দফায় দফায় বাড়তে নিত্যপ্রয়োজনীয় সকল পণ্যের দাম। ফলে বাজারে পণ্য কিনতে যেয়ে নিরবে কাঁদছে মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ অঞ্চলের অল্প আয়ের সাধারণ মানুষ। নিত্যপ্রয়োজনীয় মুদি দোকানের কোনো পণ্যের দাম এখন আর আগের দামে নেই। প্রতিদনই কোনো না কোনো পণ্যের দাম বাড়ছে। কিন্তু বাড়ছে না অল্প আয়ের সাধারণ মানুষের আয়। যে কারণে নির্ধারিত আয়ে সংসার চালাতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে অল্প আয়ের মানুষ। এই শ্রেণির মানুষেরা বাজারে যেয়ে পণ্যের বাড়তি দাম শুনে, পণ্য কিনতে না পেরে চরম হতাশ হয়ে পড়ছেন। পারছে না চাহিদা মত পণ্য কিনতে। কাছে থাকা টাকায় যে পণ্য কিনছে তাতে সংসারের চাহিদা মিটছে না। অত্যান্ত কষ্টে জীবন-যাপন করতে হচ্ছে অল্প আয়ের মানুষের।
মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর-২০২১) রাজগঞ্জ বাজারে কথা হয় একজন অল্প আয়ের মানুষের সাথে। তিনি একটা প্রতিষ্ঠানে প্রতিমাসে ৫ হাজার টাকা বেতনে অস্থায়ীভিত্তিক কাজ করেন। তার সংসারে স্ত্রী ও দুই ছেলে-মেয়ে রয়েছে। তিনি বলেন- বর্তমান বাজারে পণ্যের দাম আকাশ ছোয়া। আয়ের নির্ধারিত টাকায় সংসার আর চলে না। শুধু হাহুতাশ করা ছাড়া আর কিছুই নেই। ঠিকমত ছেলে-মেয়েদের খাবার দিতে পারছিনা। ঠিকমত সংসারের চাহিদা মেটাতে পারছিনা। কি যে একটা অবস্থা ? বাজারে পণ্যের দাম শুনলেই মাথা ঘোরাই। খোঁজখবর নিয়ে জানাগেছে রাজগঞ্জ অঞ্চলে এরকম বহু অল্প আয়ের পরিবার বর্তমান ঊর্ধ্বগতির বাজারে পণ্য কিনতে যেয়ে নিরবে কাঁদছেন। দেখাগেছে- অল্প আয়ের সাধারণ মানুষেরা মুদি দোকানে পণ্য কিনতে যেয়ে দোকানিদের সাথে দাম নিয়ে কথা কাটাকাটিও করছে। কোনো পণ্যেই ছাড় পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ।
রাজগঞ্জ বাজারের এক মুদি ব্যবসায়ী এপ্রতিনিধিকে বলেন- বর্তমান বাজারে তেল, চিনি, ডালসহ সকল পণ্যের দাম হু হু করে বাড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে আরো দাম বাড়বে। এদিকে- সবজির বাজারেও দাম চড়া। শুধু মাত্র আলুর দাম কম রয়েছে। তাছাড়া সকল সবজির দাম বাড়তি। পেঁয়াজ, কাঁচাঝাল ও নতুন বাজারে উঠা শীতকালিন সবজির গায়ে যেনো আগুন জ্বলছে। ৩০ টাকা প্রতিকেজি দরের পেঁয়াজ এখন ৭৫/৮০ টাকা আর ৪০ টাকা প্রতিকেজি দরের কাঁচাঝাল এখন ১২০/১৬০ টাকা প্রতিকেজি। মাছের দামও আকাশ ছোয়া। খাশির মাংস প্রতিকেজি ৮০০ টাকা, গরুর মাংস প্রতিকেজি ৫৫০ টাকা, দেশী মুরগী প্রতিকেজি ৪০০ টাকা, সোনালী মুরগী প্রতিকেজি ৩০০ টাকা, কক মুরগী ৩০০ টাকা প্রতিকেজি ও পোল্ট্রি মুরগী প্রতিকেজি ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আবু শাহিন নামের একজন অল্প আয়ের মানুষ বলেন- দ্রব্যমুল্যের ঊর্ধ্বগতিতে খরচের কাছে আয় ঠকে যাচ্ছে। চাল, ডাল, তেল, তরিতরকারি কিনতেই টাকা শেষ হয়ে যাচ্ছে। মাছ, মাংস, ফল-ফলাদি কোনোটায় কপালে জুটছেনা। বাচ্ছাদের মুখে দিতে পারছিনা ভালো কোনো খাবার। প্রচন্ড সংকটের মধ্যদিয়ে দিন পার করতে হচ্ছে।
সচেতন নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ বলেন- এ দেশের প্রাইভেট কোম্পানিগুলো তাদের খেয়াল খুশিমত নিত্যপণ্যের দাম বাড়াচ্ছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঠিক নজরদারি না থাকার কারণে খুচরা বাজারে দফায় দফায় পণ্যের দাম বাড়ছে আর অল্প আয়ের সাধারণ মানুষেরা চরম দুর্ভোগে পড়ছে। এতে বর্তমান সরকারের সুনামও ক্ষুন্ন হচ্ছে। এখন সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা কঠোরভাবে বাজার মনিটরিং না করলে কোনোভাবেই দ্রব্যমুল্যের চলমান ঊর্ধ্বগতি ঠেকানো যাবেনা।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]