বাগেরহাট জেলার জনবহুল এলাকা ফকিরহাট উপজেলা। এ উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারের ফার্ম্মেসি গুলোতে ভেজাল ও নিম্নমানের ঔষধ বিক্রি আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে ঐ নিম্নমানের ঔষধে দখল হয়ে গ্রামের ঔষধের দোকানেও বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন হাট-বাজর নাম সবস্ব কোম্পানির নিম্ন মানের ঔষুধের কারনে আর্ন্তজাতিক মানের কোম্পানিগুলোর ভাবমুর্ত্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ব্যাপক জনবহুল ফকিরহাট উপজেলাতে ফার্মেসি, প্রাইভেট ক্লিনিকের চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে এলাকাবাসি। এমনকি উপজেলার স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতেও চলছে নানা অনিয়ম।
সূত্রে জানা যায়, অধিক মুনাফার লোভে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ধরনের নিম্ন মানের ট্যাবলেট, সিরাপ, নেশা জাতীয় দ্রব্য, যৌন উত্তেজক ও গর্ভপাত ঘটানোর ওষুধ মেয়াদাত্তীর্ণ ভেজাল ওষুধ বিক্রি করচ্ছে অহরহ। এ ক্ষেত্রে কোন অভিজ্ঞ ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র দরকার হয় না।
দেশে হাতে গোনা কয়েকটি আর্ন্তজাতিক মান সম্পন্ন ওষুধ উৎপাদন কারি প্রতিষ্ঠান থাকলেও অধিক মুনাফার লোভে ফার্ম্মেসি গুলো নাম সর্বস্ব কোম্পানির ঔষধ বিক্রয় করছে। এগুলো নিম্নমানের এবং আর্কষণীয় মোড়কে বাজারজাত করা হয় বলে ভুক্তাভুগী মহল দাবি করেছে। কেননা প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিগুলোর ওষুধ বিক্রয় করে শতকরা ১২% এবং নাম সবস্ব ওষুধ কোম্পানির ওষুধ বিক্রি করে ৫০% পর্যন্ত লাভ পেয়ে থাকে। যে কারনে ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের হাতে তুলে দিচ্ছে নিম্ন মানের ওষুধ।
অনেক সময় ক্রেতারা বা রোগিরা ব্যবস্থাপত্র নিয়ে ফার্মেসিতে গেলে ওই সব নিম্ন মানের ওষধ ক্রেতার হাতে তুলে দেয় এবং ক্রেতাকে বলে ওষুধ ঠিকই আছে, শুধু নাম কোম্পানি আলাদা, কাজ ঠিকই করবে। অথচ এতে রোগির উপকারের চেয়ে ক্ষতির পরিমান বেশি। কোন কোন সময় মানুষের শরীরের দুর্বলতাকে পুঁজি করে কোনও রকম ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই বিক্রি হচ্ছে নিম্ন মানের আকর্ষণীয় মোড়কের ওষুধে। এসব প্যাকেটের গায়ে বিভিন্ন ফল-ফলাদিও ছবি দিয়ে আকর্ষনীয়মোড়কে করায় বেশীর ভাগ ক্রেতারা আকৃষ্ট হয়।অথচ এ গুলো সেবন করে নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে সেবনকারিরা।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একাধীক ফার্মেসীর মালিকগন এ প্রতিবেদককে জানান - এধরনের নিম্ন মানের ঔষধে কোন উপকারীতা নাই বললে চলে যেহেতু প্রেসক্রিপশনে লেখা থাকে তাই আমাদের বিক্রি করতে হয়। এতে করে আর্থিক বা শারিরীক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে ভুক্তভুগীরা।
ফকিরহাট ফার্মেস সমিতি ও দোকান মালিকগন জানান- চিকিৎসকরা যদি নিম্নমানের ঔষধ প্রেসক্রিপশনে না লিখে তাহলে আমাদের বিক্রি করার কোন প্রশ্নই ওঠে না। আর এধরনের ঔষধে তেমন কোন উপকারীতা নাই। বিশেষ করে চিকিৎসকরা রুগীর প্রেসক্রিপশনে লেখা বন্ধ করলে তো কোন ঝামেলা থাকেনা।
এ বিষয়ে ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অসীম কুমার সমাদ্দার জানান- আমাদের নকল ঔষধ বা নিম্নমানের ঔষধ বন্ধ করতে বাজার মনিটারিং এর কোন সুযোগ নাই। তবে এ ধরনের সুযোগ থাকলে প্রতি মাসে একবার মনিটারিং করলে হয়তো প্রতিরোধ করা সম্ভব। চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনে নিম্নমানের ঔষধ কেন লিখেন সে বিষয়ে তিনি বলেন আমার উপজেলায় চিকিৎসকরা সরকারি লাইসেন্সকৃত যে সকল ঔষধ বাজারে পাওয়া যায় সেগুলোই লিখবে যদি অবৈধ ভাবে নিম্নমানের ঔষধ রুগীর জন্য লিখেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
গ্রামীন জনপদের সাধারন মানুষ এগুলো সেবন করিয়ে ক্রমেই মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে এসব অসাধু চিকিৎসক ও ব্যবসায়ী । উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ দ্রত এদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া একান্ত জরুরী।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]