নড়াইলের পাচগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ ভবন প্রতিষ্ঠার এক দশকেও নির্মিত হয়নি। প্রতিষ্ঠার এক দশকেও নির্মিত হয়নি নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পাচগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ ভবন। স্থান নির্ধারণ নিয়ে সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের মধ্যে মতপার্থক্যের কারণে থেমে আছে ভবন নির্মাণের কাজ আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়, জানান, বর্তমানে পরিষদের কাজ চলছে ৪০ বছর আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নির্মিত একটি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে।
ইউনিয়ন পরিষদের সংশ্লিষ্ট ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১১ সালে বৃহত্তর ১১ নম্বর পেড়লী ইউনিয়ন থেকে আলাদা হয়ে পাচগ্রাম ইউনিয়ন গঠিত হয়। এই ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা হচ্ছে ইউনিয়নের পাটেশ্বরী বিলের স্লুইস গেট সংলগ্ন দুই কক্ষের একটি পরিত্যক্ত ভবনে। পাউবো এই ভবনটি বিলের পানি নিষ্কাশনে স্লুইস গেট দেখভালে প্রহরীদের থাকার জন্য নির্মাণ করেছিল।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদের কাজ চালানো ওই ভবনের ছাদসহ দেয়ালের চারপাশের পলেস্তরা খসে পড়ছে। দরজা-জানালার কাঠে ঘুণ পোকা ধরেছে। ছাদের পলেস্তরা খসে পড়ে এরই মধ্যে সচিবসহ উদ্যোক্তা আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ইউনিয়ন পরিষদের কয়েকজন সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. সাইফুজ্জামান পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা না করেই গোপনে তার বসতবাড়ি সংলগ্ন ২৫ শতাংশ জমি ইউনিয়ন পরিষদের নামে লিখে দিয়ে ভবন অনুমোদনের জন্য সরকারি কার্যক্রম শুরু করেন। বিষয়টি জানতে পেরে পরিষদের সদস্যরা এর বিরোধিতা করেন। তারা নড়াইল-১ আসনের সংসদ সদস্য কবিরুল হককে তাদের আপত্তির বিষয়টি অবগত করেন। সংসদ সদস্য কবিরুল পরিষদ-সংক্রান্ত কার্যক্রম স্থগিত রেখে এলাকার জনগণের মতামতের ভিত্তিতে ইউনিয়নের মধ্যখানে পরিষদের ভবন নির্মাণের পরামর্শ দেন।
ইউপি সদস্যরা বলেন, চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান সংসদ সদস্যের আহ্বানে সাড়া না দিয়ে উচ্চ আদালতে রিটের মাধ্যমে পরিষদ ভবনের কার্যক্রম আদেশ পাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু পরে পরিষদের ১০ জন সদস্য ও স্থানীয় দুজন বিশিষ্ট ব্যক্তি মামলায় পক্ষভুক্ত হন। বিচারক সংসদ সদস্যকেও ওই মামলায় পক্ষভুক্ত করেন। সে মামলার কার্যক্রম এখনো চলমান।
পাটেশ্বরী গ্রামের হেকমত মোল্লা, রজব আলীসহ একাধিক বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিক বলছেন, পাচগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ ভবনটি ইউনিয়নের মাঝখানে হলে ভালো হয়। এতে উভয় পাশের জনগণের জন্য মঙ্গল। তাদের অভিমত, পাচগ্রাম উসমান গণি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং পাটেশ্বরী মহিষখোলা বাজারের মধ্যবর্তী পাকা রাস্তার পাশে ভবনটি করা হলে সবার জন্য সুবিধা হবে।
পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক বলেন, ‘একজন জনপ্রতিনিধির হঠকারী সিদ্ধান্তের কারণে গোটা ইউনিয়নের ২০ হাজার মানুষ পরিষদের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। শুধু জনগণই নন, পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য, সচিব, উদ্যোক্তা, গ্রাম পুলিশ সবাইকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুই কক্ষের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে।
ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, ‘২০১৫ সালে জনগণের মতামতের ভিত্তিতে স্থানীয় উসমান গণি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও পাটেশ্বরী বাজারের মধ্যবর্তী স্থানে ৩০ শতাংশ জমি পরিষদের নামে বাংলাদেশ সরকারকে লিখে দেয়া হয়েছে। ওই জায়গাটি ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণের জন্য পরিপত্র অনুযায়ী খুবই উপযোগী।’ বাস্তবতার নিরিখে ইউনিয়ন পরিষদের ভবন নির্মাণের জন্য সব প্রতিবন্ধকতা দূর করে ভবন নির্মাণের ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]