নির্মম নির্যাতনের কথা বর্ণনা করতে গিয়ে কাঁদলেন তিনি। কান্নাজড়িত কণ্ঠে বারবার তার একটাই প্রশ্ন, কী আমার অপরাধ ছিল যে, মধ্যযুগীয় কায়দায় এমন পৈশাচিক নির্যাতন করা হয়েছে। সে নির্যাতনের কথা মনে হলে আমি এখনো আঁতকে উঠি। আমি নিরীহ মানুষের পক্ষে কলম ধরেছিলাম। আমি অন্যায় ও জুলুমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলাম। এটাই কী আমার অপরাধ। দ্য কারামুক্ত সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা খান কক্সবাজার সদর হাসপাতালের কেবিনে বসে সাংবাদিকদেরএভাবেই নির্মম নির্যাতনের বর্ণনা দিয়েছিলেন। তার ওপর নির্যাতনের কথা শুনে এ সময় কেবিনের আশপাশের অনেকেই চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি।
ফরিদুল মোস্তফা খান বলেন, আজ থেকে সাড়ে ১১ মাস আগে টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও কক্সবাজার সদর মডেল থানার সাবেক ওসি ফরিদ উদ্দিন খন্দকার মিলে আমার ওপর পালাক্রমে নির্যাতন করেন। আমার চোখে মরিচের গুঁড়া দিয়েছিলেন।এরপর টেকনাফ থানায় নিয়ে আমাকে পানির পরিবর্তে প্রস্রাব ও ময়লা-আবর্জনা খাওয়ালেন ওসি প্রদীপ। শুধু তাই নয়, আমার গ্রামের বাড়ি হোয়াক্ষ্যং ও কক্সবাজারের বাসা বাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছিলেন।
আপনার অপরাধ কী ছিল- এ প্রশ্নের জবাবে ফরিদুল বলেন, আমি দুর্নীতিবাজ ওসি-এসপির বিরুদ্ধে একাধিক রিপোর্ট করেছি। নিরপরাধ লোককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে ক্রসফায়ারের নামে হত্যা করা হচ্ছিল, আমি এর প্রতিবাদ করেছি। আমি নিরীহ মানুষের আহাজারি তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলাম এটাই আমার অপরাধ।
গভীর রাতে আমাকে চার-পাঁচবার হত্যার উদ্দেশে হাত-পা বেঁধে মেরিন ড্রাইভ সড়ক ও কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের নির্জন কবিতা চত্বরে নিয়ে গিয়েছিলেন। আল্লাহর অশেষ দয়ায়, আমি মরতে মরতে বেঁচে গেছি।
কয়টি মামলা দেয়া হয়েছে- উত্তরে মোস্তফা বলেন, কক্সবাজার সদর মডেল থানায় অস্ত্র, মাদক, ইয়াবাসহ তিনটি মামলা দেয়া হয়েছে। আর অপর তিনটি মামলা দিয়েছিল প্রদীপের চিহ্নিত অস্ত্র ও মাদক ব্যবসায়ী তিনজনকে বাদী করে অনুরূপ বানোয়াট ঘটনা ও কাহিনী বানিয়ে। একে একে সবগুলো মামলা থেকে আমি হাইকোর্ট থেকে জামিনে মুক্ত হলেও এখনো উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে। কারণ প্রদীপ জেলে থাকলেও তার অসংখ্য সহচর এখনো বাইরে রয়েছেন। ফলে নিজের ও আমার পরিবার নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]