কলারোয়া প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা অঞ্চলে সীমাহীন নিম্নচাপের বৃষ্টিতে থাকার একমাত্র আবাসস্থল সখের ঘরটি ধ্বসে ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে। নষ্ট হয়ে গেছে ঘরের আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র। চোখের সামনে এমন দৃশ্য দেখে কান্নায় যেন থামছে না ছোট শিশু মারিয়ামের। আবেগ ঝরানো নানান প্রশ্ন তার মুখে! এখন ছোট্ট ভাই বাবা মা’কে নিয়ে কোথায় থাকবে সে ? শিশুর কান্নায় যেন এলাকা ভারী হয়ে উঠেছে এই দৃশ্য দেখতে এলাকার মানুষ ঘটনাস্থরে ভিড় করে রয়েছে।
সোমবার ( ১৬ সেপ্টেম্বর ) সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের দিগং গ্রামের বদ্দিপাড়ায় এমন দৃশ্য দেখা যায়। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় মাটির তৈরি টালি গুলো চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে পড়ে রয়েছে ইট আর সিমেন্টের গাঁথুনি দেয়া দেয়াল ভেঙ্গে মাটির সাথে মিশে রয়েছে কোনোভাবেই এই ঘরটি বসবাস করা উপযোগী নয়। ভেঙ্গে যাওয়া এই ঘরের লোনের টাকা এখনো পরিশোধ হয়নি চারিদিকের দুশ্চিন্তায় ঘরের মালিক রানাসহ তার স্ত্রী দুই সন্তান নিকট আত্মীয় কান্নায় ভেঙে রয়েছে কারণ এমন আরেকটি ঘর বানানোর অর্থনৈতিক সক্ষমতা নেই।
দিগংসহ পার্শ্ববর্তী বেশ কয়েকটা গ্রামের পানির চাপে রাস্তার মধ্যখান দিয়ে ভেঙ্গে বাড়ির নিচে অনেক গর্ত হয়ে গেছে আর সেখানেই ধ্বসে ভেঙ্গে যাওয়া বাড়িটি দিগং বদ্দিপাড়া এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে রানার।
গত ছয় মাস আগে বাড়ির গাঁথুনির কাজ শেষ হয়েছে। এখনো লোনের টাকা পরিশোধ হয়নি অন্যদিকে অত্যাধিক পরিমাণ নিম্নচাপের বৃষ্টিতে তার আয়ের উৎস তিনটি ঘেরের প্রায় ৫ লক্ষ টাকার মাছ ভেসে গিয়ে ক্ষতি হয়েছে। সব হারিয়ে যেন নিঃস্ব এমন কথা জানিয়েছে বাড়ির মালিক রানা।
রানার স্ত্রী সোনিয়া খাতুন বলেন, একদিকে স্বামীর আয়ের অবলম্বন মাছের ঘের পানিতে ভেসে গেছে অন্যদিকে থাকার একমাত্র জায়গা ঘরটি ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে । এখন দুই সন্তান ও স্বামী নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছি । সকলে যদি সহযোগিতা করে তাহলে হয়তো মাথা গোজার একটা ঠাই পেতাম তা না হলে অনেক দুর্বিসহ জীবন যাপন করতে হবে আমাদের।
বুকফাটা আর্তনাদ করতে করতে রানার মেয়ে মারিয়াম খাতুন বলেন, আমরা এখন কোথায় থাকবো যেখানে খেলা করতাম ঘুমাতাম সবকিছু এখন পানিতে তলিয়ে ভেঙ্গে নষ্ট হয়ে গেছে আমাদের থাকার যে আর কোন জায়গা থাকল না।
দিগং জামে মসজিদের ইমাম জিল্লুর রহমান বলেন, আল্লাহর অনেক বড় পরীক্ষা রানার পরিবারের ওপর দিয়ে যাচ্ছে কারণ তার ঘর ভেঙ্গে নষ্ট হয়ে বসবাসের অযোগ্য হয়ে গেছে অন্যদিকে তার আয়ের উৎস নষ্ট হয়ে গেছে এখন পরিবার নিয়ে থাকবে এমন মাথা গোজার খায় তার নেই এজন্য সকলে যদি সহযোগিতা করে অবশ্যই সে মাথা গোজার ঠাই পাবে এবং তার স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারবে। অন্যদিকে ভেঙ্গে যাওয়ার রাস্তাটাও দ্রুত মেরামত দরকার তা না হলে এলাকার মানুষ ব্যাপক ভোগান্তি পোহাচ্ছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, রাস্তাটা অল্প ভাঙ্গা থাকাকালীন সংস্কারের জন্য মিস্ত্রি নিয়ে কাজ শুরু করলে সেই মুহূর্তে বৃষ্টি শুরু হয় বৃষ্টির কারণে সংস্কার কাজ বন্ধ ছিল। সম্প্রতি প্রাকৃতিক দুর্যোগে রাস্তাটা ভেঙে গেছে এবং রানার বাড়িটাও ধ্বসে নষ্ট হয়ে গেছে। চেয়ারম্যান সাহেব অসুস্থ রয়েছে তার পরেও তিনি বারবার খোঁজ নিয়েছেন তিনি সুস্থ হয়ে এলাকায় ফিরলে এবং বৃষ্টি থামলেই রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হবে এবং রানার আমরা যথাসম্ভব সহযোগিতা করার চেষ্টা করব তারপরেও এলাকার মানুষজন যারা রয়েছে এবং প্রবাসী ভাই বা বিত্তবান যারা রয়েছেন সকলে যদি সহযোগিতা করে তাহলে রানা অবশ্যই তার একটা থাকার আশ্রয় পাবে এবং অর্থনৈতিক কোন দুশ্চিন্তাই তার দিন যাপন করতে হবে না।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]