অনুকূল আবহাওয়া ও শীতের তেমন প্রকোপ না থাকায় এবার রাজগঞ্জে পানের আবাদ ভালো হয়েছে। গত বছর শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে পানের ব্যাপক ক্ষতি হলেও এবার ফলন ও দাম ভালো পেয়ে খুশি পান চাষিরা।
সোমবার রাজগঞ্জ বাজারের পান কিনতে আসা সাইফুল ইসলাম (৪০) নামের এক ক্রেতা এ প্রতিনিধিকে বলেন, পান ও সুপারির দাম যেভাবে বাড়ছে, তাতে মধ্যবিত্তের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। দিন দিন পানের দাম বাড়ায় অনেকে এরই মধ্যে পান খাওয়া কমিয়ে দিয়েছে।
এদিকে, এবার পানের ভালো দাম পাওয়ায় চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। চলতি মওসুমে যেসব চাষিদের পানের বাম্পার ফলন হয়েছে তারা এখন বেজায় খুশি।
রাজগঞ্জের মশ্বিমনগর ইউনিয়নের পারখাজুরা, চাকলা ও কাঠালতলা এলাকায় পান চাষ হয় বেশি। কাঠালতলা গ্রামের পান চাষি আনারুল ইসলাম (৪৫), সোহাগ হোসেন (৩৫), পারখাজুরা গ্রামের পান চাষি মহির উদ্দিন বিশ্বাস (৫০), আনন্দ মোহন দত্ত (৬০), বাঁকা চাঁদ দত্ত (৪০) ও বৃন্দাবোন দে (৬০) সহ কয়েকজন পান চাষি জানিয়েছেন, চলতি মওসুমে যাদের পানের ফলন ভালো হয়েছে, তারা দামও তেমন পাচ্ছেন।
এদিকে, এলাকায় পানের বরজ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে করে এই এলাকার বেকারদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হচ্ছে। এসব পান বরজে সারা বছর পানের বরজে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন এসব এলাকার শত শত দিনমজুর পরিবার।
খোঁজ নিয়ে জানাযায়, রাজগঞ্জসহ আশপাশের হাট বাজারগুলোতে পানের বাজার এখন বেশ চড়া। হাট-বাজার ও পাইকারি মোকামগুলোতে সর্বকালের রেকর্ড মূল্যে বিক্রি হচ্ছে পান।
রাজগঞ্জ বাজারের পাইকারি ও খুচরা পান ব্যবসায়ী হাসান আলী (৪০) জানান, বর্তমান ভালো মানের বড় পান এক পোন (৮০টি) বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা। যা আগে ছিল ১৫০ টাকা। মাঝারি মানের প্রতি পোন পান বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৮০ টাকায়, যা আগে ছিল ১২০ টাকা ও ছোট আকারের পানের প্রতি পোন বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। যা আগে ছিল ৫০ টাকা করে।
রাজগঞ্জের পারখাজুরা, চাকলা ও কাঠালতলা এলাকার মিষ্টি পান দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রফতানি করা হয়। এ এলাকার মিষ্টি পানের আলাদা নাম ডাকও রয়েছে দেশ জুড়ে এবং এ এলাকা থেকে লাখ লাখ টাকার পান দেশের বিভিন্ন জেলায় চালান করা হয়।
সোমবার রাজগঞ্জ পানের বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বেচা-কেনা করতে শতাধিক চাষি পান নিয়ে রাজগঞ্জ বাজারে এসেছেন। পাইকারি ব্যবসায়ীরা চাষিদের কাছ থেকে পান কিনছেন। এসব পান ব্যবসায়ীরা জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে রাজগঞ্জ বাজারে এসেছেন।
রাজগঞ্জ হাটের ইজারাদার ইমরান খান পান্না জানান, এ হাটে চাষিরা তাদের পান যাতে সুন্দর পরিবেশে বিক্রি করতে পারে। তার জন্য আমরা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করে থাকি।
মশ্বিমনগর ইউনিয়ন উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা এ এম আলতাফ হোসেন ও রাহিমা খাতুন জানান, মনিরামপুর উপজেলার মধ্যে সব চেয়ে বেশি পান চাষ হয় মশ্বিমনগর ইউনিয়নে। এ ইউনিয়নে প্রায় ৬০ হেক্টর জমিতে পানের চাষ হচ্ছে। আর ৬০ হেক্টর জমিতে প্রায় ৪৫০ টির মতো পানের বরজ রয়েছে। এ ইউনিয়নের পান চাষিদের সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয় কৃষি বিভাগ।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]