বিভিন্ন মাধ্যমে শর্ত সাপেক্ষে 'ভারত-বাংলাদেশ যাতায়াত করতে পারবেন' এমন একটি ভুয়া সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান বেনাপোল ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ।
বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ওসি আহসান হাবিব বলেন, 'নতুন করে কোন শর্ত দেওয়া হয়নি কিম্বা স্বাভাবিক পারাপারের পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি। দীর্ঘ ১৫৭ দিন ধরে একই ভাবে স্বাভাবিক পারাপার বন্ধ রয়েছে।'
তিনি বলেন, "করোনাকালিন সময়ের জন্য ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ কোন যাত্রী গ্রহন করছেন না। এমন কি ভারতীয়দের কেউ তারা গ্রহন করছেন না। তবে বাংলাদেশিরা ফেরত আসলে আমরা তাদেরকে গ্রহন করছি। বিশেষ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে শর্ত মেনে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াতের সুযোগ আছে।"
বাংলাদেশ ও ভারতে করোনা ছড়িয়ে পড়লে তা প্রতিরোধে দুই দেশের সরকার বিভিন্ন নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেয়। দু'দেশে লকডাউন শুরু হলে ভারত সরকার ১৩মার্চ থেকে সকল প্রকার যাত্রী গ্রহন বন্ধ করে দেয়। এমনকি বাংলাদেশে আটকে থাকা ভারতীয়দেরকেও তারা গ্রহন করেনি। ওই সময় তারা কেবল ভারতে থাকা বাংলাদেশিদেরকে ফেরত দিয়েছে।
করোনা মহামারি কালিন সময়ের জন্য চিকিৎসা, ব্যবসা বা ভ্রমণ যে কোনো কারণে ভারত বাংলাদেশ যাতায়াতকারিদের জন্য কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছিল যা এখনো বলবৎ আছে।
এটা নতুন কোন বিষয় নয় জানিয়ে ওসি আহসান হাবিব বলেন, চিকিৎসা, ব্যবসা বা ভ্রমণ যে কোনো কারণে উভয় দেশে যেতে হলে কয়েকটি নির্দশনা মানতে হবে।
নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে, বাংলাদেশি পাসপোর্টযাত্রীদের ভারতে প্রবেশের ক্ষেত্রে বৈধ পাসপোর্ট ও ২০২০ সালের ১ জুলাই ইস্যুকৃত ভিসা থাকতে হবে। সাথে ভারতীয় হাই-কমিশনের অনুমতিপত্র। যাত্রীর সঙ্গে থাকতে হবে কোভিড-১৯ এর নেগেটিভ সনদ। এই সনদ ৭২ ঘণ্টার মধ্যে হতে হবে। তবেই ওই বাংলাদেশি যাত্রীকে ভারতে প্রবেশের ছাড়পত্র দেওয়া হবে।
ভারতীয় পাসপোর্টযাত্রীদের বাংলাদেশে প্রবেশের ক্ষেত্রেও অনুরুপ হালনাগাদ পাসপোর্ট, ভিসার পাশাপাশি ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পত্র ও কোভিক-১৯ এর নেগেটিভ সনদ। ওই সনদও ৭২ ঘণ্টার মধ্যে হতে হবে। তারপর ওই ভারতীয় বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারবেন বলে জানান আহসান হাবিব।
করোনায় দু'দেশে পাসপোর্ট যাত্রী আটকে পড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ওসি আহসান হাবিব বলেন, 'করোনা পরিস্থিতিতে ওরা তাদের নাগরিকদের গ্রহন না করায় অনেক ভারতীয় পাসপোর্ট যাত্রী বাংলাদেশে আটকে আছেন। পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন তাদের গ্রহন না করায় তারা দেশে ফিরতে পারছেন না। এদের অনেকের ভিসার মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে। তাঁদের দেশে ফেরার ক্ষেত্রে শর্ত রয়েছে বৈধ পাসপোর্ট, ভিসা নবায়ণ (জরিমানা ব্যতীত ভিসা ও ফি প্রদানপূর্বক) ভারতীয় হাইকমিশনের অনুমতিপত্র ও কভিক-১৯-এর নেগেটিভ সার্টিফিকেট। সেই সার্টিফিকেট ৭২ঘণ্টার মধ্যে হতে হবে ও ভারতে প্রবেশ করতে হবে। তবে বাংলাদেশিদের কেউ ভারতে আটকে নেই। কারণ তারা ফিরলেই আমরা গ্রহন করছি। এব্যাপারে আমাদের গ্রহনে কোন বাঁধা নেই।'
বাংলাদেশিরা সাধারণত চিকিৎসা, ব্যবসা, ভ্রমণ ও বিভিন্ন উৎসবে কেনাকাটার জন্য ভারতে যান। তেমনি ভারতীয়রা ব্যবসা, ভ্রমণ ও আত্মীয়-স্বজনদের সাথে দেখা সাক্ষাত করতে এ দেশে আসেন।
স্বাভাবিক সময়ে বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট ও ভারতের পেট্রাপোল চেকপোস্ট ব্যবহার করে প্রতিদিন গড়ে সাত থেকে দশ হাজার মানুষ পারাপার হতেন। অথচ ১৫ অগাস্ট বিশেষ অনুমতিতে ভারত গেছেন ৭ জন এবং বাংলাদেশে এসেছেন ১৪ জন।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]