মাতৃভাষা বাংলার জন্য জীবন বিলিয়ে দেয়া শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধাবনত চিত্তে স্মরণ করছে জাতি। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেমেছে মানুষের ঢল। যদিও করোনার কারণে মানুষের উপস্থিতি অন্যবারের চেয়ে কিছুটা কম। রাজধানীর পাশাপাশি করোনাভাইরাস সতর্কতার মধ্যেই দেশজুড়ে উদযাপিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
করোনাভাইরাসের কারণে এবার ভিন্ন আবহের মধ্যে একুশের প্রথম প্রহরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন। তারা সশরীরে শহীদ মিনারে না আসায় তাদের পক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন নিজ নিজ সামরিক সচিব।
কোভিড-১৯ পরিস্থিতি বিবেচনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আগেই জানিয়েছে, সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি ও ন্যূনতম সামাজিক দূরত্ব মেনে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে হবে। একসঙ্গে পাঁচজনের বেশি লোক শহীদ মিনারে যেতে পারবে না। ফলে এবার এক ভিন্ন আবহ শহীদ মিনার ও আশপাশের এলাকায়।
‘একুশ মানে মাথা নত না করা’ এই প্রত্যয়ে অনেকে শহীদ মিনার এলাকায় সমবেত হচ্ছে বিভিন্ন বয়সী মানুষ। ফুল নিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে শিশুরাও।
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে বাঙালির রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল রাজপথ। সেদিন ভাষা আন্দোলন দমন করতে তৎকালীন সরকার ঢাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে। কিন্তু মায়ের ভাষা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে ছাত্ররা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল করেন। সেই মিছিলে গুলি চলে। শহীদ হন সালাম, রফিক, বরকত, জব্বারসহ আরও অনেকে। তাদের রক্তের দামেই আসে বাংলা ভাষার স্বীকৃতি। আর তার সিঁড়ি বেয়ে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয় স্বাধীনতা, যার নেতৃত্ব দেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় বাঙালির এই আত্মত্যাগের দিনটি এখন আর বাংলাদেশেই সীমাবদ্ধ নয়; ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে সারা বিশ্বে। বাঙালির ভাষার সংগ্রামের একুশ এখন বিশ্বের সব ভাষাভাষীর অধিকার রক্ষার দিন।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]