতৃবৃন্দ গতকাল যশোর নড়াইলের সীমান্তবর্তী গ্রাম বাকড়ীতে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তৃতা করছিলেন। বাংলাদেশের ওর্যাকার্স পার্টির সাবেক সভাপতি ঐতিহাসিক তেভাগা আন্দোলনের কিংবদন্তিতুল্য সংগঠক কমরেড অমল সেনের ১৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাকড়ীতে আয়োজন করা হয় অমল সেন স্মরণসভা। দু’দিনের এই অনুষ্ঠানের আয়োজক কমরেড অমল সেন স্মৃতিরক্ষা কমিটি।
অনুষ্ঠানের শেষ দিনে অমল সেনের সমাধিতে নেতৃবৃন্দ পুষ্পার্ঘ অর্পণ করেন। পরে জাতীয় এবং দলের আর্ন্তজাতিক সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। অমল সেনের জীবনী ও বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে বাকড়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয় চত্বরে স্থাপিত মঞ্চে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন কমরেড নারায়ণ চন্দ্র পাঠক। বক্তব্য দেন বাংলাদেশের ওর্য়াকার্স পার্টি (মার্কসবাদী) গ্রুপের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো.ইকবাল কবির জাহিদ, ইউনাইটেড কমিউনিষ্ট লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আফছার আলী, সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য লায়েকুজ্জামান, যশোর শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আমিরুল আলম খাস,কনকন পাঠক, বিপুল বিশ্বাস, বিথিীকা বিশ্বাস, কৃঞ্চপদ বিশ্বাস প্রমুখ।
বক্তারা বলেন অমল সেন ছিলেন, দেশের প্রথম কমিউনিষ্ট আন্দোলনের সংগঠক। ১৯৩৩ সালে নড়াইলের সরসপুর গ্রামের মৎস্যজীবিদের জলার ওপর অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি মৎস্যজীবিদের সংগঠন গড়ে তোলেন। কিছুদিনের মধ্যে তিনি ইজারা প্রথা, হাটতোলা, ইত্যাদি খাজনা বন্ধের জন্য গোবরা, আগদিয়া, তুলারামপুর, ধলগ্রাম, মাইজপাড়া, এবং নাকশি মাদ্রাসা হাটসহ ব্যাপক অঞ্চলে হাটতোলা বন্ধের আন্দোলনে কৃষকদের সংগঠিত করেন এবং বিজয়লাভ করেন। তিনি তেভাগা সংগ্রামে কৃষকদের সংগঠিত করার জন্য বাকড়ি, হাতিয়ারা, গোয়াখোলা, বাকলি, মালিয়াট, দোগাছি, ঘোড়ানাচ, কমলাপুর, সহ হিন্দু অদ্যুষিত এগারখান এলাকাসহ বড়েন্দার, বীড়গ্রাম, উজিরপুর, চাদপুর, দূর্গাপুর, নয়নপুর, ডুমুরতলা, দলজিৎপুর এলাকার কৃষকদের সংগঠিত করেন। এই আন্দোলনে সহযোদ্ধা হিসেবে উল্লেখযোগ্য ছিলেন, নুর জালাল মোল্লা, মোদাচ্ছের মুন্সি, হেমন্ত সরকার, বটুদত্ত, রসিক লাল ঘোষ, আজিজুর রহমান, রামচরণ গোলদার, সরলা সিংহ প্রমুখ।
তার আপোসহীন ভূমিকার জন্য জীবনের ১৯টি বছর কারাগারে কাটাতে হয়েছে। ১৯৭১ সালের ২৮ মার্চ স্বাধীনতাকামী বীর জনতা যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাকে মুক্ত করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধ সংগঠকের কাজে আত্মনিয়োগ করেন। ২০০৩ সালের ১৭জানুয়ারি বার্ধক্যজনিত কারণে ঢাকা কমিউনিটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]