দীর্ঘ ৯ বছর পর ভারত থেকে দেশে ফিরলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। রোববার (১১ আগস্ট) দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। এ সময় দলীয় নেতাকর্মীরা তাকে বিমানবন্দরে সংবর্ধনা দেন।
দেশে ফিরে তিনি একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে সাক্ষাৎকার দেন। এ সময় নিজের ওপর নির্যাতনের বর্ণনা দেন তিনি।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাত সাড়ে ৯টা-১০টার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে সাদা পোশাকে এবং অস্ত্রধারীরা মিলে উত্তরার একটি বাসা থেকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে নিয়ে যায়। এরপর আমাকে একটি গোপন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। জায়গাটি ছিল কবরের মতো একটি কামরার মতো। আমার মনে হয়েছিল এটি কোনো বাড়ির নিচতলা হবে। কামরাটির আয়তন হবে পাঁচ ফিট বাই ১০ ফিট। টয়লেটের জন্য জায়গাটাতে কোনো রকম একটা ব্যবস্থা ছিল। আমাকে লোহার দরজার নিচ দিয়ে খাবার দেওয়া হতো।
তিনি বলেন, কামরাটির বাইরে একটি স্ট্যান্ড ফ্যান চালু থাকত এবং ছাদের সঙ্গে হাই পাওয়ার লাইট ছিল। এ ঘরটিতে আমাকে প্রায় ৬১ দিন রাখা হয়। এ সময়ে একদিনের জন্যও বের করা হয়নি। সেখানকার অন্যান্য বিষয়ে আমি বলতে চাই না। কারণ যারা এসব করেছে তারা তৎকালীন সরকারের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষের ইশারায় করেছে। আমি মনে করি এসব কাজের জন্য জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ফোরামে কোথাও না কোথাও তাদের একদিন জবাবদিহি করতে হবে।
বিএনপির এ নেতা বলেন, যেদিন আমাকে নিয়ে আসে সেদিন দুপুরে একইভাবে চোখে কালো কাপড় বেঁধে আনুমানিক ছয় থেকে সাত ঘণ্টা ঘোরানো হয়। থামার পর আমার মনে হলো যে সন্ধ্যা হয়ে গেছে। চোখে দেখতে না পারায় ঠিক বুঝতে পারিনি। সেখানে বেশ কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করল তারা। হয়তো তারা রাতের অন্ধকারের জন্য অপেক্ষা করছিল। এরপর কিছুদূর হাঁটিয়ে আবার কিছুদূর গাড়িতে করে একটা জায়গায় এনে আমাকে তোলা হয়। আমার কাছে এখন মনে হচ্ছে সেটা সীমান্তের কাছাকাছি কোনো জায়গা হবে। সেখানেও কিছু সময় অপেক্ষা করা হয়।
তিনি বলেন, এতসবের পর সেখান থেকে একটি গাড়িতে করে আমাকে শিলংয়ে একটি মাটির ঘরে ফেলা হয়। পরে জানতে পারি জায়গাটির নাম গলফ লিংক। তখনো সূর্য ওঠেনি। অর্থাৎ তখনো সকাল হওয়ার বাকি ছিল।
সালাহউদ্দিন বলেন, এরপর আমি পরিচয় দিয়ে সকালে ভ্রমণকারীদের কাছে পুলিশে খবর দেওয়ার অনুরোধ জানাই। এরপর পুলিশ এসে আমাকে হেফাজতে নেয়।
তিনি জানান, এ সময়ে আমাকে ঠিকঠাক মেডিসিন সাপ্লাই দেওয়া হয়েছে। ভালো পানি ও তিনবেলা খাবার দিয়েছে। এর বেশি তাদের বিষয়ে কিছু বলতে চাই না।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]