পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় ৫ দিনের টানা বর্ষনে এতদনঞ্চের মানুষের কৃষির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে । জীবন জীবিকা বন্ধ থাকায় অর্থ সংকটে দিশাহারা হয়ে পড়েছে কৃষক ও কর্মজীবী নারী পুরুষ। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘু চাপের কারনে আরও কয়েকদিন এ বৃষ্টি থাকতে পারে বলে ধারনা করেছেন আবহাওয়া অফিস।
মঠবাড়িয়া বঙ্গোপসাগরের উপকূলে থাকায় বারবার লঘুচাপের শিকার হতে হয় এ উপকূল বাসীর। প্রতিবছর কৃষকদের প্রায় এক হাজার কোটি টাকার ক্ষতিসাধন হয়।
কার্তিক মাসের ৩ তারিখেও কৃষকের মাঠে গলা সমান পানি। বৃষ্টির পানির সাথে সাথে চাপ বেড়েছে জোয়ারের পানিরও।পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে পেঁপে চারা, টমেটো চারা,মরিচ চারা, কপি চারা,লাউ গাছ, লাল শাক, পালং শাক ইত্যাদি শীতকালীন শস্য।
এ বছর দু'একটি কৃষক পরিবার বাজারে মূলা নিয়ে আসলেও কেজি প্রতি মূল্য ৩০ টাকা থেকে ৪০ টাকা। লাল শাকের আটি ২০ টাকা। নতুন আর কোন সবজি বাজারে উঠাতে পারেনি তারা।তার আগেই অতিবৃষ্টিতে সব শেষ।
স্হানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও দোকানদাররা খরিদদারের অভাবে দোকান বন্ধ রেখেছে। কেউকেউ এনজিও'র কিস্তি পরিশোধ করতে পোষা হাস মুরগি ও ছাগল সস্তায় বিক্রি করে দিচ্ছেন।
করোনা সংকট কাটতে না কাটতেই একের পর এক প্রতিকূল আবহাওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। জলবায়ু মোকাবেলায় সাগর উপকূলের মঠবাড়িয়াকে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় নিয়ে প্রতিটি পরিবারকে জলবায়ু প্রনোদনার আওতায় নিয়ে আসা প্রয়োজন।
বারবার টানা বৃষ্টি ও জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপকূলবাসীকে দেশের ঝুঁকিমুক্ত অঞ্চলে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে সরকারের পরিকল্পনা নেওয়া উচিত। বর্তমানে এ অঞ্চলের মানুষের জীবন মান আগের চেয়ে অনেক অবনতি হয়েছে।
মধ্য সোনাখালী গ্রামের কৃষক শাহিন মোল্লা জানান, টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতায় ফুল ও ফল ধরা ৫০টি লাউ গাছ মারা গেছে।
টানা বর্ষনে বিদ্যুৎ না থাকায় আদ্র আবহাওয়া ও শ্যাতশ্যাতে পরিবেশে খামারের ব্রয়লার মুরগির ক্ষতি হয়েছে।
পান চাষীদের পানের বরজ নষ্ট হয়ে গেছে। পানের পাতা হলুদ হয়ে গেছে। বাজারে উঠানোর সময় এভাবে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষকরা।
কৃষি শিক্ষক অসিম কুমার জানান, শীতকালীন শাক সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পানের বরজ, ধান ক্ষেত, মাছের ঘের ক্ষতির পাশাপাশি গবাদিপশুর খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।
মঠবাড়িয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শওকত হোসেন জানান, ১৫ অক্টোবর থেকে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত মঠবাড়িয়ায় টানা বর্ষনে কৃষির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির তথ্য সংগ্রহ করে তালিকা করে সংশ্লিষ্ট অফিসে পাঠানো হবে।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]