বড় ভাইয়ের কাছ থেকে পাওনা টাকা ফেরত না পেয়ে বিদেশফেরত এক নারী আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল রোববার রাত ১২টার দিকে ভাইয়ের বাড়ির দরজার সামনে বিষপানে ওই নারী আত্মহত্যা করেন বলে জানিয়েছে পরিবার ও আত্মীয়স্বজন। ঘটনাটি ঘটে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মুন্সীবাজার ইউনিয়নের বাদে সোনাপুর গ্রামে।
মারা যাওয়া নারীর নাম পারুল বেগম (৩৫)। তিনি সোনাপুর গ্রামের মৃত বশির মিয়ার মেয়ে। তাঁর ১২ বছর বয়সী এক ছেলে রয়েছে। স্বামী জোনাব আলীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর ছেলে স্বামীর কাছে রেখে তিনি মধ্যপ্রাচ্যে গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে গিয়েছিলেন।
গ্রামবাসী ও পারুলের আত্মীয়স্বজন সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে সৌদি আরব যান পারুল বেগম। পরে তিনি কাতার ও সবশেষ ওমানে ছিলেন। মায়ের অসুস্থতার খবর পেয়ে তিনি সম্প্রতি দেশে আসেন। প্রবাসে থাকার সময় পারুল বেগম তাঁর উপার্জনের টাকা ভাই বাছিত মিয়ার কাছে পাঠাতেন। টাকার পরিমাণ লাখের ওপরে। দেশে ফেরার পর ভাইয়ের কাছে টাকা ফেরত চান পারুল। কিন্তু ভাই টাকা ফেরত না দিয়ে উল্টো নির্যাতন করতেন জানিয়ে পারুল বেগম নিকট আত্মীয়দের কাছে বিচার চেয়েছিলেন।
স্বজনেরা জানান, ঈদের সময় কেনাকাটার জন্য ভাইয়ের কাছে টাকা চেয়ে পাননি পারুল। এ অভিমানে ঈদের পরদিন গতকাল রাতে ভাইয়ের বসতঘরের দরজার সামনে বিষপান করেন। পারুলকে উদ্ধার করে রাতেই কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) শাহ আলমের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল থেকে পারুলের লাশ উদ্ধার করে। ৩আগস্ট সোমবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
পারুল বেগমের এক আত্মীয় নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পারুলের টাকা বড় ভাই বাছিত আত্মসাৎ করেছেন। টাকা ফেরত চাইতে গেলে তাঁকে নানাভাবে নির্যাতন করা হতো। এসব ঘটনার বিচার চেয়ে প্রতিকার না পেয়ে অভিমানে পারুল আত্মহত্যা করেছেন।
অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পারুলের বড় ভাই বাছিত মিয়া। তিনি বলেন, ‘পারুল বিষপানে আত্মহত্যা করেছে, এটা সত্য। তবে তার টাকা আমি আত্মসাৎ করিনি। পারুল মানসিক ভারসাম্যহীন ছিল।’
কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুর রহমান বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য পারুলের লাশ মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাঁর মৃত্যু নিয়ে অনেক গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। তদন্তের সময় এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।
সুত্র প্রথম আলো
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]