যশোরের রাজগঞ্জকে উপজেলা ঘোষণার দাবিতে স্বোচ্ছার পশ্চিম মণিরামপুর তথা পর্যটন নগরী রাজগঞ্জ অঞ্চলের মানুষ। দীর্ঘদিনের প্রাণের এ দাবি নিয়ে আন্দোলন, সংগ্রাম, মিটিং, মিছিল ও মানববন্ধন চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।
মুজিব শতবর্ষে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে পর্যটন নগরী রাজগঞ্জকে উপজেলা ঘোষণা করবেন এ দাবি পুরনের অধীর আগ্রহে আছেন রাজগঞ্জ উপজেলা তথা এ অঞ্চলের ঝাঁপা, চালুয়াহাটী, মশ্বিমনগর, হরিহরনগর, রোহিতা, কাশিমনগর ও খেদাপাড়া এই ৭টি ইউনিয়নবাসি।
রাজগঞ্জবাসী দীর্ঘদিনের প্রাণের এ দাবি পুরনের লক্ষ্য নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করেছে। বিগত ২৮ ডিসেম্বর-২০১৯ রাজগঞ্জ বাজারে বঙ্গবন্ধু ম্যুারাল উদ্বোধন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম মোজাম্মেল হক এমপি তাঁর বক্তব্যের মাঝে রাজগঞ্জবাসীকে আশ্বস্থ করেছিলেন রাজগঞ্জবাসীর প্রাণের দাবী মুজিব বর্ষে পুরন হবে।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দাবিকৃত উল্লেখিত ৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত রাজগঞ্জ উপজেলার আয়তন ৫২ হাজার ২শ’ ৪৭ একর বা ৪শ’ ৪৮ বর্গকিলোমিটার, মৌজা সংখ্যা ১শ’ ১৬টি, গ্রামের সংখ্যা ১শ’ ১৬টি, লোক সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ, এর মধ্যে ভোটার সংখ্যা প্রায় ২ লক্ষ ৩৫ হাজার, সরকারি প্রাথমিক সংখ্যা প্রায় ১শ’ ১৬টি, সিনিয়র দাখিল ও আলীম সহ এবতেদায়ী মাদরাসা রয়েছে প্রায় ৭০টি, ফাজিল মাদসারা ৫টি, উপ-আনুষ্ঠানিক প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে প্রায় ৭৫টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৪৬টি, কলেজ রয়েছে ৭টি, রয়েছে সরকারি বেসরকারি ব্যাংক, টেলিফোন এক্সচেঞ্জ, খাদ্যগুদাম, পোস্ট অফিস, পশুপ্রজনন কেন্দ্র, উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ভূমি অফিস, প্রায় ৫০টি এনজিও অফিস, পাবলিক লাইব্রেরী, প্রেসক্লাব, সাংস্কৃতিক চর্চাকেন্দ্র, পি এস সি, জে এস সি, এস এস সি, এইচ এস সি, জে ডি সি, দাখিল, আলীম ও ফাযিল পরীক্ষা কেন্দ্র, তুলা উন্নয়ন বোর্ড, অসংখ্যা মসজিদ, মন্দির, প্রায় ৭০টি সুপার মার্কেট ও রাজগঞ্জ বাজারে প্রায় ২ হাজার ছোট বড় মিলিয়ে দোকান রয়েছে। যোগাযোগের ক্ষেত্রে লক্ষ্যনীয় যে ৭টি সড়কে পরিবহনসহ ছোট বড় বাস চলাচল করছে।
রাজগঞ্জের ঝাঁপা বাঁওড়ের উপর ঝাঁপা উন্নয়ন ফান্ডেশনের নিজস্ব উদ্যোগে প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মান করা হয়েছে এক কিলোমিটার লম্বা, ১২ ফুট চওড়া ২টি দৃষ্টিনন্দন ভাসমান সেতু। যার কারণে রাজগঞ্জ যশোর জেলার মধ্যে একটি অধিক পরিচিতি স্থান। রাজগঞ্জ এলাকার মানুষের সার্বিক নিরাপত্তা ও যানমাল নিরাপত্তার জন্য প্রথমে রাজগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করা হয়। তারপর বর্তমান সরকার ১৯৯৭ সালে মণিরামপুর উপজেলার পরিধির বিস্তৃতি এবং পশ্চিম মণিরামপুরের রাজগঞ্জের গুরুত্ব ও অবস্থান বিবেচনা করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রাজগঞ্জ অঞ্চলের উল্লেখিত ৭টি ইউনিয়নকে নিয়ে একটি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র স্থাপনের প্রজ্ঞাপন জারি করেন। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মোতাবেক প্রস্তাবিত রাজগঞ্জ থানা ভবন নির্মাণ করা হয় ২০১৪ সালে। সেখানে বর্তমানে পুলিশের প্রশাসনিক কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এখন শুধু পশ্চিম মণিরামপুর তথা পর্যটন নগরী রাজগঞ্জবাসি পূর্ণাঙ্গ উপজেলা ঘোষনা শোনার অপেক্ষায় আছেন। রাজগঞ্জকে উপজেলা ঘোষনা করলে এটাই বর্তমান সরকারের বড় সাফল্য বলে মনে করবেন রাজগঞ্জবাসি।
সূত্র মতে, ১৯৫৪ সাল থেকে পশ্চিম মণিরামপুর তথা রাজগঞ্জবাসি ৭টি ইউনিয়ন নিয়ে রাজগঞ্জ উপজেলা বাস্তবায়নের দাবি করে আসছেন। রাজগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক প্রয়াত শরৎচন্দ্র মজুমদার তৎকালিন যুক্তফ্রন্ট সরকারের মৎস্য ও আবগারি মন্ত্রী হিসেবে ১৯৫৬ সালে রাজগঞ্জ পরিদর্শনে আসলে স্থানীয় হাজার হাজার মানুষ প্রথমে মন্ত্রীর কাছে রাজগঞ্জকে থানা করার দাবি করেন। সেই থেকে রাজগঞ্জবাসি তাদের প্রাণের এ দাবি আদায়ের জন্য সোচ্চার রয়েছে। বর্তমান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য এমপির প্রচেষ্টায় মুজিব বর্ষে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার মুখ থেকে রাজগঞ্জ উপজেলা ঘোষনার কথা শোনার অধীর আগ্রহে রয়েছে অবহেলিত পশ্চিম মণিরামপুর তথা পর্যটন নগরী রাজগঞ্জবাসি।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]