বোরখা পরে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার প্রাক্কালে র্যাবের জালে ধরা পড়লেন মহাপ্রতারক রিজেন্ট হাসপাতাল চেয়ারম্যান ও প্রতারণা মামলার প্রধান আসামি সাহেদ করিম।
বুধবার (১৫জুলাই) ভোর ৫টা ১০ মিনিটের দিকে তাঁকে সাতক্ষীরা সীমাতের পদ্মশাখরা এলাকার নদী লাবণ্যবতী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের সময় তাঁর কাছে অবৈধ বিদেশি পিস্তল ও গুলি পাওয়া গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক আশিক বিল্লাহ। তিনি বলেন, বুধবার ভোর ৫টা ১০ মিনিটের দিকে র্যাবের বিশেষ অভিযানে সাতক্ষীরার দেবহাটা সীমান্ত এলাকা থেকে সাহেদ করিমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর তাকে সাতক্ষীরা র্যাব কার্যালয়ে নেওয়া হয়। সকাল ৮ টা ১০ মিনিটে হেলিকপ্টার করে ঢাকায় নেওয়া হয়।
আশিক বিল্লাহ বলেন, আমাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল, সাহেদ সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই তথ্যের ভিত্তিতে আমরা সাতক্ষীরা সীমান্তে অবস্থান নিই।
র্যাবের সাতক্ষীরা কোম্পানি কমান্ডার বজলুর রশীদ বলেন, দেবহাটা উপজেলার কোমরপুর বেইলি ব্রিজের দক্ষিণ পাশের লাবন্যবতী নদীর পাড় থেকে সাহেদকে গ্রেপ্তার করা হয়। নদীর ধারে একটি নৌকা ছিল। ওই নৌকায় উঠে বোরখা পরে ভারতে পালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন সাহেদ। ঠিক সে সময় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর সাহেদকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরিয়ে ও হাতে হ্যান্ডক্যাপ পরিয়ে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় নিয়ে যায় র্যাব।
র্যাবের সদর দপ্তরের কর্নেল তোফায়েল আহমেদ বলেন, স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে সে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। বাচ্চু মাঝি নামের একজন মাঝি তাকে নদী পার করে দিচ্ছিল। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে সে সাতরে ভারতে চলে গেছে। আর গ্রেপ্তার হয়েছে শাহেদ। তবে তাকে চেনার উপায় ছিলনা। গোফ কামানো ছিল আর চুল কালো করা ছিল।
চিকিৎসাসেবা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে গত ৬ জুলাই বিকেল থেকে রাত অবধি উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালের মূল কার্যালয়ে প্রথমে অভিযান পরিচালনা করেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। সেখান থেকে অভিযান শেষে হাসপাতালটির মিরপুর শাখায় অভিযান চালানো হয়। এ সময় হাসপাতালটির আট কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আটক করা হয়।
এরপর ৭ জুলাই রাজধানীর উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরের কোভিড ডেডিকেটেড রিজেন্ট হাসপাতালটি সিলগালা করে দেয় র্যাব-১। এ ছাড়া উত্তরার ১৪ নম্বর সেক্টরের রিজেন্ট গ্রুপের মূল কার্যালয়ও সিলগালা করা হয়। ৭ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক সাহেদসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করা হয়।
রিজেন্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রতিষ্ঠানটি প্রায় সাড়ে চার হাজার করোনা টেস্টের ভুয়া রিপোর্ট দিয়েছে। একজন কম্পিউটার অপারেটর বসে বসে সাড়ে চার হাজার রিপোর্ট তৈরি করেছেন। মনগড়া রিপোর্ট পজিটিভ-নেগেটিভ দিয়েছেন।
তা ছাড়া মোট ১০ হাজার রোগীর করোনা টেস্টের নমুনা সংগ্রহ করে রিজেন্ট হাসপাতাল। মাত্র চার হাজার ২৬৪টি নমুনা সরকারিভাবে টেস্ট করে রিপোর্ট দেয়। এ ক্ষেত্রে ভয়াবহ প্রতারণার কৌশল গ্রহণ করে রিজেন্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কারো জ্বর থাকলে তাকে পজিটিভ আর জ্বর না থাকলে নেগেটিভ রিপোর্ট প্রদান করে।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]