বিএসএফ’র গুলিতে বাংলাদেশি আহত: বিজিবি বলছে মাদক চোরাকারবারি, জনপ্রতিনিধি-পরিবারের দ্বিমত
চাঁপাইনবাবগঞ্জের তেলকূপি সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে এক বাংলাদেশি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তবে, তাকে ‘মাদক চোরাকারবারি’ বলছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ ৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল গোলাম কিবরিয়া। অন্যদিকে পরিবার, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়দের দাবি, ইতোপূর্বে আহত হাবিলের বিরুদ্ধে সীমান্তে মাদক চোরাকারবারির কোনো অভিযোগ নেই। গমের জমিতে পানিতে দিতে গিয়েই তিনি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
গুলিবিদ্ধ হাবিল শিবগঞ্জ উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের তেলকূপি মোল্লাটোলা গ্রামের বেলাল উদ্দীনের ছেলে।
পরিবার, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়রা জানান, শনিবার (২৪ জানুয়ারি) ভোর ৫টার দিকে সীমান্তের আর্ন্তজাতিক মেইন পিলার ১৮০ সাব পিলার ৭এস’র নিকটে তেলকূপি মুড়িয়া মাঠের গম ক্ষেতে কাজ করছিলেন হাবিল। এসময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী ১১৯ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের গোপালনগর ক্যাম্পের জওয়ানরা হাবিলকে গুলি করে।
এতে গুরুতর আহত হলে প্রথমে তাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে এবং পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন গুলিবিদ্ধ হাবিল সাংবাদিকদের জানান, তিনি তার জমিতে পানি দিতে গিয়েছিলেন। ভোরে ঘন কুয়াশার মধ্যে কাজ করার সময় তাকে বিএসএফ গুলি করে।
এসময় সাথে থাকা হাবিলের ভাবি সুলেখা বেগম বলেন, ওই জমিতে তাদের সেচের মর্টার রয়েছে। সেখানে তিনি ও তার দেবর পানি দিতে গেলে বিএসএফ গুলি করে। ‘তার দেবর মাদক চোরাকাবারী নয়’ দাবি করে তিনি বলেন, হাবিল একজন কৃষক, কোনো মাদক চোরাকারবারী নয়।
শাহবাজপুর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড সদস্য কাশেদ আলী জানান, ভোর ৪টার দিকে হাবিল গুলিবিদ্ধ হয়। তার পরিবার ও এলাকাবাসী বলছে হাবিল জামিতে পানি দিতে গিয়েছিল এবং সেখানে বিএসএফ’র গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। তবে বিজিবি বলছে, সে চোরাকারবারি, বর্ডারে মালামাল (ফেন্সিডিল) আনতে গিয়েছিল।
তবে ইউপি মেম্বার জানান, ইতোপূর্বে হাবিলের বিরুদ্ধে সীমান্তে মাদক চোরাকারবারির কোন অভিযোগ নেই।
অন্যদিকে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল গোলাম কিবরিয়া হোয়াটসঅ্যাপে এক লিখিত বার্তায় জানান, তেলকুপি সীমান্তের আনুমানিক ১৫০ গজ ভারতের অভ্যন্তরে ঘন কুয়াশার সুযোগ নিয়ে ৭-৮ জন বাংলাদেশি চিহ্নিত চোরাকারবারী চোরাচালানের উদ্দেশে ভারতীয় সীমান্ত অতিক্রম করলে বিএসএফ টহলদল কর্তৃক তাদেরকে লক্ষ্য করে ২-৩ রাউন্ড ফায়ার করে। এসময় বিজিবি গমন করলে বাংলাদেশি চোরাকারবারীরা পালিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে।
পরবর্তীতে সোর্স মারফত জানা যায় হাবিল নামে একজন চিহ্নিত চোরাকারবারী বিএসএফ’র গুলিতে আহত হয়ে রাজশাহীতে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তিনি আরও জানান, তেলকুপি বিওপি’র দায়িত্বপূর্ন পাঁচ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকায় বাংলাদেশি কোনো কৃষক অবস্থান করছিলো না।
এ ঘটনায় বিজিবি-বিএসএফ কোম্পানী পর্যায়ে পতাকা বৈঠকে বসেছে। একইসঙ্গে এ ঘটনায় বিএসএফের প্রতি তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১১ জানুয়ারী পার্শ্ববর্তী আজমত সীমান্তের আর্ন্তজাতিক মেইন পিলার ১৮২ এর ১৩০ গজ এলাকায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী ১১৯ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের অন্তর্গত শশ্মনী ক্যাম্পের বিএসএফ জোয়ানদের গুলিতে শহীদুল ইসলাম (২৫) বাংলাদেশি নাগরিক গুলিবিদ্ধ হয়।
সূত্র: যমুনা টিভি।
কলারোয়া নিউজে প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। (Unauthorized use of news, image, information, etc published by kalaroa News is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.)