দীর্ঘ প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে পদ্মা সেতুকে সার্ভিস দিয়ে আসা ক্রেন ‘তিয়ান ই’ মাওয়ার কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে বিদায় নিয়েছে।
প্রমত্তা পদ্মার বুকে এই দানবাকৃতির ক্রেনটি সফলভাবে ৪১টি স্প্যান বসানোর অভিজ্ঞতা লাভ করে। ক্রেনটি বাংলাদেশে এসেছিলো চীন থেকে।
পদ্মা সেতুর ৪১টি স্প্যান বসিয়ে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া ছেড়ে গেছে চীনের ভসমান ক্রেন 'তিয়ান ই'।
উল্লেখ্য, ক্রেনটি প্রথমে মাওয়া থেকে রওনা হয়ে কিছুদিন চট্টগ্রামে অবস্থান করবে। যাত্রাপথে ক্রেনটিকে পুলিশ, কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী নিরাপত্তা প্রদান করবে। চট্টগ্রামে কাস্টমস জটিলতা শেষ করে আরেকটি বড় মাদার ভেসেলের সহযোগিতায় ক্রেনটি বাংলাদেশ ত্যাগ করবে এবং হংকং এর উদ্দেশ্যে রওনা দিবে। গন্তব্যে পৌঁছাতে ক্রেনটি সময় নিবে প্রায় ৩৫ দিন। বিষয়টি নিশ্চিত করে সেতু সূত্র।
এ সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই ক্রেনটিকে অপারেশনাল রাখতে পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষকে প্রত্যেক মাসে প্রায় ৩০ লাখ টাকা খরচ করতে হতো। বিশ্বসেরা ক্রেনটির দাম প্রায় ২,৫০০ কোটি টাকা। ক্রেনটির সক্ষমতা ৩৬০০ টনের অধিক। জানা গেছে, পদ্মা সেতুর জন্য ক্রেনটিকে বিশেষ ডিজাইনে তৈরি করা হয়েছিলো! যদিও ‘তিয়ান ই’ কে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রেনগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হিসেবে গণ্য করা হয়।
ক্রেনটির বিদায়বেলায় কর্মকর্তারা আনন্দাশ্রু দিয়ে বিদায় জানিয়েছেন যেন তার সাথে অনেক মিতালি সবার। সবাই বলছিলেন, বিদায় ‘তিয়ান ই’ তোমাক মনে রাখবে বাংলাদেশ। বাঙালিদের গর্বিত ইতিহাসের তুমিও সাক্ষী।
পদ্মা সেতুর (মূল সেতু) নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আব্দুল কাদের জানান, রোববার সকাল ১০টায় মাওয়ার কুমারভোগ কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড ছেড়ে যায় তিয়ান ই; চট্টগ্রাম হয়ে এটি সমুদ্র পথে চীনের পথ ধরবে।
সেতুর কাজে নানা ধরনের শতাধিক ক্রেন ব্যবহার হয়েছে; তিয়ান ই সবচেয়ে বড়ো ছিল বলে জানান কাদের।
পদ্মা সেতুর (মূল সেতু) নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের বলেন সেতুর কাজে ব্যবহৃত বিশ্বের বৃহত ভাসমান ক্রেনবাহী জাহাজ এটি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানির এটি। চীন থেকে আনা হয়, কাজ শেষে আবার চীনে ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
২০১৭ সালে মাওায় আসা তিয়ান ই সেই বছরেরই ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যানটি স্থাপন করে। গত ১০ ডিসেম্বর ১২ ও ১৩ নম্বর খুঁটিতে ৪১তম স্প্যান বসিয়ে বাংলাদেশের মিশন শেষ করে।
চীনে তৈরি তিন হাজার ৬০০ টন ধারণ ক্ষমতার এই ক্রেনটির দাম আড়াই হাজার কোটি টাকা বলে জানান প্রকৌশলী কাদের।
কাদের আরও জানান, রোববার সকালে ক্রেনটি চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশে মাওয়া ছেড়ে গেছে। চট্টগ্রাম বন্দরে থেকে সেটি হংকং হয়ে চীন যাবে। মাওয়া থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত ক্রেনটির যাত্রা নিরাপত্তায় থাকবেন পুলিশ, কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনীর সদস্যরা। সেখান থেকে কাস্টমস ছাড়পত্র নিয়ে হংকংয়ের উদ্দেশে রওনা হবে। চীন পৌঁছাতে এক মাসেরও বেশি সময় লাগবে।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]