পৌরসভায় প্রশাসক নিয়োগের বিধান নিয়ে সংসদে ক্ষোভ, হারুনের ওয়াকআউট
পৌরসভায় প্রশাসক নিয়োগের বিধান নিয়ে জাতীয় সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও বিএনপির সংসদ সদস্যরা। এর বিরোধিতা করে তারা বলেছেন— এই বিধান অসাংবিধানিক। তবে তাদের বিরোধিতার মুখে মেয়াদোত্তীর্ণ পৌরসভায় সরকারি কর্মকর্তা বা উপযুক্ত ব্যক্তিকে প্রশাসক নিয়োগের বিধান রেখেই পৌরসভা আইনের সংশোধনী জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে।
এতে সরকারের দেওয়া নির্দেশ পালনে ব্যর্থ হলে পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলরদের অপসারণের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিএনপির সংসদ সদস্য হারুন অর রশীদের ওয়াকআউটের মধ্য দিয়ে স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইনের সংশোধনী পাস হয়। বিল পাসের আলোচনায় অংশ নিয়ে হারুন প্রশাসক নিয়োগের কারণ, সরকারের কোন কোন নির্দেশ পালন করতে হবে— এ বিষয়গুলোর স্পষ্ট ব্যাখ্যা দাবি করেন। তিনি বলেন, এসবের ব্যাখ্যা না পেলে তিনি ওয়াকআউট করবেন। পরে বিলটি পাসের সময় তিনি সংসদকক্ষ থেকে ওয়াকআউট করেন।
এর আগে হারুন বলেন, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা এখন আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মসূচি পালন করছেন। জনগণকে সেখানে অংশ নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। ভিন্নমতের কেউ সেখানে না গেলে তাদের সরিয়ে দেওয়া হবে, এই উদ্দেশেই এ আইন করা হচ্ছে। সরকারের কোন কোন নির্দেশ পালন করতে হবে, তা আইনে স্পষ্ট করার দাবি জানান তিনি।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেন, যেখানে নির্বাচিত প্রতিনিধি থাকার কথা, সেখানে অনির্বাচিত কেউ বসতে পারবেন না। এটা সংবিধানের চেতনা। তত্ত্বাবধায়ক সরকার অনির্বাচিত বিধায় এটি বাদ দেওয়া হয়েছে। সেখানে কেন স্থানীয় সরকারে অনির্বাচিত ব্যক্তিকে বসানো হবে, এই প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, এটি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
জাতীয় পার্টির আরেক এমপি শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, সংবিধানে বলা হয়েছে নির্বাচিত ব্যক্তিদের দ্বারা স্থানীয় সরকার পরিচালিত হবে। প্রশাসক নিয়োগের বিধান সংবিধানের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ। নতুন পৌরসভা গঠনের পর প্রথমবার নির্বাচনের আগে একজন প্রশাসক নিয়োগ করা যেতে পারে, সেটা জরুরি প্রয়োজনে। কিন্তু চলমান পৌরসভায় এটা করা ঠিক হবে না।
বিরোধী দলের সদস্যদের বক্তব্যের জবাবে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, প্রশাসক নিয়োগের বিধান রাখার বিষয়টি যৌক্তিক। বিভিন্ন কারণে অনেক সময় নির্বাচন করা নিয়ে আইনগত জটিলতা তৈরি হয়। অনেকে এর সুযোগ নিয়ে থাকেন।
বিদ্যমান আইনে নতুন পৌরসভা গঠনের পর প্রশাসক বসানোর সুযোগ ছিল। নতুন আইনে মেয়াদোত্তীর্ণ পৌরসভায় প্রশাসক বসানো এবং সরকার চাইলে যে কোনো ব্যক্তিকে এই পদে নিয়োগ দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে।
ধারায় পরিবর্তন এনে বলা হয়েছে, পৌরসভার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নতুন পরিষদ গঠনের আগ পর্যন্ত কাজ চালানোর জন্য প্রশাসক নিয়োগ দেবে সরকার। সরকারি কোনো কর্মকর্তা বা সরকার উপযুক্ত মনে করে এমন কোনো ব্যক্তিকে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া যাবে।
বিলে পৌরসভার পরিষদ বাতিলসংক্রান্ত ধারায় নতুন বিধান যুক্ত করা হয়েছে। বলা হয়েছে, যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একাদিক্রমে ১২ মাস বেতন বকেয়া থাকলে পরিষদ বাতিল হবে।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)