আরজি কর মেডিকেলে নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় এখনও উত্তাল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ। ধর্ষণকাণ্ডের পর কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আন্দোলন করছেন সেখানকার জুনিয়র চিকিৎসকরা। এতে করে ব্যহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। যা চরম ভোগান্তিতে ফেলেছে সাধারণ মানুষকে।
এ সমস্যা সমাধানে জুনিয়র চিকিৎসকের সঙ্গে রাজ্যের সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার বৈঠক করতে চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তবে দুই ঘণ্টা সচিবালয়ে অপেক্ষার পরও তার সঙ্গে বৈঠক করেননি চিকিৎসকরা।
এরপরই মমতা জানিয়েছেন, জনস্বার্থে তিনি পদত্যাগে রাজি আছেন। তার ক্ষমতার প্রয়োজন নেই।
মমতা বলেছেন, আমাদের সরকারকে অপমান করা হয়েছে। সাধারণ মানুষ জানে না এটিতে (আন্দোলনে) রাজনৈতিক রঙ আছে। আন্দোলনের পেছনে যারা আছে তারা বিচার চায় না। তারা চেয়ার চায়। জনগণের স্বার্থে, আমি পদত্যাগে প্রস্তুত আছি। আমি তিলোত্তমার জন্য বিচার চাই। আমি চাই সাধারণ মানুষ চিকিৎসা সেবা পাক
মমতার সঙ্গে বৈঠক করতে চিকিৎসকদের একটি দল সচিবালয়ের গেইট পর্যন্ত এসেছিল। তাদের সঙ্গে মমতার বিকাল ৫টায় বসার কথা ছিল। চিকিৎসকরা শেষ পর্যন্ত বৈঠক করেননি কারণ তারা বৈঠকের সরাসরি সম্প্রচারের যে দাবি জানিয়েছিলেন সেটি মানেনি রাজ্য সরকার।
মুখ্যমন্ত্রী মমতার দাবি, চিকিৎসকরা বাইরের শক্তির নির্দেশে চলছে। এ কারণে শেষ পর্যন্ত তারা তার সঙ্গে বৈঠক করেনি। তিনি বলেছেন, আমি জানি প্রতিনিধি দলে অনেকেই আলোচনা করতে চেয়েছিল। কিন্তু দুই-তিনজন বাইরে থেকে নির্দেশনা দিচ্ছে। আমাদের কাছে সব (তথ্য) আছে। আমরা এটি দেখতে পাচ্ছি কারণ সংবাদপত্রে এগুলোর রেকর্ড আছে। তারা নির্দেশনা দিচ্ছে আলোচনা করো না, বৈঠকে যেও না।
মমতা জানিয়েছেন যেসব চিকিৎসক আন্দোলন করছেন তাদের তিনি ক্ষমা করে দিয়েছেন। এছাড়া তিনদিন ধরে চেষ্টা করেও সমস্যা সমাধান করতে না পারায় সাধারণ মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন তিনি।
বাংলার মানুষের কাছে ক্ষমা চাইলেন মমতা
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য দুঘণ্টার বেশি সময় বসে থেকেও তাদের দেখা পাননি। পরে সাংবাদিক সম্মেলন করে বাংলার মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন মমতা।
মূলত মঙ্গলবার থেকে কলকাতায় স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ধর্নায় বসেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। পরে তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চান মুখ্যমন্ত্রী। তবে প্রথম থেকেই বৈঠকে বাসার জন্য দুটি শর্ত জুড়ে দেন চিকিৎসকরা। এই বৈঠকের সরাসরি সম্প্রচার এবং ৩০ জন প্রতিনিধি নিয়ে নবান্নে বৈঠক করতে চেয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। তবে এই দুই শর্তেই আপত্তি জানায় রাজ্য সরকার।
বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পর বৃহস্পতিবার মমতা বলেন, তিন দিনেও সমাধান করতে পারলাম না। বাংলার মানুষের কাছে ক্ষমা চাইছি। যারা নবান্নের সামনে এসেও বৈঠকে এলেন না, তাদের আমি ক্ষমা করলাম। আমাকে অনেক অসম্মান করা হয়েছে। আমার সরকারকে অসম্মান করা হয়েছে। অনেক ভুল বোঝাবুঝি, কুৎসা হয়েছে। সাধারণ মানুষ বোঝেনি। আমি পদত্যাগ করতে রাজি আছি। কিন্তু ওরা বিচার চায় না। চেয়ার চায়। আশা করি মানুষ সেটা বুঝবেন।
এদিন মমতা বলেন অনেকে (আন্দোলনকারী) বৈঠক করতে আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বাইরে থেকে নির্দেশ আসছিল। দুতিন জন রাজি হননি। আমি মানুষের কাছে ক্ষমা চাইছি। ডাক্তারদের অনুরোধ করছি, কাজে ফিরুন।
পদত্যাগ করতে রাজি আছেন জানিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেউ কেউ বিচার চান না। চান ক্ষমতার চেয়ার।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]