নড়াইলের নবগঙ্গা নদীতে নির্মাণাধীন সেতুর হেলে যাওয়ায় পিলারের নকশা পরিবর্তন।
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বারইপাড়া নবগঙ্গা নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুর হেলে যাওয়া ৯নং পিলারের নকশা পরিবর্তন করা হয়েছে। তবে ন্যাশনাল টেন্ডার হতে এখনও তিন মাস লাগতে পারে। ৯ নং পিলার বাদ দিয়ে ৮ থেকে ১০ নং পিলারের মাঝে ঢালাই না দিয়ে ষ্টীলের স্প্যান বসানো হবে। এছাড়া পরবর্তীতে যাতে কোনো নৌযান দ্বারা পিলার আঘাতপ্রাপ্ত না হয় সেজন্য প্রতিটা পিলারের চারিদিকে ষ্টিলের বেষ্টনি দিয়ে বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়া হবে।
এ কারণে অতিরিক্ত ২৮ কোটি ব্যয় ধরা হয়েছে। ৪র্থ দফার মেয়োদ শেষে কাজের অগ্রগতি ৬২ ভাগ। ৫ম মেয়াদে ২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে সেতুটি নির্মিত না হওয়ার ওই এলাকার জনপ্রনিধিসহ স্থানীয় জনগন ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন।
নির্মান কাজ কবে নাগাদ শেষ হবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। নড়াইলের নবগঙ্গা নদীতে নির্মাণাধীন সেতুর হেলে যাওয়ায় পিলারের নকশা পরিবর্তন করা হয়েছে। টেন্ডার হতে এখনও ৩ মাস সময় লাগবে, ১ বছরের কাজ ৪ বছরে সম্পন্ন হয়েছে ৬২ ভাগ, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। শুধু তাই নয় সরকারের অতিরিক্ত ব্যয় হবে ২৮ কোটি টাকা।
জানা গেছে, নড়াইল-কালিয়া সড়কে নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের বারইপাড়া ও কালিয়া পৌরসভার পাঁচ কাউনিয়া অংশে নবগঙ্গা নদীর ওপর ৬৫১.৮৩ মিটার লম্বা, ১০.২৫ মিটার প্রস্থ, ১৬টি পিলার ও ১৫টি স্প্যানের এ সেতুর নির্মান ব্যয় ধরা হয় ৭২ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।
এমডি জামিল ইকবাল এন্ড মো. মইনুদ্দীন বাশি জেভি ফার্ম ২০১৮ সালের ১৮ মার্চ সেতুর কার্যাদেশ পায় এবং ২০১৯ সালের জুনে শেষ করার কথা থাকলেও নির্মাণ কাজ শুরু করতে দেরী এছাড়া ধীর গতির কারনে কাজটি দিন দিন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়।
এরপর ২০২০ সালের ২০জুন বালু বোঝাই একটি বাল্কহেডের ধাক্কায় মাঝ নদীতে অবস্থিত ৯ নম্বর পিলারটি এবং পরবর্তী বছর ২০২১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর একই পিলার আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে হেলে যায়। এছাড়া নির্মানাধীন আরও কয়েকটি পিলার আঘাতপ্রাপ্ত হওয়া এবং কয়েকটি বাল্কহেড পানিতে ডুবে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় কালিয়া থানায় ৬টি জিডি ও মামলা চলমান রয়েছে।
জানাগেছে, জেলা শহর থেকে কালিয়া শহরের দূরত্ব প্রায় ২৫ কিঃ মিঃ। কিন্তু এ পথ যেতে সময় লাগে দু’ঘন্টা। নবগঙ্গা নদী’ কালিয়া উপজেলাকে জেলার অন্যান্য এলাকা থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে যার ফলে অসংখ্য মানুষের অফিস-আদালত, আইন-শৃংখলা রক্ষা, ফায়ার সার্ভিস, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, ব্যবসাসহ বিভিন্ন কাজে যাতায়াতে বেগ পেতে হয়। সেতটিু চালু হলে নড়াইল-যশোরের সাথে গোপালগঞ্জ, বরিশাল এবং বাগেরহাট জেলার যোগাযোগ সহজ হবে।
কালিয়া সেতু নির্মাণ কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ডেপুটি প্রজেক্ট ম্যানেজার প্রকৌশলী মিনহাজুল ইসলাম জানান, প্রথম দিকে বিভিন্ন কারনে দেরী হয়েছে। তবে এখন প্রায় ৫০-৬০জন শ্রমিক কাজ করছে। বর্তমানে পিলারের ওপর গার্ডার ও স্লাব বসানো এবং দুপাশে সংযোগ সড়কের কাজ চলছে। আগামি জুনের মধ্যে আমাদের অংশের কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি। তবে হেলে যাওয়া ৯নম্বর পিলারের নতুন নকশার বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান এই কর্মকর্তা। তবে এ পর্যন্ত মূল কাজ ও সংযোগ সড়ক মিলে ৬২ভাগ শেষ হয়েছে বলেও জানান তিনি।
নড়াইল সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আশরাফুজ্জামান বলেন, ৯ নম্বর পিলার বার বার আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ায় এটি না রেখে ৮ ও ১০ নম্বর পিলারের ওপর একটি স্টিলের স্প্যান বসবে। এজন্য ২৮ কোটি বাড়তি ব্যয় হবে। সাধারণত এ ধরনের স্টিলের স্প্যাম বিদেশ থেকে আনতে হয়। এর জন্য ন্যাশনাল টেন্ডার দিতে হবে। টেন্ডার কাজ সম্পন্ন হতে আগামি ৩ মাস লাগতে পারে।
এছাড়া সেতুর অন্যান্য পিলার যাতে পরবর্তীতে বাল্কহেড বা অন্য নৌযান দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত না হয় সেজন্য আধুনিক নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হবে। এসব কাজ শেষ করতে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে বলে জানালেন এই কর্মকর্তা।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]