সবচেয়ে সহজ কাজ শুনে শুনে কথার উত্তর দেওয়া। আর তাতে মিলবে অনেক সাওয়াব ও পুরস্কার। কিন্তু কী কথা শুনে শুনে অনুরূপ উত্তর দিলে মিলবে সাওয়াব ও পুরস্কার?
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যখন তোমরা আজান শুনবে, এর জবাবে মুয়াজ্জিনের অনুরূপ তোমরাও বলবে।’ (বুখারি)
তাহলে আজানের সওয়াব কী?
মুয়াজ্জিন আজান দেয়। যারা মুয়াজ্জিনের আজান শুনবে আর অনুরূপ বলবে; তারাও মুয়াজ্জিনের সমান সাওয়াব পুরস্কার পাবে। তাহলে মুয়াজ্জিন যে আজান দেয় তার সাওয়াব কী? হাদিসে এসেছে-
১. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন, ‘কেয়ামতের দিন মুয়াজ্জিনের গর্দান সবচেয়ে উঁচু হবে।’ (মুসলিম, মিশকাত)
২. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেছেন,মানুষ যদি আজানের সওয়াব দেওয়ার ব্যাপারে জানতো তাহলে তারা লটারি করতো আজান দেওয়ার জন্য।’ (বুখারি)
মুয়াজ্জিনের সমপরিমাণ সাওয়াব পাওয়ার উপায়
তবে আজান দিতে না পারলেও মুয়াজ্জিনের সমান সাওয়াব ও বিশেষ পুরস্কার পাওয়ার উপায় রয়েছে বলে ঘোষণা দিয়েছেন স্বয়ং বিশ্বনবি। হাদিসে এসেছে-
সাহাবায়ে কেরাম রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতেন, হে আল্লাহর রাসুল! সব সাওয়াব তো মুয়াজ্জিনই নিয়ে নিল; আমরা তো এই বিরাট সওয়াব থেকে দুরে রয়ে গেলাম, আমরা (এ রকম সাওয়াব পেতে) কী করব?
তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমরা তার মতো সওয়াব পেতে চাও? খুব সহজ পদ্ধতি! মুয়াজ্জিন যা বলে তোমরাও তাই বল। মুয়াজ্জিনের সঙ্গে সঙ্গে তোমরাও একই কথা বলতে থাক। তাহলে কি হবে! মুয়াজ্জিনের সমপরিমাণ সাওয়াব তোমরাও পেয়ে যাবে (সুবহান আল্লাহ)! (মুসলিম)
বিশেষ পুরস্কার
১. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি আজানের পর আল্লাহুম্মা রাব্বা হাজিহিদ দাওয়াতিত তাম্মাহ...’ এ দোয়াটি পাঠ করবে, তার জন্য আখেরাতে আমার সুপারিশ অবধারিত।’ (বুখারি)
২. অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘তোমরা মুয়াজ্জিনের অনুরূপ শব্দে আজানের জবাব দাও, অতঃপর দরুদ পাঠ করো, এরপর আমার জন্য বেহেশতের সর্বোচ্চ সম্মানিত স্থানের জন্য দোয়া কর, আশা করি, আল্লাহ তাআলা আমাকেই সে স্থান দান করবেন। যে ব্যক্তি এ দোয়া করবে, তার জন্য আখেরাতে আমার সুপারিশ অবধারিত।’ (মুসলিম)
শুধু তা-ই নয় আজানের জবাব দেয়ার পর দরূদ পড়লেই বিশেষভাবে এ পুরস্কারগুলো পাওয়া যাবে তাহলো-
১. আল্লাহ তাআলা ১০টি রহমত দান করবেন।
২. ১০টি গোনাহ ক্ষমা করে দেবেন।
৩. ১০টি মর্যাদা বাড়িয়ে দেবেন।
৪. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শাফায়াত পাবেন।
৫. দোয়া কবুল হবে।
৬. জান্নাতের সুসংবাদ পাবেন।
৭. সবার চেয়ে তাঁর শির উচু হবে।
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, আজান দিতে না পারলেও যে কোনো জায়গায় মুয়াজ্জিনের আজান শুনে তাঁর সঙ্গে অনুরূপ উত্তর দিলেই মিলবে সহজে সাওয়াব ও এসব বিশেষ পুরস্কার।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব নারী-পুরুষকে এ সহজ কথার আমলটি যথাযথভাবে আদায় করার তাওফিক দান করুন। হাদিসের ঘোষিত ফজিলত ও মর্যাদা পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
প্রকাশক : আরিফ মাহমুদ, প্রধান সম্পাদক : কাজী আবু ইমরান, সম্পাদক : আবু রায়হান মিকাঈল
ফেসবুক পেইজঃ facebook.com/kalaroanewsofficial, ই-মেইল : [email protected]