টানা ভারী বৃষ্টিপাত ও ভারতের উজানের পানির চাপে ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অন্তত ১৪টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফলে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজারো মানুষ। তলিয়ে গেছে গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো, ব্যাহত হচ্ছে যানবাহন চলাচল।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মুহুরী নদীর পরশুরাম উপজেলার জঙ্গলঘোনায় দুটি, অলকায় তিনটি ও শালধরে একটি এবং ফুলগাজীর উত্তর শ্রীপুরে একটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সিলোনিয়া নদীর গদানগর ও দেড়পড়া এলাকায় তিনটি এবং কহুয়া নদীর সাতকুচিয়া, বেড়াবাড়িয়া ও দৌলতপুরে আরও চারটি ভাঙন হয়েছে।
ফুলগাজীর বাসিন্দা মাসুদুর রহমান বলেন, বৃষ্টি কমলেও নদীর পানি কমেনি। বাঁধ ভাঙা জায়গা দিয়ে এখনো পানি ঢুকছে। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। নেটওয়ার্কও প্রায় বন্ধ, আগের অভিজ্ঞতা থেকেও প্রশাসন শিক্ষা নেয়নি।
পরশুরামের তুলাতলী এলাকার বাসিন্দা আরিফ হোসেন জানান, গতকাল সন্ধ্যা থেকে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকে। অনেক এলাকায় হাঁটু থেকে কোমরসমান পানি। রাস্তাঘাট ডুবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। ত্রাণের নামে এখনো কিছু পাইনি।
এদিকে, ফেনী শহরের জলাবদ্ধতা কিছুটা কমলেও ড্রেনেজ ব্যবস্থা দুর্বল থাকায় দুর্ভোগ শেষ হয়নি। একাডেমি এলাকার বাসিন্দা তোফায়েল নিলয় বলেন, অল্প বৃষ্টি হলেও ড্রেনেজ না থাকায় পানি জমে থাকে। দখলদারদের উচ্ছেদ ও খাল খনন ছাড়া সমাধান সম্ভব না।
পরশুরাম উপজেলার ইউএনও আরিফুর রহমান জানান, রাত থেকে নতুন করে কোনো ভাঙন হয়নি। আমরা দুর্গত এলাকায় তৎপর রয়েছি।
ফেনী আবহাওয়া অফিস জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় (মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত) জেলায় ৩০৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। যা এই মৌসুমের সর্বোচ্চ। আগামীকালও হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তার হোসেন মজুমদার বলেন, এখন পর্যন্ত ১১টি ভাঙনের খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। পানির উচ্চতা এখনও বিপৎসীমার ৯৫ সেন্টিমিটার ওপরে রয়েছে। তবে মধ্যরাত থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। উজানে বৃষ্টি বন্ধ থাকলে ভাঙন রোধ করা সহজ হবে।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]