ভারতের শাসক দল বিজেপির বিরুদ্ধে ‘ভোটচুরি’র অভিযোগ করার পর রাহুল গান্ধী এবার নরেন্দ্র মোদি সরকারকে হটাতে তরুণ ভোটার ও ‘জেন-জি’দের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স হ্যান্ডেলে লোকসভায় বিরোধী দল নেতা রাহুল এ আহ্বান জানান। এ পোস্টের পালটা জবাবে বিজেপি বলেছে, বাংলাদেশ ও নেপালের মতো পরিস্থিতি ভারতেও তৈরি করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে কংগ্রেস।
দিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে রাহুল গান্ধী বলেন, শুধু ভোটার তালিকায় গোলমাল নয়, ভোটার তালিকা থেকে এবার বেছে বেছে কংগ্রেস সমর্থক, দলিত-আদিবাসী ভোটারদের ভোট মুছে দেওয়া হচ্ছে। তাই সংবিধান রক্ষা এবং ‘ভোটচুরি’ রোধে ভারতের জেন-জিকে নির্ণায়ক ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান রাহুল।
তিনি এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, দেশের যুব, ছাত্রছাত্রী এবং জেন-জি সংবিধান রক্ষা করবে, গণতন্ত্রকে বাঁচাবে এবং ভোটচুরি রুখবে। আমি সব সময় তাদের পাশে থাকব। জেন-জিদের কাছে রাহুলের আহ্বান জানানোর এ সময়টা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কেননা, কয়েকদিন আগেই নেপালের জেন-জি দুর্নীতি এবং একাধিপত্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে রাস্তায় নামে। ক্ষমতাচ্যুত হয় কেপি শর্মা অলির সরকার।
রাহুল গান্ধীর বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন সমাজবাদী পার্টির নেতা আইপি সিং। এক্স পোস্টে তিনি লিখেছেন, দেশের গণতন্ত্র রক্ষার জন্য, এখন জেন-জি বিপ্লবের প্রয়োজন, দেশের যুবসমাজ তাদের অধিকারের জন্য জাগ্রত হচ্ছে।
১৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ৭৫তম জন্মদিন উদযাপনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, গতকাল জন্মদিনে যেভাবে হাজার হাজার কোটি টাকা ধাপে ধাপে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, তার ওপর কড়া নজর ছিল বেকার যুবকদের। এর হিসাব নেওয়া হবে। এই টাকা দেশের, কারও বাবার উপার্জন করা নয়।
তবে রাহুলের পোস্টের পরেই এর কঠোর সমালোচনা করেছে বিজেপি। বিজেপির সমালোচনায় নেতৃত্ব দিয়েছেন গান্ধী পরিবারের কট্টর সমালোচক সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। তিনি দাবি করেন, ভারতের জেন-জি পরিবারতন্ত্র, দুর্নীতি এবং মতাদর্শের অস্পষ্টতার বিরোধী। এক্স হ্যান্ডেলের পোস্টে দুবে লিখেছেন, জেন-জি পরিবারতন্ত্রের বিরোধী। তারা কেন নেহেরু, ইন্দিরা, রাজীব এবং সোনিয়ার পরে রাহুলকে মেনে নেবে? জেন-জি দুর্নীতির বিরুদ্ধে। জেন-জি কেন আপনাকে বের করে দেবে না? তিনি আরও লিখেছেন, জেন-জি বাংলাদেশকে ইসলামিক রাষ্ট্র, নেপালকে হিন্দু রাষ্ট্র করেছে, ওরা ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র করবে না কেন? ওরা আসছে, তোমরা দেশ ছাড়ার জন্য তৈরি হও।
আর বিজেপি সাংসদ অনুরাগ ঠাকুর দাবি করেন, রাহুল যেসব দাবি করলেন, সবটাই ভিত্তিহীন। কোনো প্রমাণ ছাড়া নাটক করছেন। রাহুল আসলে অনুপ্রবেশকারীদের রক্ষা করার চেষ্টা করছেন। তিনি দেশে বাংলাদেশ ও নেপালের মতো অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইছেন।
অনুরাগ ঠাকুর বলেন, ‘হাইড্রোজেন বোমা ফাটাতে এসেছিলেন, ফুলঝুরি জ্বালিয়ে চলে গেলেন। তাও সেটা ফুস হয়ে গেল। তিনি আরও বলেন, আসলে রাহুল গান্ধী বিরক্ত। কারণ তার নেতৃত্বে কংগ্রেস ৯০টি নির্বাচন হেরেছে। তাই এসব ভুয়া এবং বিভ্রান্তিকর দাবি নিয়ে চলে আসছেন। বিভ্রান্তির রাজনীতি করা তার অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। এজন্য বারবার তাকে আদালতের কাছে গিয়ে ক্ষমা চেয়ে আসতে হয়।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]