যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ বাজারে চলছে সর্বজনীন ‘হালখাতা’ উৎসব। এই উৎসবকে ঘিরে রাজগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ীদের ব্যস্ততাও বেড়েছে। তবে এই হালখাতা চাষি এবং স্বল্প আয়ের ভোক্তাদের গলার কাটা হয়ে দাড়িছে।
চলতি বছরে আমন ধান চাষিদের ঘরে উঠতেই ব্যবসায়ীরা প্রস্তুতি নিচ্ছিলো হালখাতা দেয়ার। এখন প্রস্তুতি শেষ। পুরোদমে শুরু হয়েগেছে হালখাতা। রাজগঞ্জ বাজারে সোমবার এবং বৃহস্পতিবার হাটবার। এই হাটবারের দিন এলেই দেখা যাচ্ছে দোকানে দোকানে ফুল দিয়ে সাজানো।
দোকানীরা তাদের দোকানকে হালখাতার দিন বিশেষভাবে সাজিয়ে রাখে এবং পাওনাদারদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার জন্য আলাদা সু-সজ্জিত চেয়ার-টেবিল দিয়ে ডেক্স তৈরি করে থাকে। হালখাতার জন্য যেসব পাওনাদারের দাওয়াতপত্র দেয়া হয়, তারা এসে খাতায় নাম লিখিয়ে টাকা জমা দিয়ে মিষ্টি নিয়ে চলে যান। অনেক দোকানী আবার সাউন্ড বাজিয়ে এই উৎসব উদযাপন করেন।
তবে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ভোক্তা বলেছেন- হালখাতায় গেলে দোকানীরা আগের মতো এখন আর মিষ্টি দেয় না। আপ্যায়ন করেন না। এক সময় ছিলো মহাজনেরা তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হালখাতা দিতো বছরে একবার। সেটা বাংলা নববর্ষের প্রথমদিন। পহেলা বৈশাখে। এদিন মহাজনেরা, তাদের সকল ভোক্তাদের দাওয়াত করে খাওয়াতেন।
সে সময় হালখাতার সামাজিক গুরুত্বও ছিলো। ভোক্তারা হালখাতার জন্য বছরপ্যাপী অধীর আগ্রহে অপেক্ষাও করতেন। দোকানি বা ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান থেকে ভোক্তারা হালখাতায় অংশগ্রহণ করতো এবং মিষ্টিমুখ করে আত্মতৃপ্তি নিয়ে বিদায় হতো। তার সঙ্গে সুগন্ধি পানে আপ্যায়িত হতো ভোক্তারা। আলাদা একটি উৎসব থাকতো হালখাতাস্থলে।
কিন্তু এখন সেসব আর দেখা যায় না। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এখন হালখাতা অনুষ্ঠিত হয় বছরে দুইবার। আমন ধান আর বোরো ধান চাষিদের ঘরে উঠলেই শুরু হয় হালখাতা মৌসুম। দোকানীরা আয়োজন করে হালখাতার। হালখাতার রঙিন চিঠি পাওনাদারের কাছে বিতরণ শেষে দোকানে দোকানে চলে হালখাতা উৎসব।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]