পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার সাফা ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বিনয় কৃষ্ণ বলের ওপর অতর্কিত হামলা ও লাঞ্ছিত করার ঘটনায় মঠবাড়িয়া থানায় মামলা হয়েছে।
মামলার একমাত্র আসামী অফিস সহকারী ফরিদা ইয়াসমিন ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছে।
এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও আসামীকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২১ আগস্ট) সকাল ১১টায় পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার মহিউদ্দিন আহমেদ মহিলা ডিগ্রি কলেজের অডিটোরিয়ামে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মঠবাড়িয়া উপজেলার সর্বস্তরের শিক্ষকবৃন্দের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মহিউদ্দিন আহমেদ মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আজিম উল হক।
সংবা সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, বেপরোয়া অফিস সহকারী ফরিদা ইয়াসমিনের কর্মকান্ডে সারা দেশের গোটা শিক্ষক সমাজ বিস্মিত হয়েছে। এই ঘটনা পুরো শিক্ষক সমাজের ওপর হামলার শামিল। তার এ ন্যাক্কারজনক কর্মকান্ডের শাস্তিস্বরূপ চাকরিচ্যুত করতে হবে। পাশাপাশি আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত ফরিদা ইয়াসমিনকে দ্রুত গ্রেপ্তার না করলে সংক্ষুব্ধ শিক্ষক ও ছাত্র সমাজ লাগাতার কর্মসূচি নিয়ে রাস্তায় নামতে বাধ্য হবে।
এদিকে ১৮ আগস্ট মঠবাড়িয়া সরকারী কলেজের কর্মকর্তা পরিষদের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় গত ১৬ আগস্ট সাফা ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বিনয় কৃষ্ণ বল অফিস সহকারীর হাতে লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করা হয় এবং উক্ত ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্হা গ্রহনের জন্য দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়।
শনিবার খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অভিযুক্ত অফিস সহকারী ফরিদা ইয়াসমিনকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে রেজুলেশনপূর্বক প্রাথমিক এ শাস্তিমূলক ব্যবস্হা নিয়েছে।
ঘটনার পর থেকে ভারপ্রাপ্ত ওই অধ্যক্ষ মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। লোক লজ্জার ভয়ে মানুষের সামনে মুখ দেখাতে পারছেন না তিনি। এখনও আসামী গ্রেপ্তার না হওয়ায় অনেকটা হতাশ ওই অধ্যক্ষ ও তার পরিবার।
আসামী দ্রুত গ্রেপ্তারের ব্যাপারে মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মুহা নূরুল ইসলাম বাদলকে ফোন দিয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায় নি।
জানা গেছে, অফিস সহকারী ফরিদা ইয়াসমিনকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে মঠবাড়িয়া উপজেলার শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ। এরমধ্যে গ্রেপ্তার না হলে মঙ্গলবার থেকে লাগাতার কর্মসূচি নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনে নামারও ঘোষণা দেন তারা।
উল্লেখ্য, গত ১৬ আগস্ট সাফা ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বিনয় কৃষ্ণ বল অফিস সহকারী ফরিদা ইয়াসমিনকে জাতীয় শোক দিবসে কলেজে না আসার কারন জানতে চান এবং এসাইনমেন্ট জমা দেওয়া শিক্ষার্থীদের নাম রেজিস্ট্রার খাতায় অন্তর্ভুক্ত করতে বলেন। এতে ওই অফিস সহকারী ক্ষিপ্ত হয়ে হঠাৎ পায়ের জুতা খুলেই পিটানো শুরু করেন। ওই অফিস কক্ষে এ সময় কলেজের ২ জন স্টাফ ও ১০/১২ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল। উপস্থিত শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষকে উদ্ধার করে। বার্তা বাজারে সর্ব প্রথম সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর দেশের অধিকাংশ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিকস মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হলে ঘটনাটি ভাইরাল হয়।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]