বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রথমবারের মতো সরকার তিন কৃষি পণ্যের দাম বেঁধে দিয়েছে। সেগুলো হলো আলু, দেশী পেঁয়াজ ও ডিম। বেঁধে দেয়া দাম অনুযায়ী, এখন থেকে প্রতিটি ফার্মের ডিম ১২ টাকা, আলু খুচরা পর্যায়ে ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা এবং দেশী পেঁয়াজের দাম হবে ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনিশি এই দাম ঘোষণা করে বলেন, নির্ধারিত দামে এসব পণ্য বিক্রি হচ্ছে কিনা তা মনিটরিংয়ের জন্য জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এবং কৃষি ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা মাঠে কাজ করবেন। কেউ এর ব্যতয় করলে আইন অনুযায়ী দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।
নিত্য প্রয়োজনীয় কৃষি পণ্যের উৎপাদন, চাহিদা ও মূল্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা সভার সিদ্ধান্তসমূহ অবগতির লক্ষ্যে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের আলোকে আলুর সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৩৫-৩৬ টাকা, দেশী পেঁয়াজের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৬৪-৬৫ টাকা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিটি ডিমের মূল্য ১২ টাকা নির্ধারিত করা হয়েছে।
এছাড়া, প্যাকেটজাত সোয়াবিন ও খোলা সোয়াবিন তেলের দাম ৫ টাকা কমিয়ে যথাক্রমে ১৬৯ ও ১৪৯ টাকা এবং পামওয়েলের দাম ৪ টাকা কমিয়ে ১২৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
টিপু মুনশি জানান, উৎপাদক, পাইকারী এবং খুচরা পর্যায়ের খরচ ও মুনাফা বিবেচনায় নিয়ে এসব পণ্যের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এখানে কারো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সুযোগ নেই। যদি কেউ বেশি মুনাফার জন্য অবৈধভাবে পণ্য মজুদ রাখে তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, ডিমের যে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে এবং বাজারে যদি সেই দামে বিক্রি না হয়, তাহলে আমরা ডিম আমদানির অনুমতি দিবো। প্রথমে সীমিত আকারে অনুমতি দেয়া হবে। এরপরও যদি দাম না নিয়ন্ত্রণে থাকে তাহলে ব্যাপক আকারে আমদানি করা হবে। ডিম আমদানির জন্য মন্ত্রণালয়ে বেশ কিছু আবেদন এসেছে বলে জানান তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর আজ থেকে অভিযান শুরু করবে। এছাড়া সকল জেলা প্রশাসক এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের বিভাগ ও জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হবে নির্ধারিত মূল্যে পণ্য বিক্রির জন্য। দেশের সর্বত্র মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে এবং আইন অনুযায়ী শাস্তি দেয়া হবে।
ভারতে ইলিশ রপ্তানির বিষয়ে সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের উত্তরে টিপু মুনশি জানান, সারা বছর ভারতে ইলিশ রপ্তানি করা হয় না। পূজা উপলক্ষে ভারতীয় বাঙালিদের জন্য শুভেচ্ছা উপহার হিসেবে দেশে যা উৎপাদন হয় তার সামান্য পরিমাণ রপ্তানি করা হয়। কি পরিমাণ রপ্তানি করা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন চার থেকে পাঁচ হাজার টনের বেশি নয়।
সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার, ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশন এবং ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সৌজন্যে: বাসস
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]