ছেলে-মেয়েকে নিয়ে বিপাকে ঘরের ভিতর জানালার পাশে বসে ছিলেন জুলেখা বেগম। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে গৃহবন্দি অবস্থা তাঁদের। উঠানভরা পানি ও ঘরের খাট পানিতে ছুঁই ছুঁই করছে।
চলাচলরে জন্য উঠানের ভিতর ও প্রথম হাতখানেক পরপর পাশাপাশি দুটাে করে ইট পাতা হয়েছে। এক ইট তলিয়ে যাওয়ার পর তার ওপর আরও একটি করে ইট পাতা হয়েছে । সেই ইটও তলিয়ে যাওয়ার পর এক ঘণ্টা অন্তর সেচ দিয়ে চলেছে। ইটের উপর দিয়ে তাঁরা এঘর-ওঘর যাতায়াত করেন।
এ অবস্থা কলারোয়া পৗেরসভা ০৯ নম্বর ওয়ার্ডের পলাশ সিনেমা হলের উওর পাশে পলাশ মিস্ত্রির বাড়ি। এই পানি বন্যার নয়, বৃষ্টি নামতে না পেরে আটকে আছে। বৃষ্টির পানি আটকে কলারোয়ার ০৯ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ছে।
পৗেরসভার নয়টি ওয়ার্ডের মধ্যে বিভিন্ন মহল্লায় কমবেশি বৃষ্টির পানি আটকে,এর মধ্যে ০৯ নম্বর ওয়ার্ডের পলাশ সহ রায়হান (জগন্নাথ ইউনিভার্সিটি এর ছাত্র) পাশে কােনাে নর্দমা নেই। পানি জমে আছে ।৪ ফুট বিশিষ্ট রাস্তা তার ভিতর দিয়েই লােকজন ও যানবাহন চলছে। এ ছাড়া এই ওয়ার্ডের মির্জাপুর বিলের পাড় এলাকাজুড়ে পানি জমছে।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, জলাবদ্ধতাই কলারোয়া বাসীর প্রধান সমস্যা। বছরের পর বছর তাদের বর্ষাকালে এই সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে।এখানে বৃষ্টির পানি নেমে যাওয়ার মতাে নর্দমা নেই। তবে বেত্রবতী নদী থাকলেও সংযোগের অভাবে নিষ্কাশন ব্যবস্থা কার্যত অচল। ইদানীং সামান্য বৃষ্টিতে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা।
বুধবার সন্ধায় সরেজমিনে দেখা গেছে, ০৯ নম্বর ওয়ার্ড জুড়েই বৃষ্টির পানি আটকে আছে। চারদিকে টিনের ছাউনি পাকা ঘর। মাঝে বড় উঠান। সেই উঠানের এক কোণে হাঁস-মুরগরি ঘর। অন্যদিকে রান্নাঘর।জ্বালানি কাঠ রাখার মাচান। জুলখো বেগম জানান, লাকড়ি জ্বালানাে মেটে চুলা ডুবে গেছে। গ্যাসের চুলা-সিলিণ্ডার এনে রান্না করার মতো কোন ব্যবস্থা নেই। শৗেচাগার, গােসলখানায় পানি উঠছে। বাধ্য হয়ে বাড়ির বাইরে অপর পাশে বজলু রহমান এর দুই তলা ঘরের বারান্দায় জায়গা করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, প্রতিবছর বর্ষায় এই মহল্লায় পানি জমে। তবে এবারের মতাে এমন ভয়াবহ অবস্থা আগে কখনাে হয়নি।
সর্বশেষ বুধবার সন্ধায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে অবস্থার কোন উন্নতি হয়নি।
এই পরিবারটির মতােই একই অবস্থা বৃষ্টির পানি বন্দি প্রায় প্রতিটি পরিবার। চলাফেরার সমস্যা তাে আছেই, রান্না, গােসল, শৗেচকর্ম এসব নিয়ে দুর্ভোগ হচ্ছে প্রচণ্ড। অধিকাংশ নিম্ন ও মধ্যম আয়ের পরিবারের রান্না হয় লাকড়ির চুলায়।
সাধারণত উঠানের এক প্রান্তে থাকে এসব মেটে চুলা। পানিতে চুলা ডুবে গেছে। যাদের সার্মথ্য আছে তাঁরা গ্যাসের সিলিণ্ডার ব্যবহার করছেন। গ্যাসের সিলিণ্ডার কেনার সার্মথ্য নেই যাদের , এমন পরিবারে রান্নার কষ্ট প্রচণ্ড।
এই মহল্লায় প্রায় দুই শ পরিবার পানিবন্দি হয়ে আছে।
মেয়র বা ওয়ার্ড কাউন্সলির কােনাে দিন এসে খােঁজও নেননি সরেজমিনে এমনটি বলেন। সাধারণ মানুষের কী অবস্থা তা দেখার কেউ নেই। স্থানীয়রা অনেকেই বলেন, রাস্তা ডুবে আছে।বাড়ির উঠানে পানি বিভিন্ন জিনিস পচে দুর্ঘন্ধ ছড়াচ্ছে। এই আটকে থাকা পানিতে এখন মশার বংশবস্তিার ঘটছে। তাঁদরে অভিযোগ পৗেরসভা ট্যাক্স আদায় করছে ঠিকই, কিন্তু দুর্ভোগ কামানাের জন্য কিছু করে না।
আবর্জনা ফেলার কােনাে নিদিষ্ট স্থান বা কনটইেনার না থাকায় এসব খােলা জায়গায় আর্বজনা ফেলা হয়। পানিতে এসব আর্বজনা আর আগাছা পচে দুর্ঘন্ধ ছড়াচ্ছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে। কিছু কিছু এলাকায় সড়কও ভাঙা। মাঝে মধ্যে খানাখন্দ।
এ বিষয়ে পৗের মেয়র মো: মনিরুজ্জামান বুলবুল বলনে,আমি নিজেই পানি বন্দি হয়ে উপায় পাচ্ছি না।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]