পেশায় আমি একজন কলেজ শিক্ষক হলেও সামাজিক দায়বদ্ধতার কারনে আমার এই লেখা। আপনারা অনেকে অবগত আছেন যে, বাস মালিকদের পুরাতন সংগঠন inter district bus syndicate সংক্ষেপে (আই.ডি.বি.এস)যশোর ও সাতক্ষীরা জেলা বাস, ট্রাক,মিনিবাস মালিক সমিতির যৌথ ব্যবস্থাপনায় যশোর টু কালিগঞ্জ (ভায়া-নাভারন) রুটে যাত্রী পরিবহনের কাজ সম্পন্ন হয়ে থাকে। সামাজিক প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন সমস্যা থাকায় এই দুই সমিতির অভ্যন্তরীণ মতদ্বৈততা থাকাটাও স্বাভাবিক। বিভিন্ন সময়ে সৃষ্ট জটিলতা দুই সমিতির কর্মকর্তাদের আন্তরিক ভূমিকায় তা ইতোপূর্বে নিরসনও হয়েছে। কিন্তু এবারে তাদের ট্রিপ সংক্রান্ত ভাগাভাগির জটিলতায় সেইসব সমস্যা যেন আর নিরসন করা সম্ভব হচ্ছে না।
আমার যদি খুব বেশি ভুল না হয় তাহলে বলব গত ২০২১ সালের অক্টোবর মাস হতে অদ্যবধি সেই সমস্যার কোনো সমাধান লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। ফলে দুই সমিতির গাড়িগুলো যথাক্রমে সাতক্ষীরা সমিতির গাড়িগুলো কলারোয়া থানার সীমান্তবর্তী বাগুড়ী বেলতলা ও যশোর আই,ডি,বি,এস সমিতির গাড়িগুলো শার্শা থানাধীন বাঁগআচড়া বাজারে এসে যাত্রী নামিয়ে দিচ্ছে। এই দুই স্থানের মধ্যকার দূরত্ব এক/দেড় কিলোমিটার। এবং এখান থেকে উভয় সমিতির গাড়িগুলো রাস্তার মধ্যে প্যাসেঞ্জার নামিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে তাদের স্ব-স্ব জেলার বাস টার্মিনালে ফিরে যাচ্ছে। পথিমধ্যে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী যার মধ্যে অসংখ্য রোগী,বৃদ্ধ মানুষ, শিশু, প্রতিবন্ধী যাত্রীদেরকে মাঝখানের এক দেড় কিলোমিটার রাস্তা পায়ে হেঁটে, ভ্যান রিক্সা, ইজিবাইক যোগে তাদের মালপত্র নিয়ে এই প্রচন্ড রোদের মধ্যে রোজাথাকা অবস্থায় তাদের গন্তব্য স্থানে পৌঁছাতে ও অন্য গাড়িতে আরোহন করবার জন্য ছুটতে হচ্ছে। এই ছুটে চলার যেন কোন শেষ নেই। জীবন চলার পথে সমস্যা থাকতে পারে, তাই বলে আলোচনার মাধ্যমে তার সমাধান করা যাবে না এটা অবিশ্বাস্য ব্যাপার। আজ ৫/৭ মাস অতিক্রান্ত হয়ে গেল অথচ দুই পরিবহন মালিক সমিতির অন্তর্দ্বন্দ্বে সাধারন মানুষ নাজেহাল হবে এটি কোন ক্রমেই মেনে নেওয়া যায় না।
এখানে একটি কথা বলে রাখা ভাল, সাতক্ষীরা সমিতির গাড়ি গুলো বা বাসগুলো যেখানে বর্তমানে পার্কিং করা হচ্ছে অর্থাৎ বাগুড়ী বেলতলা নামক স্থানে-সেখানে নেই কোন বাথরুম সুবিধা এবং অন্যদিকে এই অঞ্চলের বৃহৎ আম লিচুর পাইকারি বাজার রয়েছে এই বাগুড়ী বেলতলা নামক স্থানে। স্বাভাবিকভাবে এখানে আম ব্যবসায়িরা আসছে ঈদের পরেই শুরু হতে যাওয়া এবারের মৌসুমে তাদের আড়ত এর সামনে পরিবহন রাখতে বাধা দিবে, তখন অগত্যা গাড়িগুলোকে নিকটবর্তী আরও ৩/৪ কিলোমিটার দূরে কাজিরহাট নামক স্থানে যাত্রীদের নামিয়ে দিতে হবে এ কারণে যে পথিমধ্যে গাড়ি রাখার বা পার্কিং করার তেমন জায়গা না থাকার কারণে। তখন দুই সমিতির গাড়ি পার্কিং এর দূরত্ব ৫/৬ কিলোমিটার বেড়ে যাবে, যাতে করে যাত্রীদের দুর্ভোগ আরো বৃদ্ধি পাবে।
এসব বিষয় নিয়ে অনেক সাংবাদিক ভাইয়েরা বিভিন্ন সময়ে রিপোর্ট করলেও কার্যত কোনো সমাধান হয়নি। তাই দুই জেলা (যশোর ও সাতক্ষিরা) ও উপজেলা (শার্শা ও কলারোয়া) প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, আপনারা তৃতীয় মাধ্যম হয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে উভয় জেলার পরিবহন মালিক সমিতির কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করে এই সমস্যার আশু সমাধান করে দিন। আর তা হলে হয়তো হতে পারে এই ঈদে এইসব অসহায় যাত্রী, ঈদমূখী ঘরে ফেরা মানুষের জন্য আপনাদের তরফ হতে বিশেষ "ঈদ উপহার"। সবাইকে ধন্যবাদ।
জ্যেষ্ঠ প্রভাষক মো. সাঈদ হোসেন -এর ফেসবুক ওয়াল থেকে নেওয়া।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]