রাশিয়ান সেনা বহিনী ইউক্রেনের মারিউপোলের একটি থিয়েটার হল গুঁড়িয়ে দিয়েছিল। সেই থিয়েটার হলে আশ্রয় নিয়েছিলেন প্রচুর সাধারণ মানুষ। এখনও পর্যন্ত যে নথি সামনে এসেছে তাতে স্পষ্ট এই থিয়েটার হলে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ৬০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে রাশিয়ার বিমান হামলায়।
এক মহিলা ওকসানা সাওমিনা তাকাল জানিয়েছেন, তিনিও থিয়েটার হলে আশ্রয় নিয়েছিলেন। বেসমেন্টে ছিলেন তাঁর স্বামীর সঙ্গে। যেদিন হামলা হয়েছিল সেদিনের কথা বলতে গিয়ে এখনও তাঁর চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়েছে। হামলায় হারিয়েছেন তাঁর স্বামীকে। তিনি জানিয়েছেন হামলার তিনি সবেমাত্র স্নান করে এসেছিলেন। তারপরই একের পর এক বোমা ফেলতে থাকে রাশিয়ান বাহিনী। ধোঁয়া আর ধুলোয় ঢেকে গিয়েছিল গোটা এলাকা। তা পরিষ্কার হতেই তিনি দেখেন চারদিকে ছড়িয়ে রয়েছে মানুষের মৃতদেহ। পড়ে রয়েছে তাঁর স্বামীও। স্বামী তখনও জীবিত ছিলেন। তাঁকে সেখান থেকে চলে যেতে বলেছিলেন। কিন্তু তিনি ধ্বংসলীলা দেখে স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন।
ওকসানা জানিয়েছেন সেদিন তাঁর চারদিকে ছড়িয়েছিল নিহর দেহ। শিশুদের দেহগুলি ছিন্নভিন্ন অবস্থায় পড়েছিল। সেখান দিয়ে হাঁটা যাচ্ছিল না। টানা এক সপ্তাহ ধরে ইউক্রেনের ব্যস্ত শহর মারিউপোলে । প্রচুর মানুষ বোমার হাত থেকে বাঁচতে আশ্রয় নিয়েছিল মারিউপোলের সবথেকে বড় থিয়েটার হলে।
মারিউপোল হিয়েটার হলটি প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। আর সেই ধ্বংসস্তূপের নিচে প্রচুর মানুষের দেহ রয়েছে। এটি একটি গণকবরে পরিণত হয়েছে বলেও দাবি করেছে ইউক্রেনবাসী। (গত ১৬ মার্চ) রাশিয়া মারিউপোলের থিয়েটার লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায়। সংবাদ সংস্থার দাবি থিয়েটার হলের ভিতরে ও বাইরে সবমিলিয়ে রাশিয়ান সেনারা প্রায় ৬০০ মানুষকে হত্যা করেছিল। ইউক্রেন সরকারের প্রাথমিত অনুমান এই হামলায় প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তারপরই ইউক্রেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপোরাধের মামলা দায়ের করেছে আন্তর্জাতিক আদালতে। নিজের দেশেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে একগুচ্ছ মামলা করেছে ইউক্রেন সরকার। তবে এই হামলা থেকে বেঁচে যাওয়ার প্রায় ২৩ জনের সঙ্গে কথা বলেছে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম।
রাশিয়ার ইউক্রেন হামলার প্রথম থেকেই মারিউপোলের দিকে নজর ছিল। কিন্তু মারিউপোল কবজা করতে দীর্ঘদিন সময় লেগেছিল। রাশিয়ান সেনাদের কাছে মারিউপোল দখল খুব সহজ ছিল না। প্রায় ২১দিনের মত অপেক্ষা করতে হয়েছিল। তবে তাও খুব সহজ ছিল না রুশ সেনার পক্ষে। কারণ ইউক্রেনের এই অংশে প্রবল ঠান্ডা ছিল তখন।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]